ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গার্মেন্টসকর্মী শাহিদা হত্যা মামলার রায়

সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ২২ এপ্রিল ॥ বাংলাদেশের প্রথম সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছে চাঁদপুরের একটি আদালত। একে একে ১১জন নারীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত রসুর বিরুদ্ধে এটা প্রথম রায়। টঙ্গীর গার্মেন্টস কর্মী শাহিদা হত্যা মামলার রায়ে বুধবার দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুণাভ চক্রবর্তী এ দ-াদেশ প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি এ্যাডভোকেট সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু। আর রসু খাঁর পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন এ্যাডভোকেট নাঈমুল ইসলাম। চাঁদপুরের মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খান ভালবাসায় পরাস্ত হয়ে এক সময় সিরিয়াল কিলারে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর পুলিশের হাতে মসজিদের মাইক চুরির মামলায় ধরা পড়ার পর তার লোমহর্ষক হত্যাকা-ের চিত্র বেরিয়ে আসে। নিজের মুখে স্বীকার করে ১১ নারীকে হত্যার কথা। টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকা- ঘটানোর। কিন্তু চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার সেই আশা গুড়েবালিতে পরিণত হয়। রসু যাদের হত্যা করেছে তাদের প্রায় সব নারীই ছিল গার্মেন্টস কর্মী। রসু ভালবাসার অভিনয় করে নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েদের ঢাকার সাভার ও টঙ্গি এলাকা থেকে চাঁদপুরে এনে প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। তার স্বীকারোক্তিতে ওইসব হতভাগ্য মেয়েদের অধিকাংশেরই সঠিক নাম ঠিকানা বা পরিচয় আজও জানা যায়নি। রসুকে গ্রেফতারের পর চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ থানায় মোট ১০টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ৯টি হত্যা ও অপরগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে। রসু খাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো বিচারের জন্য চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে একটি মামলার রায়ে রসু খাঁ বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। এ অবস্থায় তার বাদবাকি মামলাগুলো চাঁদপুর আদালতে পুনরায় ফেরত পাঠিয়ে দেয় ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১টি এবং অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে ৮টি মামলার বিচার চলছে। রসু খাঁন বর্তমানে চাঁদপুর জেলা কারাগারে রয়েছে। রায় ঘোষণার সময় সকালে তাকে আদালতে আনা হয়। সে সেখানে স্বাভাবিক আচরণ করছে। এ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় একজনের ফাঁসি ও দু’জনের যাবজ্জীবন ॥ স্টাফ রিপোর্টার রংপুর থেকে জানান, রংপুরে মাসুদা আখতার মণি নামের ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে এ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবককে ফাঁসি এবং আলাল ও দুলাল নামের দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায় দিয়েছেন বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ। বুধবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে বিজ্ঞ বিচারক মঞ্জুরুল বাছিদ তার আদালতে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে তিনি আলাল ও দুলালকে মণির ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লাখ করে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, নগরীর বাবু খাঁ এলাকার মৃত মাহবুল ইসলামের মেয়ে মণিকে স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায়ই প্রেম প্রস্তাব দিত একই এলাকার আরিফুল ইসলাম ও আলাল ও দুলালসহ কয়েক বখাটে যুবক। কিন্তু মণি রাজি না হওয়ায় ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট রাতে আসামিরা যোগসাজস করে মণির বাসায় গিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে ঘরের জানালা দিয়ে এ্যাসিড নিক্ষেপ করে। তাজ হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি ॥ স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, বাগেরহাটে টাকা ও মোবাইল ফোনের লোভে খালাত ভাইকে হত্যা ও গুম করার অপরাধে অপর খালাতো ভাইসহ ৫ জনকে মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছে আদালত। বাগেরহাট সদরের পাটরপাড়া গ্রামে তাজ হোসেন মীর ওরফে তাজকে (২৫) হত্যা ও গুমের অপরাধে মঙ্গলবার শেষ বিকেলে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মোহাম্মদ মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা সকলে আদালতে উপস্থিত ছিল। দ-প্রাপ্তরা হলো- বাগেরহাট সদর উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামের মৃত শাহাদাত মীরের ছেলে রিন্টু মীর (২৩), সুন্দরঘোনা গ্রামের তোফাজ্জেল চৌধুরীর ছেলে ফয়েজুল চৌধুরী (২০), ফকির জিয়া উদ্দিন জিয়া (২৮), মান্নান মীর (৫২), আলফাজ হোসেন রুবেল (২৮)। এ মামলায় নুর মোহাম্মদ শেখের ছেলে সহিদ শেখকে (৩৪) আদালত খালাস দিয়েছে।
×