ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেই রসু খাঁর ফাঁসি

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

সেই রসু খাঁর  ফাঁসি

একের পর এক ১১ নারীকে ধর্ষণের পর হত্যাকারী সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রসু খাঁকে বাংলাদেশের প্রথম সিরিয়াল কিলার বলা হয়। খুলনার এক পোশাক কর্মীকে হত্যার দায়ে বুধবার চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এ রায় ঘোষণা করেন। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১০টি মামলার মধ্যে একটি মামলার রায় দেয়া হলো। বাকি ৯টি মামলা বিচারাধীন। তার অপরাধগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে। চাঁদপুরের মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খাঁ ভালবাসায় পরাস্ত হয়ে এক সময় সিরিয়াল কিলারে পরিণত হয়। তার এই ভয়ঙ্কর জীবনের শুরু ২০০৭ সালের প্রথম দিকে তার শ্যালকের স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার মধ্য দিয়ে। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেরিয়ে আসে। সে নিজের মুখে স্বীকার করে ১১ নারী হত্যার কথা। তার টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর। কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় তার সেই ‘আশা’ পূরণ হয়নি। উল্লেখ্য, রসু যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্ট কর্মী। এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া রসু খাঁর নৃশংসতার কাহিনী শুধু তার এলাকাবাসীকেই নয়, দেশবাসীকেও স্তম্ভিত করেছে। তার হাতে হত্যার শিকার এসব নারীর অধিকাংশেরই সঠিক নাম-ঠিকানা বা পরিচয় আজও জানা যায়নি। কেন হত্যার নেশা রসু খাঁকে পেয়ে বসেছিল তা মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়। এই রায় কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে ন্যায়বিচার প্রত্যাশী প্রতিটি মানুষ। রায়ে আইনের শাসনের পথ আরও সুগম করল। এতে এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত হলো যে, কেউ আইনের উর্ধে নয়। অপরাধী অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে। তার অপরাধ ছিল গুরুতর, যা তার জবানীতেও উঠে এসেছে। রসু খাঁর নারীর প্রতি আচরণ এবং বিকৃত যৌনরুচির কথা সে সময়কার মিডিয়ায় যেভাবে উঠে এসেছে তা যে ভয়াবহ তাতে সন্দেহ নেই। দীর্ঘদিন পর হলেও ঘাতকের ফাঁসির রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হল কেউ আইনের উর্ধে নয়, অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে।
×