ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ভারতে রফতানি অনুমোদন মন্ত্রিসভায়

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২১ এপ্রিল ২০১৫

ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ভারতে রফতানি অনুমোদন মন্ত্রিসভায়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভারতে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রফতানি বিষয়ে একটি চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ চুক্তিটির অনুমোদন দেয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর পূর্বাচলে ও কক্সবাজারে আরও দুটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এই নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) এবং ভারতের ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএসএল) প্রতি মেগাবাইটস পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) ব্যান্ডউইথ ১০ ডলারে (৭৮০ টাকা) রফতানির প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। প্রাথমিকভাবে ভারত ১০ গিগাবাইটস পার সেকেন্ড (জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথ নেবে। এতে প্রতিবছর ৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা পাবে বাংলাদেশ। এ টাকার চার ভাগের এক ভাগ দিয়ে বিএসসিসিএল কর্মকর্তাদের বেতন দেয়া যাবে। তবে বিভিন্ন কোম্পানির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ভবিষ্যতে ৪০ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। প্রথম দফার তিন বছরের চুক্তি অনুযায়ী কক্সবাজার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আখাউড়া দিয়ে ভারতের আগড়তলায় চুক্তিতে আখাউড়া বিএসএসএল পৌঁছানো হবে। পরে আরও দুটি সংযোগ হবে। এর মাধ্যমে দেশটির পূর্ব দিকের সাতটি রাজ্য বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, আমাদের রয়েছে ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ রয়েছে। এর মধ্য থেকে আমরা মাত্র ৩০ জিবিপিএস ব্যবহার করছি। বাকি ১৭০ জিবিপিএসের মধ্য থেকে মাত্র ১০ জিবিপিএস ভারতে রফতানি করা হবে। ১০ জিবিপিএস নিয়ে এখন শুরু হলেও ২০১৬ সালে বিএসসিসিএল দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সংযোগ পেলে এরপর অল্প সময়ের মধ্যে ভারতের এ দিককার রাজ্যগুলোর জন্য ব্যান্ডউইথ রফতানি এক শ’ জিবিপিএস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে মোট ২৪০ দশমিক ৬ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ আসছে। এর মধ্যে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ১৪০ দশমিক ৬ গিগাবাইট ও বেসরকারীভাবে টেরিস্টরিয়াল কেবলের মাধ্যমে এক শ’ গিগাবাইট। দেশে বর্তমানে ১৭ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। বাকি ২২৩ গিগাবাইট মূল্যবান ব্যান্ডউইথ পড়ে রযেছে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ২০২১ পর্যন্ত ৩৭ দশমিক ০৭৫ (জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে। এর পরও উদ্বৃত্ত থাকবে ২০৩ গিগাবাইট। বহু মূল্যবান সম্পদ ব্যান্ডউইথ ফেলে না রেখে বাড়তি ব্যান্ডউইথ বিক্রি করা হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। বিএসসিসিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রবেশদ্বার হিসেবে বিএসসিসিএল প্রতিনিধিত্ব করছে। এ কোম্পানির মাধ্যমে বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবহারযোগ্য ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি ২৪০ দশমিক ৬ গিগাবাইট পার সেকেন্ড (জিবিপিএস)। পূর্বাচল ও কক্সবাজারে ক্রিকেট স্টেডিয়াম ॥ রাজধানীর সন্নিকটে পরিকল্পিত শহর পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের একটি নতুন ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। আর নতুন এ স্টেডিয়াম নির্মাণ শেষ হলে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সর্বসাধারণের খেলার জন্য। এ ছাড়া কক্সবাজারে বিশ্বমানের আরও একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। পূর্বাচলের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা হবে ৭০ হাজার আর কক্সবাজারের স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা হবে এক লাখ। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বিজয়ের পরদিন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর তরফে এ ঘোষণা আসল। বৈঠকের পর মন্ত্রিসভার একজন সিনিয়র সদস্য বলেন, ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৬ বছর পর বাংলাদেশের বিজয়ের পরদিন মন্ত্রিসভার অনির্ধারিত আলোচনার ক্রিকেট খেলার সুযোগ- সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রতিমন্ত্রী বিরেন শিকদার নতুন ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রীকে। প্রতিমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী পূর্বাচলে নতুন ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও মিরপুরের জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি সবার খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান। সিনিয়র ওই মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের নতুন প্রজন্মকে ক্রিকেট খেলায় উদ্বুদ্ধ করতেই প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের একটি বড় স্টেডিয়াম করার কথা বলা হয়। সমুদ্রের কোল ঘেঁষে ওই স্টেডিয়াম করার কথা নিয়ে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের পাশাপাশি পূর্বাচলে ক্রিকেট স্টেডিয়াম করা হবে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও রাজধানীসহ সারাদেশেই ক্রিকেট খেলার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। রাজধানীতে বড় ধরনের উন্মুক্ত কোন খেলার মাঠ নেই, যেখানে নির্বিঘেœ ক্রিকেটের চর্চা করা যায়। আর সে কারণেই ক্রীড়া সংগঠকরা দীর্ঘদিন থেকে উন্মুক্ত ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দাবি জানিয়ে আসছিল। বর্তমানে রাজধানীর মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এবং এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম এবং খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর বসে। আর মতিঝিলের বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং খায়রুল আলম রাফি স্টেডিয়ামে স্থানীয় পর্যায়ের ক্রিকেট আসর বসে। অন্যদিকে বিকেএসপি ছাড়া রাজধানীতে বড় ধরনের উন্মুক্ত কোন স্টেডিয়াম বর্তমানে নেই।
×