ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকার দিনরাত

কী দারুণ উৎসব আর নিদারুণ উৎকণ্ঠাতেই না গেল গত সাতটা দিন। একদিকে উৎসব বা আনন্দ, অন্যদিকে উৎকণ্ঠা বা উত্তেজনা এবং দুর্ভাবনা- জীবনের এপিঠ ও উল্টোপিঠই বটে। আর এরই মাঝে বাজছে নতুনকে নির্বাচিত করার নিঃশব্দ প্রতীক্ষা এবং সশব্দ আয়োজন। যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ করলাম তার নাম উচ্চারণ না করলেও পাঠক ঠিকই বুঝে নিয়েছেন কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর আমরা আলো ফেলতে চাইছি। কোনটা রেখে কোনটাকে প্রাধান্য দেয়া চলে! রাজরানী রাজধানীর কাছে প্রথম মনোনয়ন পাবে কোনটা? ঢাকাবাসীর একেকজনের কাছে একেকটি বিষয় ভেসে উঠলেও তার পাশে বা কিঞ্চিত নিচেই রয়েছে অন্য দুটি প্রসঙ্গ। ঢাকাকে আমূল নাড়িয়ে দেয়া ভূমিকম্প, মানুষের মনে আনন্দের উপলক্ষ নিয়ে আসা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাওয়াশ এবং টি২০ ম্যাচে অভূতপূর্ব সাফল্য, তৃতীয়ত সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ডামাডোল (একই সঙ্গে শব্দদূষণ ও রাজপথের হাঙ্গামাও বটে)- সব কয়টিই ‘ঢাকা-সাপ্তাহিকীর’ শিরোনাম হওয়ার দাবিদার। আজকের লেখায় তিনটি প্রসঙ্গই থাকছে, তবে তার আগে বুড়ি-ছোঁয়া যাক অনিবার্য আরও তিনটি বিষয়। রাজপথের পাঁজরে ভাগাড় ঢাকা শহরের ব্যস্ত সড়কগুলো রুদ্ধশ্বাসে ছুটে চলা মানুষ আর যানবাহনের ভার বহন করে চলেছে নিঃশব্দে-নীরবে। যদি তার জবান থাকত তবে প্রকাশিত হতে পারত ভলিউম ভলিউম সাতকাহন। কবি-শিল্পীদের থাকে সংবেদনশীল মন আর আশ্চর্য শ্রবণশক্তি। শব্দহীন আওয়াজ তার কানে পশে ঠিকই। রাজধানীর রাজপথের পাঁজরে দুষ্ট ক্ষতের মতো জেগে থাকা একেকটা ভাগাড় তাকে কতটা বিপর্যস্ত করে আমাদের জানার উপায় নেই। তবে পথচারীর দুর্দশা খোলা চোখে দেখা যায়। নাকে রুমাল চেপে তড়িঘড়ি জায়গাটা পার হয়ে শ্বাস বাঁচানো চলে। কিন্তু ওই এলাকার পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রেহাই মিলবে কবে, কিভাবে? মিউনিসিপ্যালিটির খোলা কন্টেনার থেকে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়া বর্জ্যরে কুশ্রিতা আর তা থেকে বাতাসে ছড়িয়ে পড়া অস্বাস্থ্যকর উৎকট গন্ধে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠাÑ এ তো আর বছরের পর বছর ধরে চলতে পারে না একটা মহানগরীতে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে বলে আমরা কথায় কথায় গর্ব করি অথচ বড় বড় সড়কগুলোকে হতে দিচ্ছি খোলা ডাস্টবিন! এর অবসান হতেই হবে। যুদ্ধবিরোধী গুয়ের্নিকা দুদিন আগে ছিল ২৬ এপ্রিল। ১৯৩৭ সালে বিশ্বের ইতিহাসে একটি বড় ঘটনা ঘটেছিল। এই দিনে স্পেনের গুয়ের্নিকা বাস্ক শহরের ওপর জার্মান বাহিনী