ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানীসহ সারাদেশ, প্রাণহানি ৪

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৬ এপ্রিল ২০১৫

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানীসহ সারাদেশ, প্রাণহানি ৪

শাহীন রহমান ॥ দফায় দফায় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানীসহ সারাদেশ। শুধু বাংলাদেশ নয় তীব্র ভূমিকম্পের আঘাতে কেঁপে উঠেছে নেপাল, ভারত ও পাকিস্তান। শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ১৪ মিনিট ২৭ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে নেপাল থেকে উৎপত্তি হওয়া ৭ দশমিক ৯ মাত্রা ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সারাদেশে আহত হয়েছে সাড়ে ৪শ’ জন। এছাড়া ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বহু ভবন হেলে পড়া, ফাটল দেখা দেয়া ও ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ভয়ে মানুষ ঘরবাড়ি অফিস আদালত ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে। অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অনেক জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ১ মিনিট। এদিকে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশীদের সহায়তা করতে হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশসহ নেপালে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে বিগত ৮০ বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে এত বড় ভূমিকম্পের উৎপত্তি হওয়ার কোন রেকর্ড নেই। সর্বশেষ ১৮২৪ সালে নেপাল বিহার বর্ডার এলাকা থেকে ৮.৪ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। ওই ভূমিকম্পের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও আর্থ অবজারভেটরি কেন্দ্রের পরিচালক সৈয়দ হুমায়ুন আকতার। বাংলাদেশে আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুলের ছাত্রছাত্রী বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন কারখানার বহু শ্রমিক আহত হয়েছে। বহু ভবনে ফাটল, হেলে পড়া ও দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভূমিকম্পের ফলে অনেক স্কুল, অফিস আদালতে হুড়োহুড়ি করে নামার সময় ভয়ার্ত মানুষ চিৎকার করতে থাকে। কোমলমতি অনেক স্কুল ছাত্রছাত্রীরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এর ফলে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়। আবহাওয়া অফিস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরি কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে ভয়াবহ মাত্রার এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে সাড়ে ৭শ’ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে নেপালের কাঠমান্ডু থেকে ৮২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম এলাকায়। উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ভূ-অভ্যন্তর থেকে এ ভূমিকম্পটি উৎপত্তি হয় বলে জানিয়েছে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে। এছাড়া তাদের তথ্য অনুযায়ী প্রথম দফা শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর এ এলাকায় আরও পাঁচ দফা ভূমিকম্প হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ভাষায় যাকে আফটার শক বা ভূকম্পন পরবর্তী কম্পন বলে ধরা হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলটি নেপালের একটি পাহাড়ি ও জনবসতিহীন এলাকা বলে জানা গেছে। তবে ভূমিকম্পের ফলে নেপালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতেও লোকজনের মৃত্যু ছাড়া সেখানে ভূমিকম্পের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানায়, প্রথম ভূমিকম্পের ২৬ মিনিট পর নেপালের কোড়ারির ২৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ৫ দশমিক ১ মাত্রার, তার ১৪ মিনিট পর লামজুংয়ের ৪৯ কিলোমিটার পূর্বে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার, এর ১১ মিনিট পর নেপালের নাগরকোটের ২৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার, এর ১০ মিনিট পর নেপালের কোড়ারির ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ৫ মাত্রার এবং এর চার মিনিটের মাথায় নেপালের পানাওতির ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ৪ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে নেপাল থেকে উৎপত্তি হওয়ায় প্রথম দফায় তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশে আরও তিনবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে সেগুলোর মাত্রা ছিল মাঝারি আকারের। দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিটে দেশে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্প নেপাল থেকে উৎপত্তি হলেও এর প্রভাব সরাসরি পড়ে বাংলাদেশসহ সারাদেশের ওপর। এদিকে ভূমিকম্পের প্রভাবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের সময় বগুড়ায় দেয়াল চাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ভূমিকম্পে রাজধানীর মিরপুরে ডায়মন্ড গার্মেন্টস নামের একটি পোশাক কারখানা ও বংশালে ছয়তলা একটি ভবন কিছুটা হেলে পড়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এ ব্লকের ২ নম্বর সড়কের ২০৮ নম্বর ৬ তলা ভবনের আংশিক দেবে গেছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর বারিধারায় ক্যাব্রিয়ান স্কুলে প্রথম দফায় ভূমিকম্পের পর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে চারজন কোমলমতি শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে বলে জানা গেছে। অন্য ছাত্রছাত্রী চিৎকার চেঁচামেচি করে স্কুল থেকে বের হতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়। এদিকে রাজধানীর অন্য সব জায়গার মতো হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরেও ছিল ভূমিকম্পের আতঙ্ক। অবশ্য এজন্য বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘিœত হয়নি। ফ্লাইট ওঠানামাও ছিল নিয়মিত। তবে বিমানের সদর দফতর বলাকার নিচতলার সিলিং অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নেপাল থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হলেও এর মাত্রা ছিল তীব্র। এর প্রভাবেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তবে তারা জানান ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্বের কারণে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেকটা কমে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারেটরি কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আকতার বলেন, এ ভূমিকম্পের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে কম্পনের তীব্রতার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ঢাকার নরম মাটি এলাকায় কম্পনের তীব্রতা ছিল ৪ এর ওপরে। এছাড়া উত্তরঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কম্পনের তীব্রতা ছিল ৫। এছাড়া খুলনাতে কম্পনের তীব্রতা পাওয়া গেছে ৪। এদিকে এ ভূমিকম্পের ফলে সারাদেশেই মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দেয়। প্রায় ১ মিনিট ব্যাপী এ ভূমিকম্পে আতঙ্কে মানুষ বাসাবাড়ি ঘর, অফিস আদালত থেকে আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্পের ফলে ভবন দেবে যাওয়া, ভবনের ফাটল দেখা দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। অনেকে আহত হয়েছেন ভবন থেকে লাফ দিয়ে বের হওয়ার সময়। ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের ছেলে-মেয়ে আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকে। ভূমিকম্পে প্রভাবে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৪শ’ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির খবর ॥ ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় পরিনা আক্তার নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিজস্ব সংবাদদাতা। পরিনা আক্তার কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার সুকুমুদ্দিন মিয়ার স্ত্রী বলে জানা গেছে। এছাড়া ভূয়াপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩০ জন ছাত্রী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জনকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বগুড়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান জেলার দুপচাচিয়ায় ভূমিকম্পে ভেঙ্গে পড়া একটি দেয়ালে চাপা পড়ে মোর্শেদা বিবি (৪৫) একজন নিহত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠাকুরগাঁ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান উপজেলার শালান্দও ইউনিয়নে হাসান আলী নামের তৃতীয় শ্রেণীর একজন ছাত্র মারা গেছে। পাবনা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, জেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা ও পৌর মহিলা লীগের সম্পাদক রোকেয়া বেগম ইতি মারা যান। ঈশ্বরদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ভূমিকম্পের সময় দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে নামতে গিয়ে ইপিজেডের তিন ফ্যাক্টরি এলাকায় শতাধিক মহিলা শ্রমিক আহত হয়েছে। ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে কুমিল্লার ইপিজেড এলাকায় হুড়োহুড়ি করে নিচে নামতে গিয়ে তিনটি কারখানার কমপক্ষে শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে নিজস্ব সংবাদদাতা। