ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইজিপিকে গবর্নরের চিঠি ॥ তদন্ত কমিটি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন মানে না অনেক ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন মানে না অনেক ব্যাংক

রহিম শেখ ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা সত্ত্বেও ব্যাংকের শাখায় কাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না সরকারী-বেসরকারী অধিকাংশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকের সুরঙ্গ কেটে ভল্ট ভেঙ্গে এবং শাখার অভ্যন্তরে টাকা লুটের ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বেসরকারী খাতের কমার্স ব্যাংকের আশুলিয়ার কাঠগড়া শাখায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই শাখার ব্যবস্থাপকসহ আটজন নিহত হন। ধারণা করা হচ্ছে ব্যাংকের অভ্যন্তরে সিসি টিভি সচল থাকলেও ব্যাংকের চার পাশে বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা ছিল না। যদিও এমন নির্দেশনা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের। ব্যাংকের ভল্টে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত টাকা কিংবা এমন সংবাদ ডাকাত দল জানত কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংকিং খাতে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া দেশে কার্যরত সকল ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে সারাদেশে ব্যাংকের শাখাগুলোতে পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে একের পর এক ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা। অভিনব কায়দায় ব্যাংকে চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। হারিয়ে গেছে ব্যাংকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। অধিকাংশ ঘটনাই ঘটেছে সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে। এর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, জয়পুরহাট ও বগুড়ার ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা। এসব ঘটনার পর ডাকাতরা গ্রেফতার হলেও রোধ করা যায়নি ব্যাংক ডাকাতি। গত বছরের ২৬ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ শহরের রথখোলা এলাকায় সোনালী ব্যাংকের অফিসে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা চুরি হয়। দুদিনের মাথায় এ ঘটনার মূল হোতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। চুরি হওয়া ১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪ টাকাও তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর পরই ব্যাংকের ভল্টের নিরাপত্তার বিষয়টি আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করতে দেশের সব ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তা সত্ত্বেও একই বছরের মার্চে বগুড়ার আদমদীঘিতে একইভাবে সুড়ঙ্গ কেটে লুট হয় রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকটির ৩০ লাখ টাকা। চাঞ্চল্যকর আরেকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে জয়পুরহাটে। ২৭ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাট শহরের ব্যস্ততম প্রধান সড়কের শাহজাহান ম্যানসনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংকের একটি শাখা থেকে লুট হয় ২ কোটি টাকা। এরপর গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সোনালী ব্যাংকের জানালার গ্রিল কেটে ডাকাতির চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু ভল্ট ভাঙ্গতে না পারায় ফিরে যায় ডাকাতরা। এ ঘটনার মাত্র চারদিন আগে রাজশাহীতে সোনালী ব্যাংকের কোর্ট শাখায় সুড়ঙ্গ কেটে ডাকাতির চেষ্টার সময় এক পথচারী দেখে ফেলায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে পাঁচ ডাকাত। ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের জয়দেবপুরে জনতা ব্যাংকের কর্পোরেট শাখা থেকে ৬০ লাখ টাকা লুটে নেয় এক দুর্বৃত্ত। একই দিন জনতা ব্যাংকের শ্যামপুর শাখার সিঁড়িতে এক ব্যবসায়ীর ব্যাগভর্তি ১৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। এর আগে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে কমপক্ষে ১৪টি ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের চেক, ডিডি, এফডিআর ডকুমেন্ট, এসডিআর, এমটিডিআর, পে-অর্ডার, আমদানি-রফতানির এলসি ডকুমেন্টের মতো গ্রাহকদের গুরুত্বপূর্ণ কয়েক শ’ নথি চুরি হয়ে যায়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার দুপুর প্রায় দুইটার দিকে ৩-৪টি মোটরসাইকেলযোগে ১০-১২ জনের সশস্ত্র ডাকাত দলটি গ্রাহকবেশে ব্যাংকে প্রবেশ করেই ম্যানেজারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গুলি ও বোমাবর্ষণ শুরু করে। এতে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তা রক্ষী, দোকানী, এলাকাবাসী, গণপিটুনিতে এক ডাকাতসহ ৮ জন নিহত এবং অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, ব্যাংকিং খাতের সব ঘটনাকে হার মানিয়েছে আশুলিয়ার কাঠগড়ায় কমার্স ব্যাংকের ঘটনাটি। সবচেয়ে বড় দুঃখজনক ঘটনাটি হচ্ছে এতে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তা প্রহরী, একজন গ্রাহক ও গ্রামবাসীসহ ৮ জন মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে ব্যাংকের ভিতরে সিসি টিভি সচল থাকলেও ব্যাংকের চার পাশে বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা ছিল না। ব্যাংকের অভ্যন্তরে ডাকাতদল প্রবেশ করার পরপরই হয়ত সিসি টিভি ক্যামেরা নষ্ট করা হয়েছে। ব্যাংকের ভল্টের চাবি এবং নিরাপত্তা বলয় নষ্ট করতে বাধা দেয়ায় শাখা ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তা প্রহরী এবং একজন গ্রাহককে গুলি করা হতে পারে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি হয়ত জানা যাবে। তবে তিনি বলেন, ব্যাংকের ভল্টে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত টাকা ছিল কিনা এবং সেই খবর ডাকাতদল আগে থেকে জানত কিনা সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র জানায়, ব্যাংকিং খাতে চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে গত বছরের ১৭ নবেম্বর একটি সার্কুলার জারি করে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যাংক ওইসব নির্দেশনা কার্যকর করেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকের প্রতিটি শাখার চার পাশে বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা বসাতে হবে। অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে ব্যাংকের শাখার প্রবেশ পথে, ভেতরে এবং শাখার বাইরের চারদিকে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি