ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুজিবনগর সরকার যুদ্ধাপরাধী বিচারের ঘোষণা দিয়েছিল

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

মুজিবনগর সরকার যুদ্ধাপরাধী বিচারের ঘোষণা দিয়েছিল

রাবি সংবাদদাতা ॥ ইতিহাসবিদ ও গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেছেন, প্রবাসী মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশে ফেরার আগেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঘোষণা দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধাপরাধীদর বিচার শুরুও হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে লালন-পালন শুরু হয়। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই নতুন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরই মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রের দায়মুক্তি। শিক্ষক সমিতির আয়োজনে সন্ধ্যায় জুবেরী ভবনের মধ্য লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি আরও বলেন, ১৭ এপ্রিল থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১০ এপ্রিল। এর মধ্যে আমাদের পরবর্তীকালের সংবিধানের ভিত্তি নিহিত। মুজিবনগর সরকারের আসল নাম হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ১০ দিনের মধ্যে কোন প্রবাসী সরকার গঠিত হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসের তা বিরল। বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হচ্ছে পৃথিবীতে যত দেশ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়। যেদিন স্বাধীতার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল দিনটি বাংলাদেশের আত্মা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাকে কোনভাবেই নাকচ করা যায় না, যাবে না। সুতরাং আমাদের শুরুটা ওইভাবে যেভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার গঠনের পরিকল্পনা করে গিয়েছিলেন। এটা আকস্মিক কোন ঘটনা নয়, এর একটা ধারাবাহিকতা আছে। যার কারণে এই সরকারকে তখন কেউ নাকচ করতে পারেনি। এই সরকার একটা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করেছে এশিয়াতে। যেটা আর কোন সরকার করতে পারেনি। পৃথিবীতে কোন সরকার এত কম সময়ে একটা যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারেনি। যেটা বাংলাদেশ সরকার পেরেছে। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন আরও বলেন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ধারা এখন অব্যাহত আছে। আমার গবেষণায় আমি দেখেছি ’৫৪ পর থেকে যত সরকার হয়েছে, যখন মধ্যপন্থী এবং মৃদু বাম দলগুলো যখন জোট করেছে তখন বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়ন হয়েছে। অন্যান্য সরকারের সঙ্গে তার একটা উন্নতি হয়েছে, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে। যখনই ডানপন্থী এবং চরম ডান শাসন করেছে তখন জিডিপির অবনমন হয়েছে এবং উন্নয়নের ধারা কমে গেছে। সুতরাং ৪৯ থেকে এখনও আমাদের জাতীয়তার ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়নি। হলে আজকে খালেদা জিয়া বা বিএনপির জন্য এত লোক থাকে না। ৩০ ভাগ লোক আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী। আগেও তাই ছিল এবং এটা লড়াই করেই আমরা জিতেছি। সুতরাং ইতিহাসের ধারা বলে আমাদের জিততে হবেই। সেক্যুলার ডেমোক্র্যাসি ছাড়া এদেশ টিকবে না এবং মধ্যপন্থী ও মৃদু বাম দলগুলো ছাড়া এদেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। অধ্যাপক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনন্দ কুমার সাহা প্রমুখ।
×