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে। সিরাজগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, জেলার চৌহালী উপজেলায় মধ্য খাসকাউলিয়া সদর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত দ্বিতল ভবনের টয়লেট, এনায়েতপুর থানার খুকনী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের দেয়াল ও সিঁড়িসহ বিভিন্ন স্থান ফেটে গেছে। উল্লাপাড়ার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, বাঞ্ছারামপুর রূপসদী-বৃন্দাবন উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৫ ছাত্রছাত্রী আতঙ্কিত হয়ে বিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ভূমিকম্পে শহরের নয়ামাটি এলাকায় একটি ভবন হেলে পড়ার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করায় সিলগালা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। নীলফামারী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জনান, ভূমিকম্পে তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার সময় ইপিজেডে ৭ জন, সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীসহ ৩৩ জন আহত হয়েছে। এছাড়া উত্তরা ইপিজেডের শিল্পকারখানার ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ধোবাউড়া উপজেলার কালিকাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। রাজশাহী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, দু’দফা শক্তিশালী ভূমিকম্পে জেলার চারটি ভবন হেলে গেছে। এরমধ্যে ডাঃ সুজিত ভদ্রের তিনতলা বাসা, ভেড়িপাড়া কেশবপুর প্রাথমিক বিদ্যলয়ের তিলতলা ভবন, ও মসজিদ মিশন স্কুলের তিনতলা ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন ১৯ জন। তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, ভূমিকম্পের সময় আশপাশের ভবনগুলো হেলতে থাকে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয় যায়নি। নওগাঁ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে শহরের মাংসহাটির মোড়ে নির্মণাধীন বহুতল ভবন, আকতার ও আফজলের ভবন, এরশাদুল হকের বহুতল ভবন, শামসুল হকের বাসায় ফাটল ও হেলে পড়েছে। যশোর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, শহরের ঐতিহ্যবাহী মুসলিম একাডেমিক স্কুলের মূল ভবনের দেয়লে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। সুনামগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাত জানান, জেলার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পে ১০ শিক্ষার্থী আহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছেন। স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, পশ্চিমভাগ এলাকার দখিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা আক্তার বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। বরগুনা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ভূমিকম্পে সদর উপজেলার সাতটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। নাটোর থেকে সংবাদদাতা জানান, ভূমিকম্পে শহরের চকরামপুর এলাকার এতকা ক্লিনিকের ছয়তলা ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভবনটি একপাশে হেলে পড়েছে। এছাড়াও একটি মাদ্রাসার দুটি কক্ষে ফাটল দেখা দিয়েছে। গাজীপুর থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ভূমিকম্পে শ্রীপুরের একটি পোশাক কারখানার ভবন দেবে গিয়ে হেলে পড়েছে। রূপগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাত জানান, ভূমিকম্পের সময় পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। কারখানা থেকে হুড়োহুড়ি করে নামার সময় ৪০ শ্রমিক আহত হয়। ভালুকা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, উপজেলার হরিবাড়ি, মাস্টারবাড়ি এলাকায় গার্মেন্টস শিল্পকারখানা থেকে নামতে গিয়ে ২০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, আদমজীনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। কেশবপুর থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, শহরের হাজী আব্দুল মোতালেব মহিলা কলেজের দ্বিতীয় তলার সামনে ফাটল দেখা দিয়েছে। কেরানীগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পের সময় একজন নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। গফরগাঁও থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে পাঁচজন আহত হয়েছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, মাগুরা, দিনাজপুর, সিলেট, নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, ঝালকাঠি, লালমনিরহাট, গোপালগঞ্জ, খুলনা, পার্বতীপুর, দুর্গাপুর, পাথরঘাটা, আমতলী, দামুড়হুদা, দাউদকান্দি থেকে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার জানান, ভূমিকম্পের সময় এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। তারা ভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। কেউ রাস্তায় নেমে আসে। তবে এসব এলাকায় ভূমিকম্পে কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলে তারা জানান। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৬০ সালের পর থেকেই দেশে ভূমিকম্প সংঘটনের হার বেড়েছে। এ সময়ের পর থেকে অনেক বেশি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। দেশ যে বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্মুখীন এ বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞের দ্বিমত নেই। যে কোন সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে।
×