ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রানাডা টেস্টে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার ৯ উইকেটে, ম্যাচসেরা সেঞ্চুরিয়ান জো রুট, আড়াই বছর ও দশ ম্যাচ পর বিদেশের মাটিতে সাফল্য ইংলিশদের

দুর্দান্ত জয়ে দারুণ খুশি কুক

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

দুর্দান্ত জয়ে দারুণ খুশি কুক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ খুশি তার হওয়ারই কথা। কুকের জীবনে কী কঠিন সময়টাই না গেছে। টানা ব্যর্থতায় কেবল ওয়ানডে নেতৃত্ব নয়, বিশ্বকাপের দল থেকেও জায়গা হারিয়েছেন! উইন্ডিজ সফরটা তাই ইংলিশ তারকার জন্য ছিল এ্যাসিড টেস্ট। গ্রানাডায় প্রায় ড্র দেখা দ্বিতীয় টেস্টে শেষদিনের নাটকে ৯ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যাওয়ায় বুক থেকে পাথর নেমে গেল এ্যালিস্টার কুকের। ইংল্যান্ড টেস্ট অধিনায়ক তাই দারুণ খুশি। দীর্ঘ আড়াই বছর পর বিদেশের মাটিতে টেস্ট সাফল্যে সতীর্থদের প্রশংসা করলেও তাতে একটু বেশিই সিক্ত হয়েছেন ম্যাচসেরা সেঞ্চুরিয়ান জো রুট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে দুরন্ত বোলিং করে দৃশ্যপট বদলে দেয়া জেমস এ্যান্ডারসন। ৩৭ রানের লিড, চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ক্যারিবীয়দের রান ২০২, ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি হাঁকানো ওপেনার কার্ক ব্রেথওয়েট, অপেক্ষায় শিবনারায়ণ চন্দরপল-দিনেশ রামদিনÑ পঞ্চম দিনের শুরুতেও নিশ্চিত ড্র দেখছিল স্বাগতিকরা। অথচ সেই তারাই অলআউট ৩০৭ রানে! খেলতে পারল আর ৩৭ ওভার। ১০৫ রান তুলতে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে নিজেদের হারের রাস্তা নিজেরাই তৈরি করল উইন্ডিজ! ফল যা হওয়ার তাই, ৪১.১ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৪৩ রান তুলে নিল সফরকারীরা। ৫৯ রানে অপরাজিত থাকলেন অধিনায়ক কুক, সঙ্গে গ্যারি ব্যালান্স ৮১। প্রথম ইনিংসে ১৮২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা জো রুট। প্রথম ইনিংসে ক্যারিবীয়দের ২৯৯Ñএর জবাবে ৪৬৪ রানে অলআউট হয়েছিল ইংলিশরা। দেড় শ’রও কম রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড তা পেরোলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কুক ও ব্যালান্স তুলে নিলেন দারুণ দুটি হাফসেঞ্চুরি। আড়াই বছ, নির্দিষ্ট করে বললে দশ টেস্ট পর বিদেশের মাটিতে বহুকাক্সিক্ষত জয় পেল কুলীন ইংলিশরা! সার্বিক বিচারে গ্রানাডায় কুকদের ব্যাট যেভাবে কথা বলেছে, ঠিক একইভাবে ব্যর্থ রামদিনরা। ২/২০২-এ পঞ্চম দিন শুরু করা উন্ডিজকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ রানের মধ্যে গুটিয়ে দেয়ার কারিগর এ্যান্ডারসন ও মঈন আলি। ইংল্যান্ড ইতিহাসের সর্বাধিক শিকারের মালিক এ্যান্ডারসন তার সর্পিল সুইং ও গতির তোপে তুলে নেন ৪ উইকেট। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা স্পিনার মঈনের শিকার ৩। স্বাগতিকদের আলোচিত দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ব্রেথওয়েট। শেষদিনে খুব বেশি এগোতে পারেননি। ১০১-এর সঙ্গে আর ১৫ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ১১৬ রানে এ্যান্ডারসনের বলে রুটের হাতে কাটা পড়েন স্বাগতিক ওপেনার। ড্যারেন ব্রাভোর ৬৯ উল্লেখ্য। ২৫২ বলে ১৪ চারের সাহায্যে ইনিংসটি খেলেন ২২ বছর বয়সী। ১৯তম টেস্টে বার্বাডিয়ান প্রতিভার ৬ হাফসেঞ্চুরির বিপরীতে এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। তার আগে ম্যাচের নায়ক রুটের দুরন্ত সেঞ্চুরির ওপর ভর করে প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের ২৯৯Ñএর জবাবে ৪৬৪ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। দারুণ জয়ে খুশি অধিনায়ক কুক, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভাল শুরু করেছিল। এটা সত্য যে ব্রেথওয়েট-ড্যারেন আমাদের ওপর চাপ তৈরি করেছিল। এ সময় দারুণ ভূমিকা রেখেছে এ্যান্ডারস। স্বাগতিক টপঅর্ডার গুড়িয়ে দিয়ে দেখিয়েছে কেন সে বিশ্বসেরাদের একজন। ভাল করেছে ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা মঈনও। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পর বিদেশের মাটিতে জয়ে ভূমিকা সবারই। আমি খুবই খুশি।’ রুটের ব্যাটিংয়েরও ভূয়সী প্রশংসা করেন কুক। অন্যদিকে পরাজিত অধিনায়ক রামদিন বলেন, ‘আমরা চার দিন পর্যন্ত সমানে লড়েছি। কিন্তু শেষ দিনের প্রথম সেশনে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছি। ব্রেথওয়েট ভাল করেছে, বাকিরা দায়িত্ব নিতে পারেনি। এটাও ঠিক জিমি অসাধারণ বোলিং করে আমাদের ছিটকে দিয়েছে।’
×