ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী প্রচারণা ও কিছু কথা

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

নির্বাচনী প্রচারণা ও কিছু কথা

দেশটা আফ্রিকার ঘন বনজঙ্গল নয় কিংবা সেই পাথরের যুগ নয়। গত কয়েক মাসে রাক্ষস মুল্লুকের রক্তপানে অভ্যস্ত আগুন দেবী নামে খ্যাত বেগম খালেদা জিয়া রাজ দরবারে বসে দেশের বারোটা বাজিয়েছেন। রাজনৈতিক অফিসে বসে মানুষ হত্যা করতে ফরমান জারি করেছেন। দোসর বাহিনীর আদেশ কার্যকর করেছেন। শতাধিক নিরীহ সাধারণ মানুষকে পেট্রোলবোমায় হত্যা করা হয়েছে। শরীরে আগুন নিয়ে দগ্ধ অবস্থায় অসংখ্য শিশু-নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। নিষ্ঠুর, নির্মম সেই দৃশ্য করুণ, অমানবিক, মানবতাবিরোধী। ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল শহরের সকল সড়ক রক্তের স্রোতে ভেসেছে। এখন তিনি নির্বচনী প্রচারে নেমেছেন বাস মার্কায় ভোট চাইতে। অতচ তিনি এই বাসেই আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারতে দ্বিধা বোধ করেননি। নির্বচনী প্রচারে তিনি থাকতে পারেন। কিন্তা তার অপরাধের বিচার হতে হবে। সত্য মানতে হবে। একদিন এই এদেমের জনগণ বিচার করবে এই আগুন দেবীর। জগণকেও সচেতন হবে। এই আগুনদেবীর লোকেরা যেন ভোট না পায়। তাই জনগনকে সবেচত হয়ে ভোট দিতে হবে। এম আলী শ্রীনগর। তিন সিটিবাসীর প্রতি ২৮ এপ্রিলের ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সরকার গঠনে বা সরকার পরিবর্তনে এই নির্বাচনের কোন ভূমিকা নেই তবুও সারাদেশে এই নির্বাচন যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। এর প্রধান কারণ অরাজনৈতিক নির্বাচন হলেও সকল রাজনৈতিক দল পরোক্ষভাবে এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। যারা এতদিন এই সরকারকে অবৈধ বলেছেন বা দেশে গণতন্ত্র নেই বলে চিৎকার করেছেন তাঁরাও এই নির্বাচনে অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গেই অংশ নিয়েছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসী অত্যন্ত চিন্তাভাবনা করেই এই নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে দেশবাসী আশা করে। গত কয়েক মাস আন্দোলনের নামে যারা সারাদেশে ককটেল আর পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে তারা কখনও জনগণের বন্ধু হতে পারে না। জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ আর ককটেল পেট্রলবোমা যারা মারে বা তাদের যারা সমর্থন করে এমন প্রার্থীকে ভোট দিলে দেশও জাতির ভীষণ ক্ষতি করা হবে। যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী নয়, যারা জঙ্গীবাদের সমর্থক তাদের ভোট দিলে সেই অপশক্তির হাত শক্তিশালী হবে। আমাদের এই বাংলাদেশকেও তারা ইরাক, সিরিয়া, মিসর, লিবিয়া বা পাকিস্তানের মতো অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করবে। তাই দেশবাসী আশা করছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসী এতবড় ভুল করবে না। ত্রিশ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদা তাঁরা তাঁদের ভোটের মাধ্যমে রক্ষা করবেন। আপনাদের কাছে দেশবাসীর আকুল আবেদন, যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করে, যারা জঙ্গীবাদ, মৌলবাদকে ঘৃণা করে, যারা ককটেল আর পেট্রলবোমার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় তাদেরই আপনারা ভোট দেবেন। এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আপনারা নিশ্চয়ই দেশপ্রেমের পরিচয় দেবেন। যাকে ভোট দিলে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদের হাত শক্তিশালী হবে তাকে অবশ্যই বর্জন করুন। বিল্পব, ফরিদপুর। নির্বাচনের আগে ও পরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এলাকাজুড়ে তাই সাজ সাজ রব। প্রার্থীদের চোখে ঘুম নেই। এলাকার এমন কোন অলিগলি রাস্তাঘাট নেই, যেখানে তাদের চরণযুগল না পড়ছে। ঘামসিক্ত শ্রমিককে বুকে জড়িয়ে ধরছে। বস্তির ওই