ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইসির সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন ॥ চলছে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ

প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তের প্রচারে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তের প্রচারে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আর মাত্র তিনদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহু কাক্সিক্ষত সিটি নির্বাচন। আইন অনুযায়ী প্রার্থীরা নির্বাচনের আগে মাত্র দুদিন প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন। আগামী রবিবার মধ্যরাত শেষ করতে হবে সব ধরনের প্রচার। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে ইসি। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শেষ মুহূর্তে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ চলছে। এছাড়া ভোটার ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, সীলমোহরসহ ভোটের সরঞ্জামও প্রস্তুত রেখেছে ইসি। ভোটের একদিন আগেই ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হবে। ভোটের আগের দিন থেকে ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারের ভোটারদের মন পেতে বাসাবাড়ি দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছুটে যাচ্ছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। একটিবার সুযোগ দেয়ার জন্য ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকার দক্ষিণের সাঈদ খোকন, মির্জা আব্বাসের পক্ষে আফরোজা আব্বাস, ঢাকা উত্তরে আনিসুল হক ও তাবিথ আউয়ালসহ অন্য মেয়র প্রার্থীর ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটেছেন। নির্বাচনী প্রচারে নেমে সাঈদ খোকন দাবী করেছেন ঢাকাবাসীর ভোটে আমার হক সবচেয়ে বেশি। ঢাকার সন্তান হিসেবে একবার সুযোগ দেয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি। অপরদিকে আফরোজা আব্বাসও থেমে নেই। স্বামীর পক্ষে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, কোন কিছুতেই আমরা নির্বাচনী মাঠ বয়কট করব না। মাঠে থাকব। সরকারের আচরণে আমরা ভীত নই। অপর দিকে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলেই আমি মেয়র হতে পারব না। তিনি আমাকে আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন করেছেন মাত্র। মেয়র হতে হলে আপনাদের ভোট দরকার। যদি ভাল লাগে তাহলে আপনারা আমাকে ভোট দেবেন। রায় পেলে আপনাদের মাঝে ফিরে আসব। অপর দিকে তাবিথ আউয়াল নির্বাচনী প্রচারের নেমে বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন ইসির কাছে প্রত্যাশা করছি। সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে ইসি দুই রকম আচরণ করছে উল্লেখ করেন। সাঈদ খোকন ॥ সাঈদ খোকন বৃহস্পতিবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে গিয়ে ভোট ও দোয়া প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি আইনজীবীদের কাছে গিয়ে নিজের প্রতীক ইলিশের লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করেন। বলেন, আমি ঢাকার সন্তান। ঢাকাবাসীর ভোটে আমার হক সবচেয়ে বেশি। আমি তাদের সন্তান হিসেবে ঢাকার উন্নয়নের সুযোগ দেয়ার জন্য সবার কাছে বিনীত প্রার্থনা করছি। নগর নিয়ে অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচিত হলে বাস্তবায়ন করব। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করব। সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে বলেন, এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এ সময় সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি আব্দুল বাসেত মজুমদারসহ সিনিয়র আইনজীবীরা তাকে স্বাগত জানান। সকালে চানখাঁরপুল ও আশপাশের এলাকায় প্রচার চালান সাঈদ খোকন। শেষ সময়ের প্রচারের সাঈদ খেকনের পাশাপাশি তার স্ত্রীকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার ফারহানা সাঈদ স্বামীর জন্য ভোট চাইতে সকালেই পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে চলে আসেন তিনি। ১০-১২ সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে পার্কে আসা দর্শনার্থীদের কাছে স্বামীর নির্বাচনী প্রতীক ‘ইলিশ’ এ ভোট চান তিনি। আফরোজা আব্বাস ॥ মির্জা আব্বাসের পক্ষে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোট প্রার্থনা করেন। সকাল ৯টায় রাজধানীর হলি ফ্যামিলি মেডিক্যাল কলেজ থেকে তিনি নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এ সময় তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কাছে মির্জা আব্বাসের জন্য ভোট চান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় প্রথমে তিনি যান উদয়ন স্কুল এ্যান্ড কলেজে। এরপর তিনি যান ফুলার রোডে শিক্ষকদের আবাসিক এলকায়। সেখানে তিনি শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ভোট চান। এরপর আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের কার্যালয়ে। তিনি উপাচার্যের কাছে ভোট চান। আব্বাসের পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার ও কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন। উপাচার্যের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে তিনি প্রশাসনিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছে ভোট চান। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে ভোট চান ও মির্জা আব্বাসের ছবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন। আনিসুল হক ॥ বৃহস্পতিবার ঢাকার কড়াইল বস্তি এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে উত্তরের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সমর্থন দিলেই পাস করা যাবে না। আপনাদের ভোটের দরকার আছে। এ সময় তিনি বস্তি এলাকার এরশাদ স্কুল মাঠে এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন। এর আগে রাজধানীর হাজী ক্যাম্প এলাকার মসজিদের ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাবিথ আউয়াল ॥ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মধ্য বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা, পূর্ব রামপুরা, গুলশান লিংক রোডের গুদারাঘাট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। এ সময় তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিজেই দুই রকম সিদ্ধান্তে দিয়েছে। এমন দুই রকমের সিদ্ধান্ত কাম্য নয়। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তাই ইসির কাছ থেকে প্রত্যাশা করছি।
×