ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশল শনাক্ত;###;১৩ জেলায় ২ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে ;###;বিশ্বব্যাংকের মতে গার্মেন্ট, শিপবিল্ডিং, হাল্কা প্রকৌশল, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি ও ওষুধ শিল্পে এই নতুন;###; কর্মসংস্থান সম্ভব

দেড় কোটি কর্মসংস্থান

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

দেড় কোটি কর্মসংস্থান

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ বিশ্বব্যাংক বলেছিল শ্রমঘন ছয় খাতে দেড় কোটি কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। একে কাজে লাগাতে কিছু পরামর্শ দিয়েছিল সংস্থাটি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা। বিশ্বব্যাংকের এ পরামর্শকেই বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির দিকে নজর দেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই ১৩টি জেলায় ২০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সারাদেশে পর্যায়ক্রমে তৈরি হবে আরও ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ সময়োপযোগী এবং যথেষ্ট ভাল সিদ্ধান্ত। এত দিন ধরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ দেশী বা বিদেশী সব ক্ষেত্রেই প্রধান সমস্যা ছিল প্রয়োজনীয় জমি দিতে না পারা। প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হলে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরী। প্রবৃদ্ধি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নিয়ে যেতে হলে এফডিআই (ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) বড় ধরনের উৎস হবে। এফডিআই আসা মানেই শিল্প স্থাপন এবং কর্মসংস্থান হওয়া। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শুধু রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিঘœ ঘটতে পারেÑ এমন খাত বাদ দিয়ে বাকি সব খাতই বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া উচিত। এমনকি পোশাক খাতও। কেননা এক সময় কোটা সিস্টেম ছিল, তখন আমাদের দেশের শিল্পপতিরা এ খাতে কোন বিদেশী বিনিয়োগ আসতে দিত না। সেটা ওই সময় ঠিক ছিল। কিন্তু এখন তো কোটা সিস্টেম নেই। তাই পোশাক খাতে বিদেশী বিনিয়োগ উন্মুক্ত করা গেলে অতিরিক্ত ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এফডিআই আসতে পারত। অর্থনৈতিক অঞ্চল বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, চীনে যেখানে ৩ হাজার, থাইল্যান্ডে ৩০০ এবং ফিলিপাইনে ৩০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে কার্যকর রয়েছে মাত্র ৩টি এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (অর্থনৈতিক অঞ্চল নয়)। কাজেই অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করে কাক্সিক্ষত কর্মসংস্থান তৈরির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ মতে, দেড় কোটি কর্মসংস্থান তৈরির জন্য ছয়টি শ্রমঘন শিল্প খাতকে শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ তৈরি পোশাক শিল্প, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, হালকা প্রকৌশল শিল্প, কৃষি ব্যবসা ও তথ্য প্রযুক্তি এবং ওষুধ শিল্প। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ, অন্যান্য শ্রমঘন রফতানিমুখী শিল্প খাতে সম্ভাব্য কর্মসংস্থান সাড়ে ৩ লাখ, হালকা প্রকৌশল খাতে সম্ভাব্য কর্মসংস্থান ১৪ লাখ, জাহাজ নির্মাণ খাতে ২০ লাখ, কৃষি ব্যবসায় সম্ভাব্য কর্মসংস্থান ১৫ লাখ এবং ওষুধ শিল্পে সম্ভাব্য ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, শ্রমিকদের দাম বাড়ায় চীন থেকে আগামী দশ বছরে ৮০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান বেরিয়ে যাবে। এর মধ্যে আমরা হিসাব করেছি বাংলাদেশে শ্রমঘন শিল্পে ১৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সম্ভব। কিন্তু এর জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে হবে আর এ জন্য বিনিয়োগ দরকার। অবকাঠামো, জমি, দক্ষ শ্রমিক, অর্থায়ন ও জ্বালানির প্রয়োজন। এর সবই একসঙ্গে করে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ মতো দেড় কোটি কর্মসংস্থান তৈরির মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে বিনিয়োগ বোর্ড এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৫টি পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হচ্ছেÑ নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি ৪০ হাজার একরে উন্নীত করা, রফতানির জন্য উপকরণ আমদানিতে বিশেষ সুবিধা প্রদান, অবকাঠামো উন্নয়নে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অফিসকে কাজে লাগানো, বাংলাদেশ ব্যাংকের রফতানি উন্নয়ন ফান্ডকে আরও সম্প্রসারণ করা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক করা। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে আরও বলা হয়েছেÑ চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডে বিদেশী বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা, অধিক গুরুত্বপূর্ণ পোশাক শিল্পের জন্য বিশেষ বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা বৃদ্ধি ও অন্যান্য শিল্পের ক্ষেত্রে তা কার্যকর করা, আন্তর্জাতিকমানের কর্তৃপক্ষ দিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনা করা, পিপিপি আইন এবং বেজা বাস্তবায়ন রুলস দ্রুত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে প্রাণ সঞ্চারের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই সরকার দেশের ১৭ জেলায় ২০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরসহ আগামী তিন বছরে ১৩টি ইপিজেড প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী তিন অর্থবছরে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ১৪ হাজার ৬১৯ একর জমির ওপর এই ১৩টি ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার মধ্যে ৫ হাজার ১২৭ একর জমির মালিক সরকার এবং ৯ হাজার ৪৯২ একর জমি বেসরকারী মালিকানাধীন। এর মধ্যে ৩টির জমি অধিগ্রহণে চলতি অর্থবছরই বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স ফান্ড লিমিটেড (বিআইএফ এফএল) থেকে ঋণ নিয়ে বরাদ্দ দেবে সরকার। বাকি ১০টি বাস্তবায়ন করা