ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

পাকিস্তানের  বিপক্ষে সর্বোচ্চ  রানের  রেকর্ড

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শুরুতে বোঝা যাচ্ছিল না কিছুই। বহুল আকাক্সিক্ষত জয়ের ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিকে রানের গতিটা বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতার সেরা সুযোগ এমনটাই আগের দিন বলেছিলেন সাকিব আল হাসান। একবারই মাত্র ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাক শিবিরকে হারাতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তারপর আর জয় দেখা যায়নি। তবে দীর্ঘদিন পর ওপেনাররা দারুণ শুরু দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওপেনার তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীমের জোড়া সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে ইতিহাসে নিজেদের সর্বোচ্চ ইনিংস গড়ে বাংলাদেশ দল। এক ওয়ানডেতে দুই সেঞ্চুরির রেকর্ডটাও বাংলাদেশের জন্য প্রথম। সেজন্যই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩২৯ রান তোলে টাইগাররা। গত বছর দেশের মাটিতে এশিয়া কাপে এই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস ৩ উইকেটে ৩২৬ রান করেছিল বাংলাদেশ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। একই মঞ্চে শুক্রবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সেটা ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। প্রথমবার নির্ভরযোগ্য ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমেছিলেন তরুণ সৌম্য সরকার। তবে বিশ্বকাপে আক্রমণাত্মক সৌম্যকে এদিন একই রূপে দেখা যায়নি। আর ইনিংসের গোড়ার দিকে বলগুলোও ঠিকভাবে ব্যাটে আসছিল না। তবে সৌম্য-তামিম সতর্ক থেকেছেন, ৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটি হলেও ততক্ষণে ১৩ ওভার পেরিয়ে গেছে। সৌম্য ২০ রান করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে যান। এরপর বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিস্ময় উপহার দেয়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও বেশি দূর যেতে পারেননি। দলীয় ৬৭ রানে ২ উইকেট, শেষ হয়ে গেছে ২০ ওভার। খুব বড় সংগ্রহ আসবে এমনটা ছিল কল্পনাতীত। কিন্তু অসাধারণ এক জুটি গড়লেন তামিম-মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে তুললেন দু’জন মিলে ১৭৮ রান। এর আগে তৃতীয় উইকেটে ১৭৪ রানের জুটি গড়েছিলেন এনামুল হক বিজয় ও মুশফিক ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। শুধু তৃতীয় উইকেটই নয় বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এটি যে কোন উইকেটের সেরা সংগ্রহ। এর আগে হাবিবুল বাশার ও রাজিন সালেহ চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিরুদ্ধে তুলেছিলেন ১৭৫ রান। তামিম ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক হাঁকিয়ে ফিরে যান ১৩৫ বলে ১৫ চার ও ৩ ছক্কায় ১৩২ রান করেন। তবে এরপরও উইকেটে ছিলেন মুশফিক। তিনি শুরু থেকেই ছিলেন দুর্বার। ব্যক্তিগত ৩৫ রানে জীবন ফিরে পাওয়ার পর আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠেন মুশফিক। অর্ধশতক আদায় করেন ৪২ বলে। তবে অর্ধশতক পাওয়ার পর তিনি আরও অপ্রতিরোধ্য ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। পরবর্তী ফিফটি পেতে খেলেন মাত্র ২৭ বল। উইকেটের চারদিকে সমান তালে পিটিয়েছেন পাক বোলারদের। মুশফিক ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক হাঁকান মাত্র ৬৯ বলে, বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম শতক এটি। এর আগে সাকিব আল হাসান মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি আদায় করেছিলেন জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে বুলাওয়েতে ২০০৯ সালে। এ দু’জনের ব্যাটিং তা-বেই পরবর্তী ৩০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরে যোগ হয় ২৬২ রান ৮.৭৩ রানরেটে! শেষ ১০ ওভারেই আসে ৯৩ রান। আর সে কারণেই ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩২৯ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। গত বছর এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করা ৩ উইকেটে ৩২৬ রানই ছিল এর আগে সর্বাধিক। এ নিয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৮ বার তিন শতাধিক রান সংগ্রহ করল।
×