ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন

তিন সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করবে। ২৬ এপ্রিল থেকে নির্বাচনের পরদিন ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত তিন সিটিতে তিন ব্যাটালিয়ন সেনা দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনী মাঠের পরিস্থিতি ভাল থাকার পরও নির্বাচন নিয়ে জনমনে যাতে কোন ভীতি কাজ না করে, সে কারণ দেখিয়ে কমিশন সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। এই প্রথম সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পদক্ষেপ নেয়া হলো। এর আগে অনুষ্ঠিত নয়টি সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন হয়নি। তা সত্ত্বেও ওইসব স্থানে অবাধ, সুষ্ঠূু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ। র‌্যাব, পুলিশ এবং বিজিবি মোতায়েন করে আগের নয়টির নির্বাচনের মতো এই তিনটিও সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি রেখেছে সেনা সহায়তা ছাড়াই। গোড়াতে অবশ্য কমিশন বলেছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল রয়েছে, সুতরাং সেনা মোতায়েন প্রয়োজন পড়বে না। তারপরও কমিশন এই নির্বাচনে সেনা বহাল করছেন। কমিশন মনে করছে, বর্তমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ঝড়ের আগের থমথমে অবস্থা হতে পারে- বিগত তিনমাস ধরে যারা নাশকতা, সহিংসতা, পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে, বাস পুড়িয়েছে- সেসব সন্ত্রাসী জঙ্গীর বড় অংশই বাইরে রয়ে গেছে। জঙ্গীপনার নতুন কৌশল বিএনপি-জামায়াত জোট যে নির্বাচনকে সামনে রেখে চালাতে পারে হয়ত তেমন তথ্য রয়েছে, তাই নিরাপত্তার স্বার্থে ও ঝুঁকি এড়াতে এই ব্যবস্থা হতে পারে। সরকারী দলের নেতারা অবশ্য বলছিলেন, নারায়ণগঞ্জ হতে কুমিল্লা পর্যন্ত কোন সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন পড়েনি। সুতরাং এখন তার প্রয়োজন পড়বে না। কমিশন এখন কেন তা করতে চায় সে প্রশ্ন উঠে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিল, কিন্তু সেই নির্বাচন কমিশন রাজি হয়নি। এবার বিএনপি-জামায়াত জোট সেনা মোতায়েনের জন্য কমিশনের কাছে দাবি জানায়। তারা বলে, ভোটের দিন সেনা মোতায়েন করা হলে বোঝা যাবে তারা সঠিকভাবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করছেন। সব কেন্দ্রে সেনা চেয়েছে বিএনপি জোট। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বর্তমানে স্বাধীন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। নিজস্ব বিবেচনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য তারা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেবেন সেটাই স্বাভাবিক। তারা ২৮ এপ্রিল জঙ্গী ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে নিরাপদে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়া ও ভোটদানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন- ভোটারদের সেটাই প্রত্যাশা।
×