কাদা-পানিসিক্ত মরুব্বির পা ছুয়ে সালাম করছে। ময়লা আবর্জনা মাখা শিশুকে কোলে তুলে নিচ্ছে। হাসি মাখা মুখে ছোট-বড় গরিব-দুঃখী কামার-কুমার রিকশাওয়ালা রাস্তার ফেরিওয়ালাসহ সবাইকে আপন করে নিচ্ছেÑ যেন তারা প্রার্থীর আত্মার-আত্মীয়। সাহায্যের দু’হাত উজাড় করে দিয়েছে। উড়বে। উনি নির্বাচিত হলে এলাকার আকাশে শান্তির পায়রা উড়বে। নিচে স্বর্গসুখের নহর বইবে। কবে বিদ্যুতের লোডশেডিং হয়েছে জনগণ তা ভুলেই যাবে। গ্যাসের প্রেসার বেড়ে যাবে। পানির টেপে মহাসাগরের ঢল নামাবে। যানজট কি সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলবে। রাস্তাঘাট সোনা না হয় রূপা দিয়ে বাঁধাই করা হবে। আহা কি সুখ আর আনন্দ। এলাকার মানুষ ভাবতেই পারছেন। তাইতো তারা আজ আনন্দে আত্মহারা। চিত্ত সুখের উল্লাসে চায়ের কাপে ঝড় তুলছে। অতপর নির্বাচন সম্পূর্ণ হলো। নির্বাচিত হলেন জন প্রতিনিধি হিসেবে। কিন্তু ভাবখানা তার ‘আমি কি হইনুরে’ তিনি এখন রাজা ধিরাজ। সেই অলিগলি আর রাস্তাঘাট তার চোখের বিষ। কারণ ওই সকল রাস্তাঘাট পচা দুর্গন্ধময়। বস্তি উচ্ছেদের ঘোষণা দেবে। কারণ সেই জায়গাটা তার বড় প্রয়োজন। সাধারণ জনগণ তার কাছে এখন উৎকট ঝামেলা। ওরা গরীবা গ্যাস বিদ্যুত পানিহীনতার অভিযোগে তিনি দারুণ ক্ষুব্ধ। এগুলো তার এখতিয়ার নয়। ভাঙ্গা রাস্তা, খানাখন্দক তাতে তার কিছু যায় আসে না। তিনি যে আশা ও উদ্দেশ্য নিয়ে নির্বাচন হয়েছেন তা তাকে বাস্তবায়ন করতেই হবে। কারণ সুযোগ বার বার আসে না। তাই তিনি কিছু চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজ দখলবাজ চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে পথ চলেন। এই এলাকার কেউ তাকে সালাম না দিলে হয়তো বেয়াদপি অপরাধে তার সাজাও হতে পারে। এই হচ্ছে নির্বাচনের আগে ও পরের চালচিত্র। মুহাম্মদ ওসমান গনী কেরানীগঞ্জ, ঢাকা। সম্পাদক সমীপে নিরাপদ খাদ্য পত্রিকাতে দেখলাম ঢাকা, ঠাকুরগাঁও ও বরগুনাতে শিশুসহ প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন স্থানের দূষিত পানি পান করে তাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মানুষের বেঁচে থাকার গুরুত্বপূর্ণ দু‘টি উপাদান হলো খাদ্য আর পানি। অনিরাপদ হয়ে গেলে মানুষের সুস্থ জীবন আশা করা যায় না। তাই যারা খাদ্য বিষয়ে নীতিনির্ধারণ করেন তাদের এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে দেরি করলে সামনের দিনগুলোতে ভয়াবহ অবস্থা দেখা দেবে। রাস্তাঘাটের পাশে যত্রতত্র খাবারের দোকান দেখা যায়। এসব খাবার নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষা করারও কেউ নেই। এসব খাবার রোগ জীবাণু বহন করে। যা খেলে এবং পানি পান করে ডায়রিয়া, আমাশয় পেটের বিভিন্ন পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। অনেক খাবারে বিষাক্ত রঙও ব্যবহার হয়ে থাকে। আগে জেলা, মহকুমা ও থানায় বিভিন্ন শহরে সেনিটারি ইন্সপেক্টর এসব খাদ্যদ্রব্য পরীক্ষা করতেন। বিশেষ করে তেল, ঘি, দুধ, চিনি, মাছ-মাংস ইত্যাদি। তাদের দেখে মানুষ ভয়ও করত। ইদানীং আর তাদের দেখতে পাওয়া যায় না। বিষাক্ত খাবার খেয়ে ও তার ক্ষতিকর যে কোন উপাদানে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগতে হয়। মহিলাদের গর্ভের শিশু থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রজন্মও এর থেকে রেহাই পায় না। এসব নিয়ন্তনের কেউ নেই বোধ হয়। অশোক কুমার সাহা কুমারখালী, কুষ্টিয়া। তিনি মানুষ হচ্ছেন! ওপরে উল্লিখিত উক্তিটি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষাবিদ, প্রাজ্ঞ কলামিস্ট, মানবতা ও গণতন্ত্রের কলমযোদ্ধা । গত ২৩ এপ্রিল দৈনিক জনকণ্ঠে উপ সম্পাদকীয় কলামে প্রকাশিত মুনতাসীর মামুনের ‘নির্বাচন কমিশন, বিএনপির দাবি ও গোলাপী রং’ শীর্ষক নিবন্ধে বর্তমান সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্বন্ধে অনেক ইতিবাচক দিক উল্লেখ করে শেষ লাইনটিতে তিনি শিরোনামের উক্তিটি করেছেন। শ্রদ্ধেয় মুনতাসীর