ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাহাজ নির্মাণ শিল্পে চেক উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আগ্রহ

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

জাহাজ নির্মাণ শিল্পে চেক উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আগ্রহ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ রিসাইক্লিং শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চেক প্রজাতন্ত্রের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তারা। এছাড়া তারা বাংলাদেশে জ্বালানি, স্টিল, অবকাঠামো, তেল ও গ্যাস, কয়লা উত্তোলন, পেট্রো-কেমিক্যাল, ইউরিয়া সার উৎপাদন শিল্পে বিশ্বমানের প্রযুক্তি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশে সম্প্রতি দায়িত্বে নিযুক্ত চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত মিলোসøাভ স্টেসেকের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বুধবার বিকেলে শিল্প মন্ত্রণালয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠককালে এ আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি, শিল্প খাতে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও অন্য ইস্যু আলোচনায় স্থান পায়। বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার উদার বিনিয়োগ ও শিল্পনীতি অনুসরণ করছে। এ নীতির সুযোগ নিয়ে চেক প্রজাতন্ত্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে সরাসরি অথবা যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে।’ তিনি বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ, জ্বালানি সাশ্রয়ী ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণ ও রাষ্ট্রায়ত্ত চিনি কলগুলোর আধুনিকায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিতে প্রতিনিধিদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। চেক প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ থেকে অধিক হারে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, তৈরি পোশাক ও কৃষিজাত পণ্য আমদানি করতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার শিল্প খাতে বিদেশী বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। ইতোমধ্যে চীন, জাপান ও ভারতের জন্য সরকার অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রের বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসলে সরকার তাদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। চেক রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘৬ শতাংশেরও বেশি ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে বৈদেশিক বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিণত করেছে। দেশের প্রায় ১৬ কোটি জনসংখ্যা এ সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’ বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ ফরহাদ উদ্দিন, বাংলাদেশে চেক প্রজাতন্ত্রের অনারারি কনসাল এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, চেক প্রজাতন্ত্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। এফবিসিসিআই ভবনে বুধবার দুপুরে চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত মাইলোসøাভ স্টেসেকের নেতৃত্বে এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশে চেক প্রজাতন্ত্রের বিনিয়োগের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘১৯৯৩ সাল থেকে দেশটির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বাংলাদেশে তাদের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে।’ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে কাজী আকরাম বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে আমাদের ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন দরকার। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চেক প্রজাতন্ত্রের কয়লা ও পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদনে সহায়তা প্রয়োজন।’ এ সময় কাজী আকরাম উদ্দিন শিল্পের অবকাঠামো উন্নয়নে দেশটির প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়ার আশাপ্রকাশ করেন। সভায় এফবিসিসিআইর প্রথম সহসভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, চেক প্রজাতন্ত্রের অনারারি কনসাল এএসএম মহিউদ্দিন মোনেমসহ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও এফবিসিসিআইর পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। ১৪ সদস্যের বাণিজ্যিক মিশনের এক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছেন। ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রকল্প দেখবেন।
×