ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাবিতে নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদ অব্যাহত, মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

ঢাবিতে নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদ অব্যাহত, মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বর্ষবরণে অংশ নিতে এসে নারী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার পর চতুর্থ দিনেও এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মসূচী পালন অব্যাহত রয়েছে। শনিবার বিভিন্ন কর্মসূচী থেকে নারী লাঞ্ছনাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের পাশাপাশি ঘটনার দায় কাঁধে নিয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের পদত্যাগ করার দাবিও জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। শনিবার এই ঘটনার প্রতিবাদে বিবৃতি দেয় পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি এএফএম মেসবাহ্উদ্দীন এবং মহাসচিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে নারীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হামলার পাশাপাশি বাঙালীর চিরায়ত এই উৎসবের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করা হয়েছে। এতে জড়িতরা যত শক্তিশালীই হোক তাদের অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান তারা। প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ওই বিবৃতিতে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-নারী সেল। এই মানববন্ধন থেকে তারা ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান। মানববন্ধনে অংশ নেন এ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লুনা নূর, নারী সেলের সদস্য করবী ধর, সেলিনা হাই, হামিদা খাতুন, ফাহমিদা আজাদ ও রাশেদা কুদ্দুস প্রমুখ। মানববন্ধনে বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আমি গভীর বেদনার সঙ্গে একজন পুরুষ হিসেবে বাংলার পুরুষদের পক্ষ থেকে ওইসব নারীদের কাছে জোড় ক্ষমা চাই যাদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এই ঘটনার জন্য আমরা লজ্জিত, আমাদের ক্ষমা করে দিন। নারী সেলের সমন্বয়ক লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, শুধু দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গাতেই নারীদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নতুন কায়দায় নারীদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ছাত্র ইউনিয়নের সংবাদ সম্মেলন ॥ যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঠেকাতে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলীর অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি হাসান তারেক। অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংঘটিত যৌন নিপীড়নকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচার, কর্তব্যরত পুলিশের ধারাবাহিক অবহেলার কারণ তদন্ত ও বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হাইকোর্ট নির্দেশিত যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং বাসস্থল-শিক্ষাঙ্গন-কর্মস্থলে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে জাতীয়ভাবে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন। এর মধ্যে রয়েছে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ ও সংহতি সমাবেশ, ২০ এপ্রিল সোমবার সকাল ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে কার্জন হল পর্যন্ত মানববন্ধন এবং ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি মারুফ বিল্লাহ তম্ময়, ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমন সেন গুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী, সাধারণ সম্পাদক তুহিন কান্তি দাশ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দীপক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ প্রমুখ।
×