আক্রমণ করে। নির্মমভাবে বোমা বর্ষণে শহরের শত শত নিরপরাধ লোকের মৃত্য হয়। এরপরের দিন থেকে বিখ্যাত শিল্পী পিকাসো এই মর্মন্তুদ ভয়াবহ ঘটনার ওপর পেইন্টিং করতে শুরু করেন। পেইন্টিংটির নাম গুয়ের্নিকা। অসামান্য এক শিল্পকর্ম। ক্যানভাসের ওপর সাদা কালো তেলরঙে তৈরি পেইন্টিংটি ১১ ফুট ৬ ইঞ্চি দীর্ঘ এবং ২৬ ফুট প্রশস্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে আঁকা এই পেন্টিংটি ছিল খুবই সময়োপযোগী এবং অত্যন্ত শক্তিশালী। পেইন্টিংটি শান্তি আন্দোলনে ও যুদ্ধবিরোধী প্রতীক হিসেবে বর্তমানে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই পেইন্টিং নিয়ে সারা পৃথিবীতে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। আছে হাজারো রহস্য ও গল্পগাথা। পিকাসো নিজেও এর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাননি। বিশ্বযুদ্ধকালে জার্মান বাহিনী যখন পিকাসোর স্টুডিওতে ঢুকেছিল এবং গুয়ের্নিকা পেইন্টিংটি দেখে জার্মান সৈন্যরা শিল্পী পিকাসোকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘এটি কী করেছো...?’ পিকাসোর উত্তর ছিলো : ‘এটি আমি করিনি, তোমরা করেছো...।’ বর্তমানে ‘গুয়ের্নিকা’ পেইন্টিংটি মাদ্রিদের রেনে সোফিয়া মিউজিয়ামে সংরক্ষিত। ঢাকার শিল্পীদের কেউ কেউ ঠিকই স্মরণ করেছেন ওই দিনটিতে পিকাসো এবং তাঁর অমর সৃষ্টি গুয়ের্নিকাকে। শিল্পী রফি হক, রশীদ আমিন থেকে শুরু করে সমর মজুমদার, নাহিদ ওসমান এবং অনেকেই আছেন এই স্মরণ-আয়োজনে। দুদিন বাদেই মে দিবস সামনে দুদিন আছে আর, তারপরেই মে দিবস। মে মাসের প্রথম দিন কলেকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের উৎসবের দিন। এই দিন তাদের ছুটি; নেই আট ঘণ্টার পরিশ্রমের পর ওভারটাইম খাটার কষ্ট। দিনটি শুধু তাদের জন্যই নির্দিষ্ট একান্ত নিজেদের দিন- এই বোধটুকু তাদের এক ধরনের আনন্দের পাশাপাশি সান্ত¡নাও দেয়। সড়কে সড়কে তারা আনন্দ মিছিল বের করে। সেই মিছিলে পরিবহন শ্রমিকরাও যোগ দেয়। তবে আমার কাছে ঢাকার অতিরিক্ত শ্রমদানকারী কর্মী বলে মনে হয় লাখো রিক্সাওয়ালা এবং ঘরে ঘরে আঠেরো ঘণ্টা খেটে চলা গৃহশ্রমিক তথা বুয়াদের। মে দিবসের গৌরব তাদের কি স্পর্শ করে? এদিনও কি তারা ছুটি নিতে পারে কাজ থেকে? ঢাকার রাজপথের সত্যিকারের শ্রমিক রিক্সাওয়ালারা। কৃষি মৌসুমে গ্রামে চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত থাকা বহু কৃষক কর্মহীন মাসগুলোতে ঢাকায় এসে রিক্সা চালায়। কাজটা পরিশ্রমের তা বলাই বাহুল্য। ঢাকার অধিকাংশ মানুষ পথ চলার জন্য রিক্সার ওপর নির্ভরশীল। রিক্সাওয়ালাদের কোন উপরি বা বোনাস নেই। যাত্রীর দেয়া টাকাই তার একমাত্র উপার্জন। অথচ রাস্তাঘাটে দু-পাঁচ টাকা ভাড়া নিয়ে রিক্সাওয়ালা-যাত্রীর