ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও হার ম্যানইউর, চেলসি ১- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

শিরোপা উদযাপনের অপেক্ষায় চেলসি

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২০ এপ্রিল ২০১৫

শিরোপা উদযাপনের অপেক্ষায় চেলসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘খেলল ম্যানইউ, জিতল চেলসি’-শনিবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে এই দুই পরাশক্তির দ্বৈরথকে এভাবে আখ্যা দিলে বোধ হয় বাড়িয়ে বলা হবে না। কেননা স্টামফোর্ড ব্রিজে স্বাগতিক ব্লুজদের ওপর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় আধিপত্য বিস্তার করে খেলে অতিথি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু স্বাগতিক কোচ জোশে মরিনহোর কৌশলের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে রেড ডেভিলসদের। বেলজিয়াম তারকা ইডেন হ্যাজার্ডের এক গোলে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ম্যানইউকে ১-০ গোলে হারিয়েছে চেলসি। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচ জেতে শিরোপা পুনরুদ্ধার প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন টেরি, অস্কার, ফেব্রিগাস, দ্রগবা, ইভানোভিচরা। দারুণ জয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালের চেয়ে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে গেছে চেলসি। বর্তমানে ৩২ ম্যাচ শেষে ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে দ্য ব্লুজরা। সমান ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আর্সেনাল। ৩৩ ম্যাচে আগের ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরেই আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। লীগে চেলসির আর বাকি আছে ৬ ম্যাচ। এর মধ্যে তিন ম্যাচে জয় পেলেই শিরোপা জয় নিশ্চিত হবে মরিনহোর দলের। সেক্ষেত্রে দুইয়ে থাকা আর্সেনাল বাকি ছয় ম্যাচে জয় পেলেও কোন লাভ হবে না। আর আর্সেনাল বা ম্যানইউ যদি তাদের ম্যাচে হোঁচট খায় তাহলে আরও আগেই নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে ব্লুজদের শিরোপা। শিরোপার জন্য আর্সেনাল বা ম্যানইউর কাজটা অনেকটাই কঠিন। কেননা এ দুটি দল একে অপরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হওয়া ছাড়াও আরও বড় ম্যাচে মুখোমুখি হতে হবে। আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে চেলসি অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায়। আর্সেনাল ও লিভারপুলের বিরুদ্ধে বড় দুটি ম্যাচ থাকলেও বাকি চার ম্যাচের প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল। এ কারণে ম্যানইউকে হারিয়ে শিরোপার অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গেছে চেলসি। ময়দানী লড়াইয়ের পাশাপাশি ডাগআউটেও ম্যাচটিতে ছিল ভিন্ন এক লড়াইয়ের আমেজ। ম্যানইউর বর্তমান কোচ লুইস ভ্যান গাল বার্সিলোনার কোচ থাকার সময় মরিনহো ছিলেন সহকারী। দু’জনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা এখনও অটুট। তবে পরশু রাতে গুরুকে হারিয়ে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন শিষ্য। ইউনাইটেড ইপিএলের সফলতম দল হলেও চেলসির বিরুদ্ধে তাদের মুখোমুখি লড়াইয়ের গত কয়েক ম্যাচের ফলাফল হতাশাজনক। সর্বশেষ সাতবারের দেখায় একবারও জিততে পারেনি তারা। তবে ভ্যান গালের শিষ্যরা লীগে টানা ছয় ম্যাচে ব্লুজদের বিরুদ্ধে জয় খরা কাটানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল। স্বাগতিকের বিরুদ্ধে একচেটিয়া খেলে তারা। কিন্তু রুনি, ফ্যালকাও, মাতাদের আক্রমণগুলো ফলপ্রসূ হয়নি। ম্যাচে ৭০ শতাংশ বলের দখল রেখেও হারতে হয়েছে ম্যানইউকে। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে উল্লেখ করার মতো প্রথম সুযোগ পেয়েই কাজে লাগান ইডেন হ্যাজার্ড। মাঝমাঠে স্বাগতিক ডিফেন্ডার জন টেরির কাছে রাদামেল ফ্যালকাও বল হারালে সতীর্থের পা ঘুরে সেটা পেয়ে যান অস্কার। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের ব্যাকহিল করে বাড়ানো বল ধরে দ্রুত ডি বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে গোল করেন বেলজিয়ামের তারকা হ্যাজার্ড। বিরতির পর ৫৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার জোড়া সুযোগ নষ্ট করে চেলসি। প্রথমে দিদিয়ের দ্রগবার শট অল্পের জন্যে লক্ষভ্রষ্ট হয়। এরপরের মুহূর্তেই দুরূহ কোন থেকে হ্যাজার্ডের শট ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৬১ মিনিটে আরেকটি দূরপাল্লার শটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইউনাইটেড। কিন্তু আইরিশ মিডফিল্ডার প্যাট্টিক ম্যাকনায়ারের শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন ব্লুজ গোলরক্ষক থিবাউট করটোয়া। ম্যাচের শেষ দিকে গোল পরিশোধের জন্য মুহুমুর্হু আক্রমণ করেও সফল হতে পারেনি সফরকারীরা। ফলে হার নিয়েই ফিরতে হয়েছে ২০ বারের চ্যাম্পিয়নদের। অন্যদিকে দারুণ জয়ে শিরোপা উদযাপন নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে চেলসি। অবশ্য ব্লুজ কোচ জোশে মরিনহো এখনই গা ভাসিয়ে দিতে নারাজ। তিনি ম্যাচ শেষে বলেন, এটা ঠিক আমরা বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় পৌঁছে গেছি। কিন্তু হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। আমরা শিরোপা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সতর্ক পদক্ষেপেই এগিয়ে যাব।
×