ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইএস রুখতে মার্কিন বিমান হামলা জরুরী ॥ আবাদি

ইরাকে আনবার প্রদেশের রাজধানী পতনের মুখে

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

ইরাকে আনবার প্রদেশের রাজধানী পতনের মুখে

ইসলামিক স্টেটের জঙ্গীরা ইরাকের মধ্যাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের রাজধানী দখল করার লক্ষ্যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে, দমন করা না গেলে জঙ্গীরা অপ্রতিহত হয়ে উঠতে পারে। ইরাকী বাহিনীর তিকরিত পুনর্দখলের পর রামাদি নগরী অভিমুখে অগ্রসর হওয়া আইএসের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিযান। তিকরিত পুনর্দখলের সময় হাজার হাজার বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়। খবর গার্ডিয়ানের। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বক্তৃতা দেয়ার সময় ইরাকী প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি বলেন, রামাদিমুখী অভিযান আইএস জঙ্গীদের ক্রমবর্ধমান হুমকির গুরুত্বকেই তুলে ধরে। জঙ্গীগোষ্ঠীকে তিনি তাদের আরবী আদ্যক্ষর দিয়ে গঠিত নাম ‘দায়েশ’ বলে উল্লেখ করেন। আবাদি বলেন, ‘এই চরমপন্থী গোষ্ঠী শুধু ইরাক থেকে নয়, বরং সারা বিশ্ব থেকেÑ আমি জোর দিয়ে বলছি সারা বিশ্ব থেকে তরুণদের ভর্তি করছে। তারা শুধু বহুজাতিকই নয়, বরং তারা ভূমিতে একটি পৃথক সত্তা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। দায়েশ যদি এই সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, তবে কোন নিয়মিত বাহিনীই তাদের ঠেকাতে পারবে না। তাদের অবশ্যই থামাতে হবো।’ ইরাকী প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক দিনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা আইএস বিরোধী বৃহত্তর অভিযানে অত্যাবশ্যক হয়ে উঠতে পারে।’ আবাদি বলেন, ‘তিকরিত পুনর্দখল ইরাকের বাদবাকি এলাকাকে কিভাবে মুক্ত করা যায় তার একটি পরীক্ষামূলক মহড়া।’ রামাদির পতন হবে ইরাকের জন্য একটি বড় ধরনের প্রতীকী পরাজয়। নগরীর চারপাশে জঙ্গীরা যেসব এলাকা দখল করেছে, সেখানকার সুন্নি পুনর্জাগরণ আন্দোলনভুক্ত শত শত উপজাতীয় সদস্যকে তারা হত্যা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে জেহাদপন্থীদের ওই প্রদেশ থেকে বিতাড়নে সুন্নি আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন ইরাকী বিশেষজ্ঞ হিশাম আল-হাশিমি যিনি সরকারকে আইএস সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে থাকেন, বলেন, নগরীটি পতনের কিনারায় পৌঁছে গেছে। তবে, সবচেয়ে উর্ধতন মার্কিন সামরিক কর্মকতা রামাদিতে আইএসের সম্ভাব্য বিজয়ের তাৎপর্যকে কম গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। জয়েন্ট চীফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্টিন ভেম্পসি বলেন, ‘নগরীটি কোনভাবেই প্রতীকী নয়, এটিকে একদিকে যেমন খেলাফতের অংশ বলে ঘোষণা করা হয়নি, তেমনি এটি ইরাকের ভবিষ্যতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ ‘আমি রামাদির পতন চাইব না। তবে, এর পতন হলে অভিযানের সমাপ্তি ঘটবে না। আমাদের নগরীকে ফিরে পেতেই হবে।’ আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদি ফোরাত নদী দ্বারা পূর্ব ও পশ্চিম অংশে বিভক্ত। আল-হাশিমি বলেন, আইএস বর্তমানে নগরীর পূর্বাংশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পশ্চিমাংশের ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে। জঙ্গী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা আনবার অপারেশন কমান্ড থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে ও প্রধান প্রধান সরকারী ভবনগুলো থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হলো দায়েশ দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।’ অভিবাসন ও উদ্বাস্তু মন্ত্রণালয়ের সাত্তার নওরোজ বার্তা সংস্থা এপিকে জানায়, রামাদি থেকে পালিয়ে যাওয়া সহস্রাধিক পরিবার ‘দুঃসহ পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে। নতুন এক মানবিক সঙ্কটের মধ্যে তারা বাগদাদের দক্ষিণ ও পশ্চিম উপকণ্ঠে আশ্রয় নিয়েছে। আরও ৪শ’ পরিবার কারবালায় শরণার্থী হয়েছে।
×