ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তবুও হাহাকার দর্শকের...

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

তবুও হাহাকার দর্শকের...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হোম অব ক্রিকেট হিসেবে সবসময়ই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকের ঢল দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলেই উপচে পড়া ভিড় হুমড়ি খেয়ে পড়ে এ ভেন্যুতে। আর দর্শকরাই প্রাণ এনে দেন যে কোন ম্যাচে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথমটিতেই দর্শকের স্রোত আছড়ে পড়ল। কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে স্টেডিয়ামের গ্যালারি। দর্শকরা নানা রংয়ে রঙিন হয়ে টাইগারদের সমর্থনে বিভিন্ন ব্যানারের পেছনে দলবদ্ধভাবে যেমন এসেছেন তেমনি আবার জাতীয় পতাকা, প্ল্যাকার্ড হাতেও এসেছেন অনেকে। দারুণ এক বিশ্বকাপ শেষে এবার ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয়ার মিশন। দেশের ক্রিকেটপাগল মানুষও মনেপ্রাণে চান পাকদের হারিয়ে দিক বাংলাদেশ, আর সেই বিশ্বাসটাও গেঁথে গেছে সবার মনে যে টাইগাররা শুরু থেকেই জয়ের পথে যাত্রা শুরু করবে। এ কারণেই কেউ ঘরে বসে থাকেননি। ২০১২ এশিয়া কাপ দেখেছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দর্শক উপস্থিতি। সে সময় টিকেটের হাহাকার ছিল চোখে পড়ার মতো। কারণ সেবারই প্রথম বাংলাদেশ দল কোন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে খেলেছিল। সেবার ফাইনালে এই পাকিস্তানের কাছেই মাত্র ২ রানে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। ধারণক্ষমতারও বাইরে দর্শক এসেছিলেন। কিন্তু দল হেরে যাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ গ্যালারি নিস্তব্ধ থাকলেও পরে টাইগারপ্রেমীরা দলর লড়াকু ও ইতিবাচক ক্রিকেট দেখে সেøাগান দিতে দিতেই মাঠ ছেড়েছেন। বাংলাদেশের দর্শকরা এমনই অন্তঃপ্রাণ ক্রিকেটের প্রতি। অতীতে এবং বর্তমানে সবসময়ই দলের ভাল এবং খারাপ সময়ের মধ্যেও দর্শকরা কখনও স্টেডিয়াম বিমুখ হননি। এমনকি ২০১৪ সালে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বাজে সময় যখন যাচ্ছিল টাইগারদের তখনও মিরপুর স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় ভরপুর। টিকেটের জন্য হাহাকার ছিল সর্বত্রই ধারণক্ষমতার ঘাটতির কারণে। তাই সবসময়ই ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি এসেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তা করার জন্য চিন্তাভাবনাও করছে। শুক্রবার ছুটির দিন, কার্যদিবস নেই। তাই আবারও ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনালের মতোই আবার উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। দিবারাত্রির ম্যাচ শুরুর সময় বেলা আড়াইটা হলেও সকাল ১০টা থেকেই দর্শকরা ভিড় করতে শুরু করেন। টিকেট বঞ্চিত অনেককেই আবার হন্যে হয়ে খুঁজতে দেখা গেছে টিকেট। তবে সোনার হরিণ হয়ে যাওয়া টিকেটের টিকেটিও মেলেনি। বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে খ- খ- মিছিল করেও এসেছেন অনেকে। তবে ম্যাচ শুরু হয়ে যাওয়ার পরও স্টেডিয়ামের বাইরে অনেক দর্শককে ঢোকার অধীর প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। ম্যাচ শুরুর আগের দিনই দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘এবার আমাদের সেরা সুযোগ পাকিস্তানকে হারানোর।’ কারণটা পরিষ্কার, নতুন নেতৃত্বে একেবারেই তরুণ দল পাকরা। আর দারুণ এক বিশ্বকাপ শেষ করে উজ্জীবিত বাংলাদেশ তাদের মুখোমুখি হচ্ছে দেশের মাটিতে। ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনাল ও ২০১৪ এশিয়া কাপে জয়ের খুব কাছে গিয়েও অল্পের জন্য পাকদের কাছে হারতে হয়েছে। সুযোগটা এবার যে মোক্ষম তা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও জানেন। মাঠে বসে দলকে সমর্থন দেয়া, বিজয় দেখার সুযোগ হাতছাড়া কে করতে চায়? এ কারণেই আবার ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুরে নামল দর্শকের ঢল। কিন্তু অনেকেরই থেকে গেল হতাশা, হাহাকার ও অসন্তুষ্টি টিকেট না পাওয়ায়।
×