ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খোশমেজাজে টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২১ এপ্রিল ২০১৫

খোশমেজাজে টাইগাররা

মিথুন আশরাফ ॥ একেকজন একেকদিকে ছুটছেন। টিম হোটেল থেকে বের হয়ে কেউ যাচ্ছেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। কেউ যাচ্ছেন বাইরে ঘুরতে। সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা এমন খোশ মেজাজেই ছিলেন। আর পাকিস্তান ক্রিকেটাররা কী করেছেন? খোশ মেজাজ দূরে থাক, তাদের হাস্যোজ্জ্বল মুখই উধাও হয়ে গেছে। সবাই সকালে অনুশীলন করতে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হাজির! কঠোর পরিশ্রমও করেছেন। যে করেই হোক সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে যে জিততেই হবে। হারলেই যে বাংলাদেশ টানা তিন ম্যাচে জেতে যাবে। পাকিস্তান হবে বাংলাওয়াশ। খোশমেজাজে দিনভর থাকার পরও বিকেলে ঠিকই বাংলাদেশ দলের কয়েক ক্রিকেটার মিরপুরে এসে অনুশীলন করেন। ছয় ক্রিকেটার অনুশীলন করেছেন। সৌম্য সরকার, রনি তালুকদার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুমিনুল হক, আবুল হাসান রাজু ও সাব্বির রহমান রুম্মন। মাশরাফি বিন মর্তুজাও এসেছিলেন। তবে বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে কথা বলেন শুধু। অনুশীলন করেননি। তামিম টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। মুশফিকুর রহীম এক ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৫ রান করেছেন। আরাফাত সানি ভাল বোলিং করছেন। সাকিব আল হাসান তো দলের সেরা তারকা ক্রিকেটারই। রুবেল এখন বর্তমান সময়ের সেরা ‘ক্রেজ’। নাসির হোসেনও দুর্দান্ত খেলছেন। এ ক্রিকেটারদের সঙ্গে তরুণ তাসকিন আহমেদও অনুশীলনে আসেননি। আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, দলের অনুশীলন নেই। এরপরও ঠিকই যারা রানে নেই, তারা ঠিকই অনুশীলন করেছেন। ট্রেইনার মারিও ভিলাবারায়েনকে তো অনেকক্ষণ রনি তালুকদারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেল। তাহলে কী তৃতীয় ওয়ানডেতে রনি তালুকদারের অভিষেক হতে যাচ্ছে? এমন কথাও উঠল। এর মধ্যে সকালেই হোটেলে আরাফাত সানি এমন এক কথাই বললেন, যা ক্রিকেটারদের আরও অনুপ্রাণিত করে তুলল। আরাফাত বললেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) অনেক ব্যস্ততার মধ্যে থাকেন। তারপরও খেলা দেখতে এসেছেন। এটা খুব ভাল লাগে।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘আমরা জাতি হিসেবেই ক্রিকেটের প্রতি খুব আবেগী। রবিবার ম্যাচ জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। ভবিষ্যত ক্রিকেটারদের জন্য এটি দারুণ প্রেরণাদায়ক হবে।’ আর পাকিস্তানকে যে এত সহজে সিরিজে হারিয়ে দেবে বাংলাদেশ, তা ভাবেননি আরাফাত। বললেন, ‘এত সহজে পাকিস্তানকে এভাবে হারাব ভাবিনি। তবে পরিকল্পনা ছিল দলবদ্ধ হয়ে ভাল ক্রিকেট খেলার। আমরা জানতাম যে ভাল ক্রিকেট খেললে ওদের হারাতে পারব। ভাল ক্রিকেট খেললে যে কোন দলের বিপক্ষেই এমন ফল সম্ভব। পাকিস্তানকে হারাতে পারায় আমরা বিস্মিত হইনি।’ শুধু আরাফাত নন, এবার এমন হয়েছে পাকিস্তানকে যে বাংলাদেশ সিরিজে হারাবে তা যেন আগেই সবাই ধরে নিয়েছিল। তাই তো যে পাকিস্তানকে ১৬ বছরে হারানো যায়নি, তাদের তিনদিনের মধ্যে একটানা ২ ম্যাচে হারানোর পরও সেইরকম উল্লাস দেখা যাচ্ছে না। হয়ত তৃতীয় ম্যাচে হারানোর অপেক্ষায় সবাই আছে। শেষ ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাতে পারলে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জেতার সঙ্গে হোয়াইটওয়াশ করার গৌরবও অর্জন করবে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে এরআগে ভিন্ন ভিন্ন দলের বিপক্ষে যে ৯ বার এ কৃতিত্ব গড়েছে বাংলাদেশ, তা ১০ বারে পরিণত হবে। এর আগে জিম্বাবুইয়েকে ২, কেনিয়াকে ২, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডকে ১, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১ ও নিউজিল্যান্ডকে ২ বার বাংলাওয়াশ করে বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তানকে হারালেই আরেকটি বাংলাওয়াশের কৃতিত্ব গড়বে টাইগাররা। সেই ভাবনাতেই এখন মশগুল পুরো জাতি। অপেক্ষা করছে কখন বুধবার দিনটি আসবে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১১ ক্রিকেটার খেলে জয় এনে দেবেন, ১৬ কোটি প্রাণ জেগে উঠবে আবার। পাকিস্তানকে পরপর দুই ওয়ানডেতে ৭৯ ও ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারানোর পরও যে আনন্দ এখনও লুকিয়ে আছে, তা সবাই করতে অধীরভাবে অপেক্ষা করছে। আর তো মাঝখানে একদিন। দুইদিন বিরতি পাওয়ায় তাই ক্রিকেটাররা সোমবার একটু খোশমেজাজেই ছিলেন।
×