ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জয়রথ চলবেই ॥ মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

জয়রথ চলবেই ॥ মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ একটা ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ দল। সফরকারী পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করার আনন্দে উৎসব করার সুযোগ নেই। কারণ এবার ভিন্ন ফরমেটের ম্যাচ যা খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ দলের বেশ কম। মাঝে একদিন বিরতির পরই আজ সিরিজের এক টি২০। এ ফরমেটে বাংলাদেশের তুলনায় বেশ অভিজ্ঞ পাক শিবির। পাক টি২০ অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিও নিজেদের ওয়ানডের চেয়ে শক্তিশালী দাবি করেছেন। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা সেটা স্বীকার করে নিলেও দাবি করেন ভাল করতে পারলে অভিজ্ঞতাও হার মেনে যায়। ওয়ানডে সিরিজে যে দাপটের সঙ্গে দল খেলেছে সেটা ধরে রাখতে পারলে পাকিস্তানকে টি২০ ক্রিকেটেও হারানোর ক্ষমতা রাখে দল এমনটাই আশাবাদ তার। এছাড়া তার দাবি টি২০ ক্রিকেটে ভাল করার জন্য যে ধরনের ব্যাটসম্যান প্রয়োজন সেটা বাংলাদেশ দলে আছে। সর্বশেষ গত বছর টি২০ বিশ্বকাপে খেলেছে টাইগাররা। এরপর আর টি২০ ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি দল। ঘরোয়া আসরেও টি২০ খেলার সুযোগ নেই ক্রিকেটারদের। সে কারণে এখনও ক্ষুদ্র ফরমেটের এ ক্রিকেটে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের চেয়ে অভিজ্ঞতায়ও সে কারণে বেশ পিছিয়ে দল। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের অনুশীলনের এবং খেলার যথেষ্ট অভাব আছে। আর এটাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে অনেক সময়। তবে আমি বলতে চাই অভিজ্ঞতা না থাকলেও টি২০ ফরমেটে তেমন সমস্যা হয় না। নির্দিষ্ট দিনে ভাল খেলতে পারলে অভিজ্ঞতাও কাজে আসে না। অভিজ্ঞতা থাকলেও ভাল করার কোন বিকল্প নেই।’ আহমেদ শেহজাদ, মোহাম্মদ হাফিজ, সোহেল তানভীর ও অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির সমন্বয়ে বেশ শক্তিশালী দল পাকরা। অভিজ্ঞতায়ও এগিয়ে তারা। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দল ফেবারিট থাকলেও টি২০ ম্যাচে সবাই এগিয়ে রাখছেন পাকিস্তানকেই। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘ওয়ানডে সিরিজের আগে আমরাই ফেবারিট ছিলাম। কিন্তু যদি সত্য কথা বলতে হয় তাহলে বলব এক টি২০ ম্যাচে আমরা দু’দলই শক্তিতে সমান। তবে আমরা ওয়ানডে যেভাবে খেলেছি সেভাবেই খেলতে সক্ষম হলে আমরাও জিততে পারি।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এখন আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। ওয়ানডে সিরিজে অনেক ব্যাটসম্যানকে নামতেই হয়নি টপঅর্ডারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের কারণে। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের জন্য আশার বিষয় হচ্ছে আমরা খুব ভাল খেলছি। যেভাবে দল ব্যাটিং করছে এবং বোলিং করছে অবশ্যই আমরা আত্মবিশ্বাসী।’ কিন্তু টি২০ কম খেলার কারণে সমস্যায় পড়ার কথা বাংলাদেশ দলের। এ বিষয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘দক্ষতার বিষয়ে কিন্তু সব ফরমেটে একই। টি২০ আমরা খেলিই না। ঘরোয়া আসরে খেললেও ৫০ ওভারের ম্যাচ কিংবা চারদিনের ম্যাচ খেলি। সে জন্য টি২০ ক্রিকেটের জন্য অনুশীলনের একটা ঘাটতি কিন্তু থাকেই। কিছুদিন আমরা যদি খেলতে পারি অবশ্যই একটা ভাল পর্যায়ে যেতে পারব। তবে সত্যি কথা বলতে কি আমরা এখনও খুব ভাল পর্যায়ে যেতে পারিনি এ ফরমেটে।’ বিশ্বের অনেক দলেই শুধু টি২০ খেলতে পারঙ্গম ক্রিকেটার থাকেন। বিশেষ করে টি০ ম্যাচই খেলেন তারা দলের জন্য। বাংলাদেশ দলে কী এমন কেউ আছে? মাশরাফির কণ্ঠে সে বিষয়ে দৃঢ়তা প্রকাশ পেল, ‘আমি মনে করি সাব্বির রুম্মান বিশ্বের অন্যতম একজন সেরা আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। সাকিবের মতো লেটঅর্ডারে একজন ভাল খেলোয়াড় আছে আমাদের যার ক্ষমতা আছে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার। টপঅর্ডারে সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল আছেন যারা টি২০ মেজাজের জন্য বেশ ভাল।’ দলের পেস আক্রমণের অন্যতম নির্ভরতা রুবেল হোসেন নেই টি২০ দলে। তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন দুই মুখ হিসেবে এসেছেন রনি তালুকদার ও লিটন দাস। সবমিলিয়ে আজ টি২০ ম্যাচের একাদশে বেশ পরিবর্তন আসবে। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘রুবেল যেহেতু নেই যে কেউ তার জায়গায় খেলতে পারে। সময় যত এগিয়ে আসবে ততই নতুনদের সুযোগ আসবে। আমাদের বিশ্বকাপ এগিয়ে আসছে এবং যথেষ্ট সময় আছে। আমি মনে করি এভাবে দুয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারলে আমাদের ভাল প্রস্তুতি হবে। সেক্ষেত্রে ভাল একটা টি২০ দল গড়ার ক্ষেত্রেও এসব কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’ সম্প্রতি বাংলাদেশ দল তিন পেসার, এক স্পিনার ও সাত ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলছে। টি২০ ম্যাচে কেমন করে একাদশ গড়বে বাংলাদেশ? এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘টি২০ খেলার জন্য ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বরে খেলার জন্য যেমন ব্যাটসম্যান প্রয়োজন আমাদের সেটা আছে। অধিকাংশ দলই টি২০ ম্যাচে ছয় ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলে। কাজেই ৭/৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলাটাকে আমার কাছে নেগেটিভ মনে হয়। তবে এখানে পরিবেশ-পরিস্থিতি ও উইকেট অনেক বড় বিষয়। সে সব বিবেচনা করেই শেষ মুহূর্তে কিভাবে সমন্বয় গড়া হবে তা চূড়ান্ত করা হবে।’
×