ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় জেইসির বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২৯ এপ্রিল ২০১৫

শ্রীলঙ্কায় জেইসির বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে গত বছরের ১৭ ও ১৮ নবেম্বর বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কায় যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি)পঞ্চম সভার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা স্থগিত হয়ে যায়। তারপর পেরিয়ে গেছে প্রায় ৫ মাস। কিন্তু এখনও দেশটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন কিছুই জানানো হয়নি। এ অবস্থায় জেইসি বৈঠকটি কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে এখনও কিছু বলতে পারছে না অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। তবে এ পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছে সংস্থাটি। ইআরডির অতিরিক্ত সচিব আসিফ-উজ-জামান জনকণ্ঠকে বলেন, স্থগিত হওয়ার পরই শ্রীলঙ্কা আমাদের জানিয়েছে এপ্রিল-মে মাসের দিকে তারা নতুন তারিখ জানাবে। কিন্তু সেটি এখনও জানায়নি। তবে এখনও সময় আছে। তাছাড়া তাদের দেশে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। ইআরডি সূত্র জানায়, এর আগে জেইসি বৈঠকে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি হিসেবে ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসেরর শেষ দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। ওই সভায় চতুর্থ বৈঠকের সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন এবং আগামী বৈঠকের করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে যে কয়েকটি বিষয়ে জেইসি বৈঠকে তুলে ধরার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সেগুলো হলো, বাণিজ্যে বাধা দূরীকরণ, জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ ফরমেশন, শ্রীলঙ্কার অঙ্গীকারকৃত ছাড় আদায়, গত জেইসি বৈঠকের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ উপস্থাপন। সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৭ ও ১৮ নবেম্বর পঞ্চম জেইসিতে অংশ নিতে প্রস্তুতি শেষ করেছিল বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের। কিন্তু হঠাৎ করেই এ বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। তবে কি কারণে স্থগিত করা হয়েছে তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে প্রতিনিধি দলের প্রধান অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ওই সময় বলেছিলেন, কি কারণে এটি স্থগিত হয়ে গেছে। যেটুকু জেনেছি আমাদের পক্ষ থেকেই এটি স্থগিত করা হয়েছে। সূত্র জানায়, সার্কের সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যে দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব বিদ্যমান। সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। এ দুটি দেশের মধ্যে ১৯৭৯ সালে সম্পাদিত এগ্রিমেন্ট অন ইকোনমিক এ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের আওতায় ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন গঠিত হয়। তখন থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত চারটি যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনকে কাজে লাগিয়ে দুটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া শ্রীলঙ্কা আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার কার্যক্রম গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে এদেশ লাভবান হওয়ার কথা। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ৭ ও ৮ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা চতুর্থ জেইসি বৈঠক। এ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন বিষয়ে জানা যায়, চতুর্থ যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন সভার ফলোআপ হিসেবে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ট্রেড গঠন করা হয়। এর প্রথম সভা ২০১৪ সালের ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে এবং দ্বিতীয় সভা গত ২২-২৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় উভয় দেশ বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপায় চিহ্নিত করার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করে। বাংলাদেশের পক্ষে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট উপস্থাপন করলে শ্রীলঙ্কা তা সমর্থন করে। এছাড়া আলোচিত এফটিএর ব্যাপারে টিওআর বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। উভয় দেশই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
×