উত্তপ্ত কথা চালাচালি চলে। দু-পাঁচ টাকা বেশি দিলে যাত্রীদের কি বড় কোন ক্ষতি হয়ে যায়? হয় না। তবু সামান্য ব্যতিক্রম বাদে মানুষ রিক্সাওয়ালাদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে ঝামেলা করবেই। বরং ঢাকার রাস্তায় বড় ডাকাত হচ্ছে সিএনজি অটোরিক্সাওয়ালারা। নিয়মের কোন তোয়াক্কা করে না তারা। রিক্সাওয়ালাদের মতো তাদের কায়িক পরিশ্রম করতে হয় না। তাই সে অর্থে তাদের শ্রমিক বলতেও আমার আপত্তি। এরা চলে নিজের খেয়াল খুশিমতো। আপনার যতই প্রয়োজন থাক, বেশি ভাড়া দিতে আপনি সম্মত থাকলেও তারা নিজের হিসাবের বাইরে যেতে নারাজ। অথচ নগর পরিবহনে ট্যাক্সি-অটোরিক্সার ব্যবস্থা চালু হয়েছে নাগরিকদের প্রয়োজনের কথা ভেবেই। এখানে চালকের কোন পছন্দ থাকার সুযোগ নেই, শহরের ভেতর যেখানেই যেতে চাইবে মানুষ সেখানে যেতে তারা বাধ্য থাকবে- এটাই রীতি। পৃথিবীর সব দেশে এটাই নিয়ম। সেই সঙ্গে মিটার অনুযায়ী ভাড়া প্রদানের ব্যবস্থাটিও বহাল। ঢাকাই শুধু ব্যতিক্রম। নাগরিক সুবিধার কথা বিবেচনায় নিলে অবশ্যই এইসব অরাজকতা অনিয়মের অবসান ঘটাতে হবে। মে দিবসের কথা বলতে গিয়ে এসব কথা এসে পড়ল। শেষে বলব গৃহশ্রমিকদের কথা। এদের নিয়ে গিন্নিদের অভিযোগের যেমন অন্ত নেই, তেমনি দুদিন এরা না থাকলে গিন্নিদের কী দশা হয় সে সম্পর্কেও আমাদের কমবেশি ধারণা রয়েছে। আমার কথায় নারীবাদীরা মাইন্ড করে বসতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা কিছুকেই আমরা এড়াতে পারি না। গৃহে নারীর শ্রমকে অর্থনীতির মানদ-ে বিবেচনা করার কথা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে গৃহবধূরা গৃহে শ্রম দিয়ে অর্থসাশ্রয় করছেন, অথচ তারা কাজের স্বীকৃতিও পাচ্ছেন না। একদম ঠিক কথা। ঘরের পুরুষটিকে অবশ্যই নারীর কাজে সহায়তা করার মানসিকতা থাকতে হবে। কিন্তু আমরা বলছিলাম গৃহশ্রমিক বা বুয়াদের কথা। তাদেরকে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন গৃহিণীরাই। শ্রমব্যবস্থায় মালিক-শ্রমিকের মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব বিরাট। মে দিবসকে সামনে রেখে সেই বিষয়টিকেই উর্ধে তুলে ধরতে চাইছি। লাখ লাখ গৃহশ্রমিক, যারা কখনই শ্রমিক হিসেবে ন্যূনতম মর্যাদা পান না, তাদের সঙ্গে অন্তত আচরণে আমরা সহৃদয় থাকতে পারি। তাতে দু’পয়সা অতিরিক্ত খরচের কোন ঝুঁকি তো নেই! ভূমিকম্প ও হৃদকম্প শনিবার হিমালয়কন্যা নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। ভূমিকম্পটি ঢাকার অনেক বহুতল ভবনকে কাঁপিয়ে দিয়ে গেছে। হৃদকম্প হয়েছে লাখো ঢাকাবাসীর। পরদিন রবিবারেও মৃদু ভূকম্পন হয়। পরপর দুদিন এ সময়টাতে জনকণ্ঠ অফিসেই ছিলাম। বেশ ভালমতোই কেঁপেছে ভবনটি। সাত তলা থেকে তাকিয়ে ছিলাম