ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২১ মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন সন্তোষজনক নয়

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২১ এপ্রিল ২০১৫

২১ মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন  সন্তোষজনক নয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী) বাস্তবায়ন মোটামুটি সন্তোষজনক। এ সময়ে গড়ে ৪৩ শতাংশ হারে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু ২১ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাস্তবায়ন অবস্থা সন্তোষজনক নয়। এসব বিভাগের বাস্তবায়ন হার ৪০ শতাংশের নিচে। এর মধ্যে চারটি বিভাগের বাস্তবায়ন হার একেবারে শোচনীয়। বিভাগগুলো অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ২০ শতাংশের কম এডিপি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। আর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ১০ শতাংশেরও নিচে। নয় মাসে এ বিভাগ মাত্র সাত শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীনে পাঁচ উন্নয়ন প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ৪৩২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নয় মাসে মাত্র ৩১ কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়ন সন্তোষজনক নয় এমন ২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হচ্ছে- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সেতু বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগ, আইএমইডি, গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়, সংসদ সচিবালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), অর্থ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হার ৪৩ শতাংশ। তবে প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাস্তবায়নের দিক থেকে ৩৮ শতাংশের নিচে রয়েছে ২৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের কম বাস্তবায়ন করেছে ১২টি বিভাগ। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে আমরা শতভাগের কাছাকাছি এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে আশাবাদী। সে হিসেবে বাস্তবায়ন হার এগিয়েও চলছে। তিনি বলেন, সাধারণত অর্থবছরের শেষদিকে এডিপি বাস্তবায়ন হার খুব বেশি বেড়ে যায়। গত কয়েক বছর ধরে এমনই হচ্ছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগের অধীনে পাঁচ প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২০৯ কোটি টাকা। কিন্তু বিভাগটি খরচ করতে পেরেছে মাত্র ২২ কোটি ১৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। যা মোট বরাদ্দের মাত্র ১১ শতাংশ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে চার প্রকল্প। এসব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। কিন্তু নয় মাসে মন্ত্রণালয় খরচ করতে পেরেছে মাত্র ১২ কোট ৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা। যা মোট বরাদ্দের মাত্র ২০ শতাংশ। ব্যাংক ও সম্পদ বিভাগের অধীনে পাঁচ প্রকল্পে বরাদ্দ রয়েছে ৫০ কোটি ৪ লাখ টাকা। অর্থবছরের ৯ মাসে বিভাগটি খরচ করতে পেরেছে মাত্র ৯ কোটি ৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। যা মোট বরাদ্দের মাত্র ১৮ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তারা ১৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছিল। এক মাসে এ বিভাগের অগ্রগতি মাত্র দুই শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মিলে ব্যয় করেছে ৩৫ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। এ সময়ে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৪৩ শতাংশ। যার পরিমাণ ৩৬ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। এ সময় বৈদেশিক সহায়তা থেকে ব্যয় হয়েছে ৪১ শতাংশ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় হয়েছে ৩১ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় হয়েছিল ২৬ শতাংশ। সে হিসেবে এক মাসে সংস্থাগুলোর ব্যয় বেড়েছে মাত্র পাঁচ শতাংশ। জানুয়ারি পর্যন্ত এ ব্যয় ছিল ২৫ শতাংশ। তবে বাস্তবায়নের হারে খুবই সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে ১৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এর মধ্যে অর্থবছর শেষ হওয়ার অনেক আগেই দুটো বিভাগ তাদের এডিপি শেষ করে ফেলতে পারবে বলে আশা করছে। এদের এডিপি বাস্তবায়ন ৯ মাসেই শতভাগের কাছাকাছি। এর মধ্যে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন হার ৯৫ শতাংশ। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে চার প্রকল্প। এসব প্রকল্পের মোট ১০৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকার মধ্যে ১০৪ কোটি ৩৬ লাখ ৯ হাজার টাকা খরচ করতে পেরেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন হার ৮২ শতাংশ। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে ১৪ প্রকল্প। এসব প্রকল্পের মোট ২ হাজার ২৯৯ কোটি ৮ লাখ টাকার মধ্যে ১ হাজার ৮৯১ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা খরচ করতে পেরেছে।
×