ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামের বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর চালু হলেও নেই সুযোগ-সুবিধা

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

কুড়িগ্রামের বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর  চালু হলেও নেই সুযোগ-সুবিধা

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরটি চালু হলেও অবকাঠামো নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেই সরকারের। এ অবস্থায় বন্দরের কোন সুবিধা ছাড়াই রাজস্ব দিয়েও নানা সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি দু’দেশের সরকার অনুমোদিত সবগুলো পণ্য আমদানি-রফতানি শুরু না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে কয়লা ও পাথর আমদানি। অন্যদিকে স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশে সকল অবকাঠামো নির্মাণ হলেও বাংলাদেশ অংশে অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়াই চলছে বন্দরের কার্যক্রম। ভারতের অসম, মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, অরুণাচল ও মেঘালয় রাজ্য থেকে স্বল্প সময় ও কম খরচে পণ্য আমদানি ও রফতানি সুবিধা থাকায় ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর বন্ধ হয়ে যাওয়া বন্দরটি আবারও চালু করা হয়। গত ৪ মাসে এ বন্দর থেকে শুধু কয়লা ও পাথর আমদানিতে সরকারের রাজস্ব আদায় হয় ৮ কোটি টাকা। এ বন্দর দিয়ে ভারতের ১০টি পণ্য আমদানি ও বাংলাদেশের সব ধরনের পণ্য রফতানির কথা থাকলেও এর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে হতাশায় পড়েছেন বন্দরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। বন্দর দিয়ে পুরোদমে পণ্য আমদানি ও রফতানি শুরু না হওয়ায় স্বল্প পারিশ্রমিকে কাজ করতে হচ্ছে শ্রমিকদের। অবকাঠামো না থাকায় পণ্য লোড-আনলোডে ন্যায্য মুজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। পাশাপাশি শ্রমিক নেতাদের খবরদারী নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের কুলি শ্রমিক আতাউল জানান, স্থলবন্দরে শুরুর দিকে ভাল ইনকাম হলেও বর্তমানে শ্রমিক নেতারা টাকার বিনিময়ে শ্রমিক বাড়াচ্ছে। এতে শ্রমিকের কার্ড নিয়েও বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে আমাদের। সপ্তাহে মাত্র ২টি থেকে ৩টি ট্রাকের মাল আনলোড-আপলোড করতে পারি। এতে করে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ শ’ টাকা পাই যা দিয়ে সংসার চলছে না। স্থলবন্দরের মহিলা শ্রমিক জমিলা জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কয়লা ও পাথর সরানোর কাজ করি। ১শ’ ৫০ টাকা হাজিরা পাই। অথচ সমান কাজ করলেও পুরুষদের ২শ’ টাকা দেয়। আমরা হাজিরা কিছু বাড়িয়ে চাই। স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শাহীন আহমেদ জানান, ভারত থেকে কয়লা, পাথর, তাজা ফল, ভুট্টা, গম, চাল, ডাল, রসুনসহ মসলা জাতীয় ১০টি পণ্য আমদানি ও বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের পণ্য রফতানির অনুমোদন থাকলেও ভারত থেকে শুধুমাত্র কয়লা ও পাথর আমদানির অনুমোদন রয়েছে। পাশাপাশি অবকাঠামো না থাকা এবং দুধকুমোর নদীতে সংযোগ রক্ষাকারী সোনাহাট রেল সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বেশি খরচ গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সকল সমস্যা সমাধান করে পুরোদমে স্থলবন্দরটি চালুর দাবি জানাচ্ছি। কুড়িগ্রাম বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট সভাপতি, সরকার রকিব আহমেদ জুয়েল জানান, পণ্য পরিমাপের স্কেল (ওয়েব্রিজ) না থাকায় ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অবকাঠামোসহ দ্রুত সেতুু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
×