ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সম্মিলিত পরিষদ নেতৃত্ব ফিরে পেতে আর ঐক্য প্যানেল ধরে রাখার মিশনে নেমেছে

টান টান উত্তেজনার বার কাউন্সিল নির্বাচন ২০ মে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

টান টান উত্তেজনার বার কাউন্সিল নির্বাচন ২০ মে

বিকাশ দত্ত ॥ আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন আগামী ২০ মে। নির্বাচন ঘিরে সারাদেশের আইনজীবীদের মধ্যে চলছে টান টান উত্তেজনা। আগামী তিন বছরের জন্য কাদের নির্বাচিত করবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে আইনজীবীদের মাঝে চুলচেরা হিসাব-নিকাশ। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ নেতৃত্ব ফিরে পেতে, অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল নেতৃত্ব ধরে রাখতে যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছে। নির্বাচনে এবারই সমন্বয় পরিষদ ঐক্যবদ্ধ তারকাখচিত প্যানেল দিতে সমর্থ হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির নেতৃত্বাধীন প্যানেলেও তারকাখচিত প্রার্থী রয়েছেন। আইনজীবীদের ধারণা এবার নির্বাচনে তিনটি প্যানেল থাকলেও দুটি প্যানেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। বার কাউন্সিলের সাতটি সাধারণ আসনে ৩২ ও সাতটি গ্রুপ আসনে ২৯ জনসহ মোট ৬১ জনের মধ্যে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সারাদেশের ৮০ বারের মধ্যে ৭৭ কেন্দ্রে এবার ৪৮ হাজার ৪৬৫ আইনজীবী আগামী তিন বছরের জন্য নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। বার কাউন্সিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাজমুল আহসান জনকণ্ঠকে বলেছেন, এবার নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪৮ হাজার ৪৬৫। ২০ মে সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। বার কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীরা সাধারণ আসনে ৭ এবং সাতটি গ্রুপ আসনে প্রত্যেক এলাকার স্থানীয় আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে ৭ জনকে নির্বাচিত করবেন। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের সকল জেলা সদরে দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণে একটি করে ভোট কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া বাজিতপুর, ইশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাঙ্গা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছাসহ ৭৭টি কেন্দ্রে ভোট প্রদান করা যাবে। এ গ্রুপের মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর ঢাকা জেলার সকল স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, গ্রুপ বি তে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত সকল স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, সি গ্রুপে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলা, ডি গ্রুপে বৃহত্তর কুমিল্লা ও সিলেট জেলা, ই গ্রুপে বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী জেলা, এফ গ্রুপে বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া এবং জি গ্রুপে বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার অন্তর্গত সকল স্থানীয় আইনজীবী সমিতি। নাজমুল আহসান আরও বলেন, এবারের প্রায় ১০ হাজার নতুন ভোটার বেড়েছে। যে সমস্ত প্রার্থী ব্যারিস্টার তাদের নামের আগে ব্যারিস্টার লাগানো হয়নি তাদের প্রসঙ্গে প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, এটা নামের অংশ নয় তাই ভোটার তালিকায় ও প্রার্থীর তালিকায় ব্যারিস্টার পদবি লেখা হয়নি। এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের বাইরে ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী সমাজ নামে আরেকটি প্যানেল দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে সাধারণ আসনে ৩২, গ্রুপ অনুয়াযী গ্রুপ আসনে ৪, গ্রুপ-বি আসনে ৩, গ্রুপ-সি আসনে ৩, গ্রুপ-ডি আসনে ৫, গ্রুপ ই আসনে ৩, গ্রুপ এফ আসনে ৪ এবং গ্রুপ জি আসনে ৭ প্রার্থী রয়েছেন। দ্বিধাবিভক্ত সমন্বয় পরিষদ অবশেষে বার কাউন্সিলে নির্বাচন ঘিরে ঐক্যবদ্ধ প্যানেল দিতে সক্ষম হয়েছে। