ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌরভ ছড়ালেন মুশফিকও

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

সৌরভ ছড়ালেন মুশফিকও

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শতক হাঁকানোটা তার জন্য বেশ কঠিনই। যে পজিশনে নামতে হয় সেখানে ব্যাট করে তিন অঙ্কের এ ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানো স্বপ্নের মতো। আর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে সাকিব আল হাসান দাবি করেছিলেন, ‘আমাদের আছে বিশ্বসেরা ব্যাটিং।’ তাই সেই ব্যাটিং লাইনআপে চার কিংবা পাঁচ নম্বর পজিশনে নেমে শতক হাঁকানো চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু সেটা এবার করেই ছাড়লেন মুশফিকুর রহীম। দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে রানের মধ্যে থাকা মুশফিক ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকালেন মাত্র ৬৯ বলে। ইনিংসের ২১তম ওভারে নেমে শেষ পর্যন্ত তিনি সাজঘরে ফেরেন ৭৭ বলে ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১০৬ রান করে। ২০১১ সালে প্রথমবার জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে হারারেতে সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিক। এরপর গত বছর ভারতের বিরুদ্ধে ফতুল্লায় ১১৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এ দুটি শতকই তিনি হাঁকিয়েছেন চার নম্বরে নেমে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেও নামলেন পয়া সেই পজিশনেই। তবে এবার বিশ্বকাপে পজিশন থেকে দুই ধাপ পিছিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তারপরও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর ৮৯ রানের একটি ইনিংস খেলেন মুশফিক। তবে বিশ্বকাপ শেষে পাকদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই তিনি নেমে গেলেন চার নম্বরে। শুরু থেকেই রান বাড়ানোর দিকেই মনোযোগী হন উইকেটে দারুণভাবে সেট হয়ে যাওয়া তামিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে। বিদায় নিয়েছেন ততক্ষণে ওপেনার সৌম্য সরকার এবং নির্ভরযোগ্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সংগ্রাম করছিলেন তামিম। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিলেন মুশফিক। ওয়ানডে ক্রিকেটে জুটির বড় শর্ত হচ্ছে একপ্রান্ত আগলে রাখবেন একজন এবং আরেক প্রান্তে বোলারদের ওপর চড়াও হবেন অন্যজন। তামিম ধরে রেখেছিলেন শুরু থেকেই। তাই পাক বোলারদের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নিলেন মুশফিক। তবে ইনিংসের ২৯তম ওভারে সাঈদ আজমলের বলে সহজ ক্যাচ তুলে দিলেও তা ধরতে পারেননি জুনাইদ খান। সে সময় মাত্র ৩৫ রানে ব্যাট করছিলেন মুশফিক। নতুন জীবন ফিরে পেয়ে যেন আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠেন মুশফিক। অর্ধশতক আদায় করেন ৪২ বলে। তবে অর্ধশতক পাওয়ার পর তিনি আরও অপ্রতিরোধ্য ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। পরবর্তী ফিফটি পেতে খেলেন মাত্র ২৭ বল। উইকেটের চারদিকে সমান তালে পিটিয়েছেন পাক বোলারদের। মুশফিককে দেখে তামিমও নিজেকে মেলে ধরেন। এ দু’জনের জুটি নতুন রেকর্ড গড়ে তোলে বাংলাদেশের পক্ষে। তৃতীয় উইকেটে উঠে ১৭৮ রান। এর আগে তৃতীয় উইকেটে ১৭৪ রানের জুটি গড়েছিলেন এনামুল হক বিজয় ও মুশফিক ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। শুধু তৃতীয় উইকেটই নয় বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এটি যে কোন উইকেটের সেরা সংগ্রহ। এর আগে হাবিবুল বাশার ও রাজিন সালেহ চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিরুদ্ধে তুলেছিলেন ১৭৫ রান। এরপর তামিম ফিরে গেলেও মুশফিক টিকে থেকে শতক আদায় করেন। হোম অব ক্রিকেটে নিজের প্রথম শতক, আর ক্যারিয়ারের তৃতীয়। আবারও সেই চার নম্বরে নেমে। বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম শতক হাঁকিয়েছেন তিনি এদিন। এর আগে সাকিব আল হাসান মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি আতায় করেছিলেন জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে বুলাওয়েতে ২০০৯ সালে। আর মুশফিকের লেগেছে ৬৯ বল। শতকের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি আর। তবে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন দারুণ এক অবস্থানে।
×