টিভি (ক্লোজ সার্কিট টিভি), আইপি ক্যামেরা (ইন্টারনেট প্রটোকল ক্যামেরা) স্পাই ক্যামেরা (গোপন ক্যামেরা) এবং ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার (ডিভিআর) স্থাপন করতে হবে। এসব ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি সংরক্ষণ ও পর্যালোচনা করে ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে সারাক্ষণ তদারকি করা হবে শাখার সব কার্যক্রম। শাখাকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোনক্রমেই এসব ক্যামেরার কার্যক্রম বন্ধ না থাকে, আইপি এবং স্পাই ক্যামেরার কোথায় স্থাপন করা হয়েছে সে তথ্য যাতে কেউ না জানে। এসব ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি রেকর্ড করে রাখা হবে। যাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এগুলো দেখে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ পদক্ষেপের ফলে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যাবে। তারপরও নিরাপত্তা ও গ্রাহকদের আস্থা ধরে রাখতে এসব ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, ব্যাংকগুলোর ভল্টের নিরাপত্তা রক্ষায় দেয়া নির্দেশনা তারা যথাযথভাবে পরিপালন করেনি। ফলে ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস করে রক্ষিত অর্থ চুরি বা ডাকাতি হচ্ছে। এর আগে ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে আরও কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, ব্যাংকের ভল্টের স্থান সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে ইস্পাত বেষ্টনী নির্মাণসহ সিকিউরিটি টেস্টেড দরজা স্থাপন করতে হবে। ভল্টের মেঝে ও ছাদসহ চার পাশে নির্মিত দেয়ালের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি পুরপ্রকৌশল বিভাগের সত্যায়িত হতে হবে। ভল্টে রক্ষিত সব টাকার নিরাপত্তার জন্য করতে হবে বীমা। ভল্টের ভেতরে সিকিউরিটি এলার্মের সর্বক্ষণিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাতে ভল্টে কোন দুর্ঘটনা ঘটলেই এলার্ম বেজে ওঠে। ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে ব্যাংকগুলোর কেন্দ্রীয় তথ্য ব্যবস্থাপনার নিরবচ্ছিন্ন সংযোগের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সব ভল্টের ভেতরে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলাজনিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীদের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া আছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এদিকে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তারা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়েও পাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, ব্যাংকগুলো এসব কাজ ঠিকভাবে করছে না। যে কারণে বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। এখন থেকে তদন্ত করে যেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ না মানার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের জরিমানার মুখোমুখি করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজধানী ও বড় বড় শহরের শাখাগুলোয় নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও পুরোপুরি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। এছাড়া মফস্বলের শাখাগুলোর নিরাপত্তা আগের মতোই আছে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শাখার নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখাগুলোতে পরিদর্শন চালানোর জন্য ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায় থেকে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর আলোকে বুধবার থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক জরুরীভিত্তিতে পরিদর্শনে নামে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র ম. মাহফুজুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, সরকার মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সারাদেশেই দুর্বল। কিন্তু বেসরকারী ব্যাংকের শক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে ডাকাতির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে আমরা একাধিকবার নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু তারপরও দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্যাংকের নিরাপত্তা নিয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি জানান। ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার জনকণ্ঠকে বলেন, সব ব্যাংকের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা তো রয়েছে। আমরা এবিবির পক্ষ থেকে একাধিকবার ব্যাংকগুলোকে ই-মেইলে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আরও জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু তারপরও সরকারী ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারী ব্যাংকে দুর্ঘটনা ঘটছে। ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত গঠন ॥ কমার্স ব্যাংকের দুর্ধর্ষ ডাকাতিক ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত গঠন করা হয়েছে। বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে তদন্ত কমিটি। খুব দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আইজিপিকে চিঠি ॥ দেশে কার্যরত সকল ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। বুধবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান ডেপুটি গবর্নর এসকে সুর চৌধুরী। ড. আতিউর রহমান স্বাক্ষরিত আইজিপি একেএম শহীদুল হকের কাছে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, আশুলিয়ার হাজী নজুমদ্দিন মার্কেটে অবস্থিত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শাখায় প্রকাশ্য দিবালোকে এক দল ডাকাত ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ ৩ কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনা প্রতিরোধ করতে গিয়ে মারা গেছে আরও ৪ জন সাধারণ মানুষ। একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ব্যাংকিং খাতের জন্য হুমকিস্বরূপ। এতে ব্যাংকিং খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। নিহতদের পরিবারকে লাখ টাকা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ॥ সাভারের আশুলিয়ায় কমার্স ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে কমার্স ব্যাংক বরাবর আরও একটি চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো যায় সে লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাড়ানো যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×