স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মিজানউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির তোষণের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন খোদ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে ভিসির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের লোকজনকে বিভিন্ন দফতরে শিক্ষক ও কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ করা হয়। শনিবার দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাহফুজুল আলম লোটন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, বর্তমান উপাচার্য যোগদানের পর রাবিতে ১০ জন বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকের স্বজনদের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। যার মধ্যে চারজন ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত বলেও অভিযোগ করা হয়। এরা হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের জামায়াতপন্থী শিক্ষক রেজাউল করিমের শ্যালক ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের জামায়াতপন্থী শিক্ষক সালাম ভূইয়ার ভাতিজা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী ফয়সাল জামান, সাবেক ছাত্রশিবির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, ইংরেজী বিভাগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপাচার্যের নিজ গ্রামের সাবেক শিবির নেতা আসিউজ্জামান এবং উপাচার্যে ভাগ্নে সাবেক শিবির নেতা হাবিবুল্লাহকে ফোকলোল বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
এছাড়া বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাবেক উপাচার্য ফাইসুল ইসলাম ফারুকীর ছেলে নাঈম ফারুকী ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগে, বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাবেক উপাচার্য আলতাফ হোসেনের মেয়েকে ভূগোল বিভাগে, বিএনপিপন্থী শিক্ষক সাফিউজ্জামানের (সাদা প্যানেলের সদস্য) স্ত্রী চৈতি অর্থনীতি বিভাগে, বিএনপিপন্থী শিক্ষক আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে তামজীদ হোসেন ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগে, বিএনপিপন্থী শিক্ষক শহিদুর রহমানের মেয়ে রিদা খাতুনকে দর্শন বিভাগে এবং বিএনপিপন্থী অপর এক শিক্ষকের স্ত্রীকে রাবেয়া বসরীকে অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
এছাড়াও উপাচার্য আঞ্চলিকতার কারণে জামায়াতপন্থী শিক্ষককে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শহীদ ফারুক হোসেনের বোনের চাকরি স্থায়ী করার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গত ১৬ এপ্রিল বিএনপি ও জামায়াত-শিবির তোষণ, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম-দুর্নীতি সম্পর্কে প্রতিবাদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফারুকের বোনের চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানাতে উপাচার্যে দফতরে গেলে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। এ সময় বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেনকে লাঞ্ছিত করেন। কিন্তু উপাচার্য তার অনিয়ম-দুর্নীতি আড়াল করার জন্য গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী সাত দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন নগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: