স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের চৌগাছা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদের অস্তিত্ব দিন দিন বিলীন হতে চলেছে। ভূমিদস্যুরা নদের জমি দখল করে বাড়িঘর তৈরি করে চলেছে। প্রশাসন রহস্যজনক কারণে ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। রয়েছে রাজনৈতিক জটিলতাও। ফলে নদটি দিন দিন সংকুচিত হয়ে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত এক সময়কার প্রমত্তা কপোতাক্ষ ছিল এ অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকার প্রধান উৎস। এ নদ দিয়ে নৌকাযোগে পণ্য আমদানি-রফতানি করা হতো। নদ সংলগ্ন গ্রাম এলাকার হাজার হাজার মানুষ কপোতাক্ষ নদ থেকে মৎস্য আহরণ করে জীবন চালাতেন। কিন্তু এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকা-ের মূলভিত্তি সেই কপোতাক্ষ এখন কালের বিবর্তনে মৃত প্রায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক শ্রেণীর অসাধু ভূমি দস্যু ও লোলুপ দৃষ্টি ভঙ্গির মানুষ যুগ যুগ ধরে কপোতাক্ষ নদকে নানাভাবে ধ্বংস করে যাচ্ছে। প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেই অসাধু ব্যক্তিদের সাহস সীমাহীনভাবে বেড়ে গেছে। তারা নির্বিঘেœ কপোতাক্ষ নদে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কপোতাক্ষ নদ সাতটি জেলার ২০টি উপজেলা, ১০টি পৌরসভা ও ৯৫টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এর মধ্যে চৌগাছা তাহেরপুর থেকে ছুটিপুর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট উপজেলায় নদের অবস্থান রয়েছে প্রায় ২৩ কিলোমিটার। দেখা গেছে, ভূমিদস্যুরা নদের জমি দখল করে কপোতাক্ষ নদ গ্রাস করে ফেলেছে। কোন স্থানে তৈরি করা হয়েছে উঁচু প্রাচীর, অবৈধ স্থাপনা। অনেক স্থানে নদের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়তই নদের জমি দখলের প্রতিযোগিতা চলছে।
নদ পাড়ের জেলে অমল জানান, নদ আর নদ নেই। এই নদে সরকারীভাবে প্রতিবছর মাছ অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাবশালীরা দখল করে মাছ চাষ করে। ফলে গরিব জেলেরা এ মাছ আহরণ করতে পারে না। নদী বিশেষজ্ঞদের অভিমত, কপোতাক্ষ নদটি ১২০ কিলোমিটার খনন করলে ফিরে পাবে তার নব যৌবন।
বরিশালে ১৪ শ’ যুবকের কর্মসংস্থান
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বেকার যুবক ও নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা পরিষদ। ইতোমধ্যে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১২ ক্যাটাগারিতে ১ হাজার ৪শ’ বেকারকে প্রশিক্ষণ শেষে স্ব স্ব পেশায় নিয়োজিত করার জন্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে উপকরণ প্রদান করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে নিজস্ব অর্থায়নে বেকার যুবক-যুবতীদের আত্মনির্ভরশীল করতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরে একই অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭৫ যুব নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণ, তিন লাখ টাকা ব্যয়ে ৯০ বেকার যুব নারীকে ব্লক ও বাটিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৫ জন করে তিনটি ব্যাচে ৭৫ যুব নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান, ২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০ জনকে ক্যাটারিং প্রশিক্ষণ, ২ লাখ টাকা ব্যয়ে এক শ’ বেকার যুব নারীকে বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষণ, ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯০ যুবককে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া ৬২ লাখ ৮ হাজার ৪৬৪ টাকা ব্যয়ে ছয়টি বেসিক ট্রেডে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এ্যান্ড নেটওয়ার্কিং, রেডিও এ্যান্ড টিভি সার্ভিসিং, রেফ্রিজারেশন এ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনং, ইলেকট্রিক্যাল হাউস ওয়ারিং, লেদ অপারেটর এবং অটোমেকানিক্স বিষয়ে ১৮০ বেকার যুবককে ৩ মাস মেয়াদী এবং ৭২০ স্বল্পশিক্ষিত বেকার যুবককে জাতীয় দক্ষতামান ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। একই অর্থবছরে উপজেলাভিত্তিক ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২২ যুবক-যুবতীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৯ যুব নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ মোকলেছুর রহমান বলেন, এসব কর্মকা- ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।