ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নেইমার চমকে শেষ চারে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

নেইমার চমকে শেষ চারে বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বার্সিলোনা। মঙ্গলবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে কাতালানরা ২-০ গোলে পরাজিত করে ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনকে। ন্যুক্যাম্পে বার্সার হয়ে দুটি গোলই করেন নেইমার। এর ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলের জয় নিয়ে সেমির টিকেট পেয়েছে লুইস এনরিকের দল। প্রথম লেগের ম্যাচে পিএসজিকে তাদেরই মাঠে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল বার্সা। এবারসহ আট বছরে সপ্তমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠল স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। ২০১২-১৩ মৌসুমেও কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সিলোনার কাছে হেরে পিএসজির স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। এবারও একই কাটায় বিঁধতে হয়েছে ফরাসী চ্যাম্পিয়নদের। নিজেদের মাঠে শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে বার্সা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে বল নিয়ে দ্রুত পিএসজির বক্সে ঢুকেছিলের লুইস সুয়ারেজ। কিন্তু প্রথম লেগে দুই গোল করা এই উরুগুরুয়ে স্ট্রাইকারকে কর্নারের বিনিময়ে আটকে দেন ডেভিড লুইজ। তবে গোলের অপেক্ষা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বার্সিলোনার। ১৪ মিনিটে নেইমার গোল করে পিএসজির সম্ভাবনা নস্যাত করে দেন। নিজেদের অর্ধ থেকে অনেকটা একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বাড়ানো দারুণ পাসে নেইমার পা ছুঁইয়ে পিএসজির ইতালিয়ান গোলরক্ষক সালভাটোরে সিরিগুকে পরাস্ত করেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে দলে ফেরা সুইডিশ তারকা জøাতান ইব্রাহিমোভিচের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল না হলে পিএসজি হয়ত সমতায় ফিরতে পারত। এরপর সুয়ারেজের পাস থেকে লিওনেল মেসির প্রচেষ্টা দারুণভাবে রক্ষা করেন সিরিগু। আলভেস ও নেইমারকেও পরপর দুইবার হতাশ করেন পিএসজি গোলরক্ষক। কিন্তু ম্যাচের ৩৪ মিনিট আগে আর শেষ রক্ষা হয়নি। ফরাসী চ্যাম্পিয়নদের দুর্বল রক্ষণভাগকে কাজে লাগিয়ে আলভেসের দারুণ ক্রস থেকে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো নেইমার হেডের সাহয্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। চলমান মৌসুমে পিএসজির বিরুদ্ধে চার ম্যাচে এটি নেইমারের পঞ্চম গোল। বিরতির পর বার্সা কোচ লুইস এনরিকে ইনিয়েস্তা ও সার্জিও বসুকয়েটসের পরিবর্তে জাভি ও সার্জিও রবার্টোকে মাঠে নামান। শনিবার এস্পানিওলের বিরুদ্ধে কাতালান ডার্বির কথা মাথায় রেখেই খেলোয়াড়দের বিশ্রামে পাঠান এনরিকে। লরেন্ট ব্লাঙ্কের দল দ্বিতীয়ার্ধে গোছাল ফুটবল খেলেও গোল পায়নি। ৫৯ মিনিটে জেরার্ড পিকের ভুল পাস থেকে বল পান ইব্রাহিমোভিচ। সুইডিশ তারকার বাড়ানো বলে মার্কো ভেরাট্টি শট নিলেও তা লক্ষ্যে থাকেনি। ম্যাচে দু’দলের দুই গোলমেশিন মেসি ও ইব্রাহিমোভিচ গোলের দেখা পাননি। ৭৩ মিনিটে ইব্রাহিমোভিচের শট রুখে দেন বার্সিলোনা গোলরক্ষক। এরপর পরই ফিরতি আক্রমণে যাওয়া মেসিকে বক্সের আগেই আটকে দেন অতিথি দলের ডিফেন্ডার লুইজ। ৭৯ মিনিটে উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড এডিনসন কাভানির শট বাইরের জালে জড়ালে হতাশ হতে হয় অতিথিদের। শেষদিকে ইজিকুয়েল লাভেজ্জির শটও সরাসরি গোলরক্ষকের হাতে জমা হয়। শেষ পর্যন্ত তাই হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় পিএসজিকে। ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, এবারের মৌসুমে নিজের পারফর্মেন্স নিয়ে আমি দারুণ খুশি। নিজেদের লক্ষ্য পূরণে আমরা যেভাবে দৃঢ় অবস্থানে আছি তাতে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ফাইনালে ওঠাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। আমার প্রথম গোলের সব কৃতিত্ব ইনিয়েস্তার। আমি শুধু গোলরক্ষকে পাশ কাটিয়ে বল জালে জড়িয়েছি। একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে সেমিফাইনালে ওঠায় এবার বার্সার ঘরেই শিরোপা দেখছেন অনেকে। কিন্তু দলটির কোচ এনরিকে সেটা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, শিরোপার জন্য আমরা চার ফেবারিটের একটি। আমরা খুব ভাল ফর্মে আছি। খেলোয়াড়রা মনোযোগ ধরে রাখতে পারায় খুশি এনরিকে বলেন, খেলোয়াড়রা ঠিকঠাক বুঝতে পেরেছে এই ম্যাচের চাহিদা কী। দারুণ খেলা মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা বলেন, এটা সহজ ম্যাচ ছিল না। কিন্তু আমরা ভালভাবে সাড়া দিয়েছি।
×