ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি প্রশাসনকে সহযোগিতা দেবে বিজিবি ॥ ডিজি

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি প্রশাসনকে সহযোগিতা দেবে বিজিবি ॥ ডিজি

সমুদ্র হক ॥ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সন্ত্রাসীদের পাকড়াও করে আইনের হাতে সোপর্দ না করা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের আহ্বানে যৌথ অভিযানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) উত্তরাঞ্চলের স্পর্শকাতর জেলাগুলোতে বহাল থাকবে। তবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। গেল সাড়ে তিন মাসে যে সকল সন্ত্রাসী দেশে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, দগ্ধ করেছে (যারা এখনও হাসপাতালে কাতরাচ্ছে এবং অনেকে প্রতিবন্ধী হয়েছে) তাদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সরকার যে নির্দেশ দেবে তা পালন করবে বিজিবি। ইতোমধ্যে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা গেছে। তাদের নাম-ঠিকানা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের কাছে আছে। শনিবার বিকেলে বগুড়া সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ সফর শেষে বগুড়ায় প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান। মহাপরিচালক এ সময় বলেন, দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সীমিত সাধ্য নিয়েই সীমান্তের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পাশাপশি বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা দিচ্ছে। বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে দেশে নতুন ১১ টি ব্যাটালিয়ন গড়েছে ও ৪ টি সেক্টর স্থাপন করেছে। সীমান্তের ে য এলাকা অনেকটা অরক্ষিত ছিল তা পূরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গেল এক বছরে ৬০ কিলোমিটার এলাকায় বি ও পি (বর্ডার অপারেশনাল পোস্ট বা বর্ডার আউটপোস্ট) স্থাপিত হয়েছে। আরও বিওপি ও ক্যাম্প বাড়ানো হবে। তিনি দুই দেশের সীমান্তের তুলনা করে বলেন, ভারতে যেখানে প্রতি ২ থেকে আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে ক্যাম্প সেখানে বাংলাদেশ সীমান্তে এলাকাভেদে ১০ থেকে ১৮ কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে ক্যাম্প। এ ছাড়াও বাংলাদেশে এলাকা অনুযায়ী যেখানে এক ব্যাটালিয়ন বিজিবি দায়িত্ব পালন করে সেখানে একই এলাকার জন্য ভারতে ৩ থেকে ৪ ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করে। সীমান্তের সবচেয়ে প্রয়োজন যে বিষয় তা হলো সীমান্ত এলাকা বরাবর রাস্তা ও কাঁটাতারের বেড়া, যা ভারতের আছে। আমাদের সীমান্ত পাহারা দিতে হয় মোটরসাইকেলে চেপে গ্রামের মধ্যে ঢুকে। সীমান্তরেখা বরাবর কোন রাস্তা নেই। সীমান্তে মানুষ হত্যার বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন ‘আন্তঃদেশীয় বৈঠকে আমরা সব সময়ই এর প্রতিবাদ করছি। ফ্লাগ মিটিংয়ে জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা কখনই চাই না সীমান্তে এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটুক। আমাদের প্রতিবাদে সীমান্ত হত্যা অনেক কমে এসেছে। শূন্যে না পৌঁছা পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে মহাপরিচালক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তে ৭৫ শতাংশ বিজিবির জওয়ান ঠিক রেখে বাকি ২৫ শতাংশের মধ্য থেকেই বেসরকারী প্রশাসনে সহযোগিতা দিতে জেলা প্রশাসনের অনুরোধে রিজিবি পাঠানো হয়। গত সাড়ে তিন মাসে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাই করা হয়েছে। বিজিবির মূল ৫ টি কাজের মধ্যে অন্যতম হলো চোরাচালন দমন। সীমান্তরেখা থেকে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বিজিবি সরাসরি এই কাজ করে। এর বাইরে স্থানীয় প্রশাসন ও ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে নিয়ে অপারেশন চালাতে হয়। গেল ক’বছরে সীমান্ত অপরাধ বিশেষ করে চোরাচালান অনেকটা কমেছে।
×