ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাজীপুরে মা ও কলেজছাত্রী মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

গাজীপুরে মা ও কলেজছাত্রী মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ২৪ এপ্রিল ॥ গাজীপুরের শ্রীপুরে মা ও তার কলেজছাত্রী মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে ছেলে শাহজাহান মিয়া (২৫)। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে আতলরা ফাউকাল এলাকায় এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, মৃত আমির উদ্দিনের স্ত্রী হাছিনা ওরফে হাছুনি বিবি (৫০) ও তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আরিফা খাতুন (১৮)। আহত শাহজাহান মিয়াকে (২৫) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে হাছুনি বিবি মেয়ে আরিফা ও ছেলে শাহজাহান মিয়াকে নিয়ে মাটির ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা মাটির ঘরের নড়বড়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মা, ছেলে ও মেয়েকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী ঘর থেকে হাছুনির ছোট ছেলে মুজিবুর রহমান (২১) ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মা-ছেলেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকায় নেয়ার পথে হাছুনি বিবি মারা যায়। গুরুতর আহত শাহজাহানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত আরিফা স্থানীয় ধলাদিয়া কলেজে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল। আরিফা টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ যোগাত এবং তার ভাই শাহজাহান মিয়া রাজমিস্ত্রির সহকারী এবং মুজিবুর রহমান স্থানীয় নেসলে কারখানায় চাকরি করে সংসার চালায়। এলাকাবাসী জানায়, আহতদের উদ্ধারের সময় আরিফাকে বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা আরিফাকে ধর্ষণ করে অথবা ধর্ষণ চেষ্টার সময় তার ভাই ও মা রক্ষা করতে গেলে তাদের কোপায় দুর্বৃত্তরা। শ্রীপুর থানার ওসি আবদুল মোতালেব মিয়া জানান, তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান জানান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলাম ভিক্টিমদের পরিবারকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে আরও আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। একের পর এক এভাবে খুন করে কেউ অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বাবা সাইফুল ইসলাম (৫৫), তার মেয়ে আঁখি আক্তার (১৫), এর পাঁচদিন পর বাউপাড়া এলাকায় ভাবি করমজান (৭৬) ও ননদ রহিমা বেগম (৭৫), মার্চ মাসের শেষদিকে কাপাসিয়ায় এক বিধবা মা ও এক স্বামী পরিত্যক্ত মেয়ে এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় ভাওয়ারাইদ এলাকায় সেনা সদস্যের মা খোরশেদা বেগম (৮৪) খুন হন। এসব খুনের ঘটনার আসামিদের অধিকাংশই রয়েছে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।
×