ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১২ প্রতিভাবান দাবাড়ুকে স্থায়ী স্পন্সর ও নৌবাহিনী দলে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি

ক্রীড়া সংগঠক মোহনকে সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

ক্রীড়া সংগঠক মোহনকে সংবর্ধনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘর বা পথের ময়লা দূর হয় ঝাড়ু দ্বারা। আর মনের ময়লা দূর হয় খেলাধুলা দ্বারা। খেলোয়াড় তৈরির জন্য, খেলাটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দরকার অর্থের। সেই অর্থের যোগান দেন একজন ক্রীড়াপ্রেমী সংগঠক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দাবা একটি অবহেলিত খেলা। আর সেই অবহেলিত খেলাটাকে বাঁচিয়ে রাখতে গুটিকয়েক দাবা অন্তঃপ্রাণ সংগঠক নীরবে-নিভৃতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাদেরই একজন মুশফিকুর রহমান মোহন। শুক্রবার বাংলাদেশের দাবায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য তাকে সংর্বধনা দিয়েছে দাবাড়ুদের সংগঠন ‘এ্যাসোসিয়েশন অব চেস প্লেয়ার্স বাংলাদেশ’ (এসিপিবি)। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে অবস্থিত বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনে আয়োজিত হয় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। গুণীজনদের সম্মান করলে নিজেরাই সম্মানিত হয়। মোহনকে বিশেষভাবে তৈরি একটি ক্রেস্ট দিয়ে এবং তার উদ্দেশে লিখিত মানপত্র পাঠ করে এবং সম্মানিত করে এসিপিবিই সেই সম্মান কুড়িয়ে নিল। মজার বিষয় হচ্ছেÑ এই অনুষ্ঠানে দাবা ফেডারেশনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা কেউই অনুষ্ঠানে হাজির হননি। এটাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন এসিপিবির যুগ্ম সম্পাদক আমীর আলী রানা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মোহনকে ফুলের তোড়া দিয়ে অর্ভ্যথনা জানাতে মঞ্চে ডাকা হয় বাংলাদেশের ‘দাবার রানী’ খ্যাত রানী হামিদকে। কিন্তু তিনি রানী হামিদ মঞ্চে যাননি। কারণ হিসেবে জানানো হয়, তিনি অসুস্থবোধ করছেন। পরে অনুসন্ধান করে জানা যায়, আয়োজকরা আগে ভাগে ফুলের তোড়া দিয়ে মোহনকে স্বাগত জানানোর বিষয়টি রানী হামিদকে জানাননি। তাছাড়া মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিদের তালিকাতেও রানী হামিদের নাম ছিল না। তাছাড়া ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর এসিপিবি আয়োজিত ‘র‌্যাপিড রেটিং দাবা টুর্নামেন্ট’-এ রানী হামিদ খেলবেন। খেলা শুরুর আগে মঞ্চে গেলে তার মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটবে, খেলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বেÑ মঞ্চে না যাওয়ার এটিও অন্যতম কারণ। সংর্বধনা দিয়ে সম্মানিত করার জন্য এসিপিবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মোহন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি নিজেও একসময় দাবাড়ু ছিলাম। কিন্তু নানা কারণে ক্যারিয়ারকে বিকশিত করতে পারিনি। সেই দুঃখ থেকেই দাবায় পৃষ্ঠপোষকতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ দাবা সংগঠক হিসেবে নিজের একটি কমিটমেন্টের কথাও জানান মোহন, ‘এসিপিবিকে অনুরোধ করব, তারা সারাদেশ থেকে প্রতিভাবান দাবাড়ুদের বিভিন্ন টুর্নামেন্টের মাধ্যমে বাছাই করবে। তারপর সেখান থেকে ৩০ জনকে বাছাই করে ছয়মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে। সেই ছয় জনকে আমি স্থায়ীভাবে স্পন্সর করব। শুধু তাই নয়, ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারী দাবাড়ুদের মধ্যে বাছাইকৃত সেরা ৬ জনকেও আমি নৌবাহিনী দাবা দলে চাকরিসহ নিয়ে নেব।’ অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও তার সঠিক বাস্তবায়ন। দেশে পর্যাপ্ত গ্র্যান্ডমাস্টার, আন্তর্জাতিক মাস্টার, ফিদেমাস্টার নেই। তাদের সংখ্যা বাড়াতে এসিপিবি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার প্রশংসা করেন মোহন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গোল্ডেন স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি ও এসিপিবির যুগ্ম সম্পাদক আমীর আলী রানা, গোল্ডেন স্পোর্টিং ক্লাবের সহ-সভাপতি ডাঃ লে. কর্নেল (অব) নুরুল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসিপিবির সভাপতি এনায়েত হোসেন এবং পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন এসিপিবির সাধারণ সম্পাদক আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল।
×