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্যানেল ঘোষণা করেন। বিভক্ত সমন্বয় পরিষদের উভয় পক্ষের নেতৃবৃন্দই গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমাউন, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকবৃন্দ, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকবৃন্দসহ সমন্বয় পরিষদ সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়। এই প্যানেলের মধ্যে রয়েছে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, জাতীয় আইনজীবী পরিষদ ও গণতান্ত্রিক আইনজীবী পরিষদ (একাংশ)। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সমন্বয় পরিষদের প্যানেলে রয়েছেন এম আমীর-উল-ইসলাম, আব্দুল বাসেত মজুমদার, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আব্দুল মতিন খসরু, পরিমল চন্দ্র গুহ, জেড আই খান পান্না, শ.ম রেজাউল করিম। গ্রুপ অনুযায়ী রয়েছেন গ্রুপ এ ঢাকা আসনে কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, গ্রুপ বি আসনে আলহাজ এইচ আর জাহিদ আনোয়ার, গ্রুপ সি আসনে ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী, গ্রুপ ডি আসনে সরোয়ার আহম্মেদ চৌধুরী আবদাল, গ্রুপ ই আসনে পারভেজ আলম খান, গ্রুপ এফ আসনে মোঃ ইয়াহিয়া ও গ্রুপ জি আসনে রেজাউল করিম। অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলে রয়েছেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, এএম মাহবুব উদ্দিন (খোকন), সানাউল্লাহ মিয়া, বদরুদ্দোজা (বাদল), আলহাজ মোঃ বোরহান উদ্দিন, মহসিন মিয়া, গ্রুপ এ আসনে রয়েছেন গোলাম মোস্তফা খান, বি আসনে মোহাম্মদ আব্দুল বাকী মিয়া, সি আসনে কবির চৌধুরী, ডি আসনে কাইমুল হক, ই আসনে আব্দুল মালেক, এফ আসনে মোঃ ইসহাক ও জি আসনে একেএম হাফিজুর রহমান। ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী সমাজের প্যানেলে রয়েছেন সুব্রত চৌধুরী, শাহ মোঃ খসরুজ্জামান, একেএম জগলুল হায়দার আফরিক, সরওয়ার ই-দীন, মোঃ হেলাল উদ্দিন, আব্দুল মোমেন চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, গ্রুপ অনুযায়ী এ আসনে রয়েছেন এস এম আলতাফ হোসেন, বি আসনে নজরুল ইসলাম খান, সি আসনে এখন ঠিক করতে পারেনি, ডি আসনে শান্তিপদ ঘোষ, ই আসনে আব্দুল আজিজ, এফ আসনে ডি এম বারী ও জি আসনে এটিএম এনামুল হক। মোঃ হেলাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেছেন আমরা সাধারণ আসনে ৭ জন দিলেও এখন পর্যন্ত গ্রুপ সি আসনে কোন প্রার্থী দিতে পারেনি। ধারণা করছি এ আসন ফাঁকা থাকবে। এই তিনটি প্যানেলের বাইরে আরা যারা আছেন তাদের মধ্যে সাধারণ আসনে রয়েছেন আলহাজ মোঃ ইস্রাফিল, ড. মোঃ ইউনুস আলী আকন্দ, নাসির উদ্দিন আহম্মেদ (অসীম), আবুল কালাম আজাদ, আবুল হোসেন, এনামুল কবির হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন মল্লিক, মাহবুব মিয়া, শওকত হায়াত, সামছুল হক, সুলতান এ সবুর। গ্রুপ আসনে রয়েছেন সায়মা খান, ডি আসনে মাছুদ সালাউদ্দিন, মোঃ আখতার বকস জাহাঙ্গীর, এফ আসনে মাহাবুবুল হক জোয়াদ্দার, জি আসনে মোস্তাফিজুর রহমান বুলু, রফিকুল ইসলাম সরকার, শহীদুল্লাহ বিশ্বাস হেলাল, শাকিল মোঃ শরিফুল হায়দার।
×