ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে অভিমত

প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে আছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ২০ এপ্রিল ২০১৫

প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে আছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পোশাক শিল্পের নারীদের স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা বলেন, পোশাক খাতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের অধিকাংশই অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত। প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে আছে। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাই তাদের সেবা গ্রহণে নিরুৎসাহিত করছে। তবে দেশের প্রতিটি কারখানায় নারীদের সচেতন করতে নানা পদক্ষেপ রয়েছে। নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হলে কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি প্রসঙ্গে তাদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। রবিবার রাজধানীর বিজিএমই ভবনে এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন আয়োজিত ‘পোশাক শিল্পের নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার’ বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নেদারল্যান্ডসের উন্নয়নমূলক এ সংস্থাটি দেশে কাজ করবে বলেও সেমিনারে জানানো হয়। সেমিনারে বিজিএমইএ’র সহসভাপতি (অর্থ) রিয়াজ বিন মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশের নারী শ্রমিকদের অধিকাংশই অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত। তবে দেশের প্রত্যেকটি কারখানায় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রয়েছে। দেশের নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হলে কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে মালিকরা উপকৃত হবেন। তাই নারীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে তাদের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। নিয়াজ মাহমুদ নেদারল্যান্ডসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নেদারল্যান্ডসের এই প্রকল্পের কারণে দেশের কারখানার শ্রমিকদের অনেক উপকার হবে। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ ও ধন্যবাদ। ইনোভেশন কন্সালটিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোবায়েত সারওয়ার বলেন, নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন হলে কারখানার মালিকরা উপকৃত হবেন, মালিকরা উপকৃত হলে বহির্বিশ্বের ক্রেতারাও উপকৃত হবেন। তাই নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। এসএনভি কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষামূলক এক জরিপের তথ্যে বলা হয়, দেশে তৈরি পোশাক খাতে কাজ করা নারী শ্রমিকদের গড় বয়স ২৪.৪ বছর। এদের মাত্র ৭৪.৪ শতাংশ নারী শ্রমিক প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত। তবে ১০ শতাংশের প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নেই। গড়ে তাদের মাসিক আয় ৬ হাজার ৬৯০ টাকা। গার্মেন্ট শিল্পে কাজ করা ৭০ শতাংশ শ্রমিকের আয় ৭ হাজার টাকার নিচে। সংস্থাটির পক্ষে আরও বলা হয়, এই প্রকল্পের মেয়াদ হবে ৩ বছর। পোশাক খাতে কাজ করা নারীদের অধিকাংশই স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক উৎপাদকারী দেশ। দেশে তিন হাজারের অধিক কারখানায় প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন শ্রমিক কর্মরত, যার ৮৫ শতাংশই নারী শ্রমিক। ওই সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসএসভি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর পল স্টিভেন্স, ওয়ার্কিং ফর উওমেন প্রজেক্টের টিম লিডার ফারতিবা রাহাত খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোবায়েত সারওয়ার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সাইন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন।
×