ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় লোকগাথানির্ভর ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

শিল্পকলায় লোকগাথানির্ভর ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’ মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোমবার অনুষ্ঠিত হলো নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইনস্টিটিউট অব ড্রামার (এনএনআইডি) ১৯তম ব্যাচের সমাপনী ও ২০তম ব্যাচের অভিষেক পার্বণ। এ উপলক্ষে মঞ্চস্থ হলো সংকলিত লোকগাঁথানির্ভর নাটক গহর বাদশা ও বানেছা পরী। বৈশাখী সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে প্রযোজনাটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। হৃদি হকের নাট্যরূপে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন কামরুজ্জামান রনি। অভিনয় করেছেন এনএনআইডির ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। কমেডি, ট্র্যাজেডি, এ্যাবসার্ড কিংবা অনুবাদনির্ভর নাটক করলেও এই প্রথম শেকড়সন্ধানী লোকজ প্রযোজনা যুক্ত হলো এনএনআইডির ভা-ারে। শিকারের কাহিনীকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে গহর বাদশা ও বানেছা পরী নাটকটি। ঘটনাক্রমে গিলামাইট নামক বনে শিকার করতে যায় বিশ্বিং বাদশা। পুরো বন ঘুরে শিকার খুঁজে না পেয়ে ভাগ্যকে দুষতে থাকে বাদশা। এমন সময় অদূরের এক জলাশয়ে দেখা মেলে হরিণ শাবকের। ছুটে যায় বাদশার নিক্ষিপ্ত তীর। পরক্ষণেই মানব সন্তানের কান্নায় বুঝতে পারেÑ কী ভীষণ নিষ্ঠুরতায় রক্তি হলো হাত। অন্ধমুনি সন্তান হারানোর বেদনায় অভিশাপে জর্জরিত করল সন্তানহীন বাদশাকে। সেই অভিশাপের পর দুই পুত্রের চন্দ্রমুখ দেখার সৌভাগ্য হয় বাদশার। রাজ্যজুড়ে যখন আনন্দের বন্যা বয়ে চলেছে বাদশার মনে জেগে ওঠে সন্তান হারানোর ভয়। আদেশ দিলেন, এমন এক দালার তৈরি করা হোক যেখানে চন্দ্র-সূর্যের আলো প্রবেশ করবে না। কিন্তু শত আয়োজনেও কি বাদশা আটকে রাখতে পারল আপন নিয়তিকে? ১২ বছর বয়সে বিশ্বিং যখন বড় ছেলে গহরকে রাজ্যের অধিপতি করল তখন সে উজিরের চক্রান্তে গিলামাইট বনে শিকারের আবদার ধরে। বনে গিয়ে বিশ্বিং দানবের হাতে বন্দী হয় গহর। বাবার মিতা বলে মৃত্যু থেকে রেহাই পেলেও বানেছা পরীর প্রেমতীরে বিদ্ধ হয় গহর। অবশেষে অজস্র যুদ্ধ-সংগ্রাম পেরিয়ে বানেছাকে নিয়ে রাজ্যে ফেরার উদ্যোগ নেয় গহর। কিন্তু ততদিনে পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো দিন, মাস ও বছর। রাজ্য চলে গেছে উজিরের দখলে। তবে সত্যের জয় যেন অবধারিত। বুদ্ধি ও মেধার জোরে উদ্ধার হয় রাজ্য। জয় হয় সত্য ও সুন্দরের। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন বিশ্বজিৎ ধর, রফিকুল ইসলাম, সুতপা বড়ুয়া, তাহসান রাসেল, সুমাইয়া শ্রাবণী, রেজা জাহান, জুয়েল জহুর, আনা নাসরিন, ফারজানা দিপ্তী প্রমুখ। নাট্য প্রদর্শনীর আগে এনএনআইডির দুই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সমাপনী ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। সার্টিফিকেট প্রদানের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আফসার আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হক। অরূপ রতন চৌধুরীকে একুশে পদকপ্রাপ্তির সম্মাননা ॥ একুশে পদকপ্রাপ্তিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ড. অরূপ রতন চৌধুরীকে সম্মাননা প্রদান করল সঙ্গীত বিষয়ক পত্রিকা সরগম। প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সোমবার বিকেলে একইসঙ্গে বর্ষবরণ ও সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন, গীতিকার কেজি মোস্তফা ও গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজী। সভাপতিত্ব করেন সরগম সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সরগম সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার দাশ। এরপর ড. অরূপ রতন চৌধুরীর হাতে স্মারক সম্মাননা তুলে দেন প্রধান অতিথি হাসানুল হক ইনু। সম্মেলক কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর একক কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন ড. অরূপ রতন চৌধুরী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী উল্কা হোসেন, দেবাশীষ চক্রবর্তী, অপর্না খান, স্বপন কুমার দাশ, শায়লা রহমান, মোসলেমা মীর্জা, লাকী আক্তার, মোহাম্মদ আলী মুন্না, জাহিদ হোসেন, সাবিনা লাকী ও শায়লা শারমিন। সমস্বরের যাত্রা শুরু ॥ যাত্রা শুরু করল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সমস্বর’। রবিবার রাজধানীর পরিবাগে সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে সংগঠনটির উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। রবীন্দ্রনাথের ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানের সাথে সাথে পাঁচটি মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে আয়োজনের শুভ সূচনা করেন তিনি। সেলিনা হোসেন বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে তরুণ প্রজন্মের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। চলমান আঁধারের মাঝে সংগঠনটি আলোকবর্তিকা হিসেবে এগিয়ে যাবে। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সমস্বরের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অমিত আচার্য হিমেল। উদ্বোধনী আয়োজনটি সাজানো হয় পঞ্চকবির গান ও কবিতা দিয়ে। সঙ্গীত পরিবেশন করেন শংকর সরকার, অমিত আচার্য হিমেল, নাজনীন নাজ, সুজাউর রহমান শীষ, জোবায়দা মিষ্টি, রওনক জাহান হ্যাপী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন জয়। গান গেয়ে শোনায় শিশুশিল্পী চড়ুই।
×