বাইরের দালানকোঠার দিকে। মনে হচ্ছিল হয়তা কোন দালান হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে। নিজেও যে দালানচাপা হয়ে মরতে পারি এমন ভাবনাও মুহূর্তে ছুঁয়ে গেছে। আর ওই সময়েই কম্পিউটারের পর্দায় তাকিয়ে দেখি ফেসবুকে একের পর এক স্ট্যাটাস দিয়ে ভূমিকম্পের জানান দিয়ে চলেছেন বন্ধুরা। ভূমিকম্পের পর সংবাদকর্মীরা বসে থাকতে পারেন না, বিশদ খবরের জন্য তৎপর হন। তাৎক্ষণিকভাবে সম্পাদকীয় লেখারও সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ভূমিকম্প এমন একটি ভূপ্রাকৃতিক ক্রিয়া যার পূর্বাভাস মেলে না। তবে পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে কিছু করণীয় তো থাকেই। এ নিয়ে আমাদের অনেক ভুল ধারণাও তো রয়েছে। আজকের লেখায় কিছু বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা জরুরী মনে করছি। ভূমিকম্প হলে আমাদের করণীয় কী সে সম্বন্ধে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরা হলো- তথ্যগুলো নিজে জানুন, পরিচিতদের জানিয়ে দিন। অন্তত কিছুটা হলেও নিজে নিরাপদ থাকার জন্য তথ্যগুলো প্রয়োজনীয়। ১। ভূমিকম্পের সময় বেশি নড়াচড়া, বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করা, জানালা দিয়ে লাফ দেয়ার চেষ্টা ইত্যাদি না করা উত্তম। একটা সাধারণ নিয়ম হলো- এ সময় যত বেশি মুভমেন্ট করবেন, তত বেশি আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। আপনার ভবনে যদি ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা থাকে বা রেট্রোফিটিং করা থাকে তবে ভূমিকম্পের সময় বাসায় থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ। ২। আমেরিকান রেডক্রসের পরামর্শ অনুযায়ী- ভূমিকম্পের সময় সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো ‘ড্রপ-কাভার- হোল্ড অন’ বা ‘ডাক-কাভার’ পদ্ধতি। অর্থাৎ কম্পন শুরু হলে মেঝেতে বসে পড়ুন, তারপর কোন শক্ত টেবিল বা ডেস্কের নিচে ঢুকে কাভার নিন, এমন ডেস্ক বেছে নিন বা এমনভাবে কাভার নিন যেন প্রয়োজনে আপনি কাভারসহ মুভ করতে পারেন। তাদের মতে, কোন ভবন ভূমিকম্পরোধক হলে তা খুব কমই ধসে পড়ে; যেটা হয় তা হলো আশপাশের বিভিন্ন জিনিস বা ফার্নিচার গায়ের ওপর পড়ে নেক-হেড-চেস্ট ইনজুরি বেশি হয়। তাই এগুলো থেকে রক্ষার জন্য কোন শক্ত ডেস্ক বা এরকম কিছুর নিচে ঢুকে কাভার নেয়া বেশি জরুরী। ৩। ভূমিকম্পের সময় এলিভেটর/লিফট ব্যবহার পরিহার করুন। ৪। ভূমিকম্পের সময় যদি গাড়িতে থাকেন তবে গাড়ি বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকুন। গাড়ির বাইরে থাকলে আহত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ৫। প্রথম ভূমিকম্পের পর গ্যাস, বিদ্যুত ইত্যাদি একনজর দেখে নিন। কোথাও