ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়া সারাদেশে আজ বিএনপির হরতাল

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২২ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়া সারাদেশে আজ বিএনপির হরতাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ার সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে আজ বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাড়া সারাদেশে হরতাল পালন করবে বিএনপি। একই কারণে মঙ্গলবার ছিল দলটির বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচী। সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার স্বার্থে আজ বুধবার থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। রাজধানীতে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর বাদে সারাদেশে হরতাল পালনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ এমন প্রশ্নও করছেনÑ ঘটনা ঘটল ঢাকায় আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে ঢাকার বাইরের মানুষের। ঢাকার মানুষ কি অপরাধ করলেন যে তাদের একটি হরতালের মুখোমুখি হতে হলো। কেউ কেউ খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দূরদুর্শতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে নির্বাচন থাকায় হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। আজ থেকে সেনা মোতায়েনের দাবি রিপনের ॥ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার স্বার্থে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে আজ বুধবার থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। নির্বাচনের পরও যাতে ৫ দিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকে তাও নির্বাচন কমিশনকে ভেবে দেখার আহ্বান করেছেন তিনি। মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলের পক্ষে এ অবস্থান তুলে ধরেন। রিপন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। তাই তাদের বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় নামানো হলে যে ভীতিকর পরিস্থিতি রয়েছে তা আর থাকবে না। তিনি বলেন, সরকারের কাছে সার্ভে আছে তাদের প্রার্থীদের জয়ের কোন সম্ভাবনা নেই। আর এ জন্যই তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, ভাংচুর ও হুমকি চালিয়ে যাচ্ছে। তারা চায় বিএনপিবিহীন নির্বাচন। খালেদাকে হত্যাই ছিল হামলার উদ্দেশ্যÑ এমাজউদ্দীন ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হত্যাই ছিল তার গাড়িবহরে হামলার উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ করেছেন আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি সরকারপ্রধান ও মন্ত্রীদের উসকানিমূলক বক্তব্যেই খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর তার গাড়িবহরে হামলা করে উল্টো মামলার ঘটনা হাস্যকর। মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এমাজউদ্দীন বলেন, গাড়ির যে অংশে খালেদা জিয়া বসা ছিলেন, সেদিকেই তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি করা হয়েছে। কিন্তু গাড়িটি বুলেট প্রুফ হওয়ায় ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। খালেদা জিয়া অক্ষত থাকলেও ইটের আঘাতে তার গাড়ির এক পাশের কাচ ফেটে যায়। বহরের গাড়িগুলো ঘুরে এফডিসির দিকে এগোতে গেলে এক দল লোক লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তিনি বলেন, নির্বাচনের আট দিন আগে এ ধরনের হামলার ঘটনা সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করবে। আমি মনে করি, এই ঘটনার পর সরকার পক্ষ থেকে দুঃখবোধ হওয়া উচিত ছিল। তা না করে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করতে ক্ষমতাসীনরা উল্টো মামলা করেছে। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলায় সরকার সমর্থকরা জড়িত ছিল অভিযোগ করে এমাজউদ্দীন বলেন, পত্র-পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ছাত্রলীগের আল আমিন হামলা করেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী এই হামলাকে নাটক বলে অভিহিত করেছেন। এটা দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে সক্রিয় হতে হবে। তা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। সংবাদ সম্মেলনে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ বিএনপি চেয়ারপার্সনের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নির্বিঘœ করতে সেনা মোতায়েন এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানোর দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, সংগঠনের নেতা আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ।
×