মামুনের উক্তিটি যদি মানতে পারতাম তাহলে ৪৪ বছর পরেও স্বাধীন বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গর্ববোধ করতে পারতাম এই ভেবে যে, সত্যিই গণতন্ত্রের উত্তরণে চলছি। কিন্তু হায়রে অবুঝ মন একথা ভুলি কেমনে যে, কয়লা ধুলে যায় না ময়লা, কুকুরের লেজে ১০মণ ঘি মাখলেও সোজা হয় না, গাধাকে পেটালে মানুষ হয় না, রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা হয় না, যুদ্ধাপরাধী দেশপ্রেমী হয় না, স্বামী পরিত্যক্তা স্বামীপ্রেমী হয় না, পাকি বাঙালী হয় না, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে পাকি সেনানিবাসে স্বাচ্ছন্দে থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হওয়া যায় না (যদিও বর্তমানে কিছু মুক্তিযোদ্ধা (খল) তাকেও মুক্তিযোদ্ধা বানাতে চায়), ২০০১-২০০৬, ২০১৩, ২০১৫ সালের নরখাদক ডাইনি (নিজেকে যদিও তিনি রানী মনে করেন) গোলাপী শাড়ি পরে বর্তমানে ভোট চাওয়া, একি নিছক ছলনা নয় কি? শামছুল ইসলাম (সুমন) শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা। ক্রিকেটের সোনালি অধ্যায় বাংলার তরুণ ক্রিকেটাররা অনুকূল পরিবেশ পেলে যে কতবড় অসাধ্য সাধন করতে পারে তা সদ্যসমাপ্ত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে প্রমাণ করতে পেরেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিষয়টি আনন্দের ও গর্বের। বাংলাওয়াশের মাধ্যমে দেশটি চরমভাবে নাস্তানাবুদ করেছে পাকিস্তান দলকে। ১৯৯৯ সালের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের ধারায় এসে ওয়ানডেতে ৩-০-তে জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। একবারের বিশ্বকাপ বিজয়ী পাকিস্তান দলটির বিরুদ্ধে এর আগে এতবড় সাফল্য বাংলাদেশ পায়নি। কেননা দল সম্মিলিতভাবে সফল হয়েছে। শেষ ওয়ানডেতে সৌম্য সরকারের অসাধারণ সেঞ্চুরি প্রথম দুই ম্যাচে তামিম ইকবালের শতক ও শেষ ম্যাচে অর্ধশত এবং টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের অনবদ্য তিনটি ইনিংস দর্শকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ২য় ওয়ানডে ম্যাচটি প্রধানমন্ত্রী নিজে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন এবং বাংলাদেশ বিজয়ে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে ক্রিকেটারদের উৎসাহ যুগিয়েছেন। তরুণ ক্রিকেটাররা প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্মরণীয় করে রেখেছে। ১২ ওভার আগেই ক্রিকেটাররা প্রমাণ করেছেন তাঁদের আর ছোট করে দেখার উপায় নেই। আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয়টা অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য বেশি গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশকে এই বিজয়ের ধারা ধরে রাখতে হবে। নির্বাচক ও সংগঠকদের প্রতি আস্থা রাখাটাও প্রতিটি ক্রিকেটারের দায়িত্ব। মনে রাখতে হবে, অতীতে এদেশের ক্রিকেটার, সংগঠকরা নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে আইসিসি ট্রফি খেলতে গিয়েছেন। তাঁরা এই দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে নিবেদিত ছিলেন। তাঁদের স্বার্থ ছিল দেশের ক্রিকেটের ভিত মজবুত করা। সেটা তাঁরা করতে পেরেছেন। আজকে তরুণ ক্রিকেটারদের সেই সব ক্রিকেটারের অবদানকে মনে রাখা উচিত। দর্শক ও সমর্থকদের মনে রাখতে হবে ক্রিকেটে জয়-পরাজয় সব সময় ভাল খেলার ওপর নির্ভর করে না। অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট, তাই যে কোন ফলাফল মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ক্রিকেটারদেরও সব মতভেদ ভুলে সব সময়ের জন্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিয়মশৃঙ্খলা মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে খেলতে হবে। নানা সমস্যার এই দেশে ক্রিকেটের বিজয় মানুষকে দিতে পারে একরাশ আনন্দ, শান্তি ও স্বস্তি। জয় হোক আমাদের ক্রিকেটের। নাজনীন বেগম আসাদ এ্যাভিনিউ, ঢাকা।
×