কোন লিক বা ড্যামেজ দেখলে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন। সবচেয়ে বড় কথা, আতঙ্কিত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করুন, অন্যদেরও অভয় দিন। গোহারা পাকিস্তান পর পর চারটি ম্যাচে টাইগারদের কাছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল গোহারা হারল। প্রথমে ওডিআই সিরিজে হলো বাংলাওয়াশ, পরে টি২০তে কুপোকাৎ। অথচ কুড়ি ওভারের ম্যাচে এতকাল পাকিস্তানই ছিল মহাসর্দার। সেদিন কি খুব দূরে যখন বিশ্বকাপে প্রথম ১৫ ওভারে পাকিস্তান ছুঁয়ে ফেলত শতরানের সীমানা, আর বহু ম্যাচে শেষ দশ ওভারে ওরা তুলতে পারত এক শ’ রান! সে কারণেই তো খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যেত না পাকিস্তান হেরে যাচ্ছে। বলা গেল শুধু এবার, ঢাকার মাটিতে। খেলা শেষ হওয়ার আগেই ওদের খেলা শেষ করে দিয়েছে টাইগাররা। কুড়ি ওভারের ম্যাচেও তারা অসহায় আত্মসমর্পণই যেন করল। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী বড় বড় সব ম্যাচেই গ্যালারিতে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিয়ে গেছেন। খেলাশেষে স¯েœহ আদরও দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ককে। তাৎক্ষণিকভাবেই রাতে একসঙ্গে খাওয়ার দাওয়াত জানালেন। তাঁর এই আন্তরিকতা, আপ্যায়ন ও আদরের ধরন দেশবাসীর প্রাণ ছুঁয়ে যাওয়ার মতোই। অনেকই বলেছেন এ যেন মায়ের মতো ব্যবহার। টাইগাররা যেন সব সময়েই মায়ের মর্যাদা রাখেন, জিতুক বা হারুক লড়াইটা যেন জারি রাখে- এটাই প্রত্যাশা। আজ ভোট অনেক দিন পর আজ আবার ঢাকায় ভোট। শুধু ঢাকা তো নয়, বড় তিনটি শহরেই আজ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ সংক্রান্ত প্রচার তুঙ্গে ওঠে ঢাকায় শুক্রবার থেকে। পরপর টানা তিন দিন এটা চলে। শব্দদূষণ কত প্রকার ও কী কী এটা হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিয়েছেন ঢাকার প্রার্থীরা। যা হোক ঢাকায় সমস্যার অন্ত নেই। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বসবাসকারী নাগরিকরা তাদের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মশা, পথঘাটের বেহাল দশা, বাড়ি ভাড়ার লাগামহীন বৃদ্ধি ও অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে। এ ছাড়া রয়েছে নিরাপত্তার সঙ্কট, গণপরিবহনের অভাব, দুর্নীতি, জলাবদ্ধতা, পরিবেশ দূষণ, মাদকের বিস্তারসহ আরও অনেক বিষয়। একটা জরিপে এ বিষয়গুলো উঠে আসে। আমার তো মনে হয় ঢাকা দক্ষিণও এর একটি সমস্যা থেকে মুক্ত নয়। আজ ঢাকাবাসী তাদের মেয়র বেছে নেবেন। নির্বাচিত মেয়র এসে ঢাকাকে কতটা সমস্যামুক্ত করেন সেটা নিশ্চয়ই ‘ঢাকার দিনরাত’-এর পক্ষে পাঠকরা লক্ষ্য রাখবেন। ২৭ এপ্রিল ২০১৫ [email protected]
×