হবে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে। এই ১৩টির মধ্য থেকে ৮৪৩ একর জমির ওপর আনোয়ারা-২ এবং ৭ হাজার ৭১৬ একর জমি নিয়ে মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে তা দেয়া হবে চীনা বিনিয়োগকারীদের। ফলে চীনা বিনিয়োগকারীরা মিয়ানমার থেকে তাদের হিস্যার গ্যাস এনে শিল্পে ব্যবহার করতে পারবে। আর গাজীপুরের শ্রীপুরে ৫১০ একর এবং নরসিংদী সদর উপজেলায় ৬৯০ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠার পর অর্থনৈতিক অঞ্চল দুটি জাপানী বিনিয়োগকারীকে দেয়া হবে। এ ছাড়া ভারত, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও থাইল্যান্ডসহ আশিয়ানভুক্ত অন্য দেশগুলোর বিনিয়োগকারীদের জন্যও আলাদাভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই ১৩টির বাইরে বাকি সাতটির মধ্যে তিনটি বাস্তবায়ন করবে বেসরকারী খাত বিজিএমইএ, আবদুল মোনেম লিমিটেড এবং এ কে খান এ্যান্ড কোম্পানি একটি করে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর যত্রতত্র শিল্প-কারখানা স্থাপন করার সুযোগ দেবে না সরকার। তখন বিনিয়োগকারীদের এসব অঞ্চলেই বিনিয়োগ করতে হবে বলে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রী ও সচিবকে নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই বৈঠকের কার্যবিবরণীতে কোন কোন জেলার কোথায় কোথায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে, তা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও আগামী ১৫ বছরে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ ছাড়া চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ১৫ হাজার একর জমির ওপর ‘মাল্টিপ্রডাক্ট মাল্টিপল’ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে চীন, থাইল্যান্ডসহ আশিয়ানভুক্ত অন্যান্য দেশ বিনিয়োগ করতে পারবে। এসব বাস্তবায়ন হলে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় দেশী বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি চীন ও জাপানের বিনিয়োগকারীদের কথা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ জাপান ও চীনের সরকার এবং বিদেশী সহায়তাকারী সংস্থাগুলো সরকারীভাবে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে আগ্রহের কথা জানিয়েছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রীর চীন ও জাপান সফরের সময় দুই দেশের সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও একই ধরনের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ও চীনা বিনিয়োগকারীরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় অথনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য সমীক্ষা চালিয়েছে। প্রাক-সমীক্ষায় জাইকা গাজীপুর ও নরসিংদী জেলায় দুটি স্থানে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বেজাকে জানিয়েছে। একইভাবে চীনা কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে স্থাপিতব্য টানেলের শেষপ্রান্তে কাফকোর অদূরে আনোয়ারা উপজেলায় চায়নিজ ইকোনমিক এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানিয়েছে। ঢাকার চীনা দূতাবাস চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে এ কাজে মনোনীত করেছে। অন্যদিকে ভারত সরকারও তার দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ জন্য ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য প্রাথমিক যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে। তবে তারা কোন এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে প্রস্তাব দেয়নি। ইতোপূর্বে পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। তবে যথাসম্ভব কৃষিজমির ব্যবহার কম করে অকৃষি জমি ও পুনরুদ্ধার হওয়া জমির ওপর বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো সৃষ্টির মাধ্যমে আধুনিক শিল্পাঞ্চল স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত ২০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে ১৭টির স্থান চূড়ান্ত করেছে প্রাথমিক স্থান নির্বাচন কমিটি। সেগুলো হলোÑ কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বটতলী, হাজীগাঁও, বৈরাগ ও বেলচূড়া মৌজা, নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও সোনারগাঁও থানার মোহনপুর, নিশং, শুভরকরদি, ঘারমাড়া, মদনগঞ্জ, শম্ভুপুরা ও নয়াচর, জামালপুর সদর উপজেলার রঘুনাথপুর দিঘুলী, হরিদ্রাহাটা, গান্ধাইল, জোয়ানেরপাড়া, ছোনটিয়া ও সুলতাননগর, ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম চরকালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর, তালশহর ও বাসুতারা, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা, দাড়ারহাট ও প্রধানপুর, নরসিংদী সদর উপজেলার বাগহাটা, বালুসাইর, মহিষাশুর ও খাটরা, নীলফামারী সদর উপজেলার সুবর্ণখুলী ও কাদিখোলা মৌজা এবং মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিবালয়, ঝিকুটিয়া, নেহালপুর ও তালুকসাদুলা, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চর মোকারিমপুর, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার জলিরপাড়, কোদালধোয়া ও পয়সাআর বেসরকারী মালিকানাধীন তিনটি অঞ্চল হলো নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাজৈর, ডাঙ্গা, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চর বাউশিয়াতে আব্দুল মোনেম ইপিজেড এবং একই জেলার বাউশিয়ায় বিজিএমইএর গার্মেন্টস শিল্প পার্ক। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ ও নোয়াখালীর সুবর্ণচরে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই ১৩টির বাইরে সরকারী অর্থায়নে মানিকগঞ্জের পুরাতন আরিচা ফেরিঘাটের অব্যবহৃত জমিতে একটি, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, কুমিল্লার ময়নামতি ও পটুয়াখালীতে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করবে সরকার। আর বেসরকারী উদ্যোগে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলায় একে খান এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বিজিএমইএ ও আব্দুল মোনেম গ্রুপ একটি করে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করবে। ইতোমধ্যে বিজিএমইএর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষপর্যায়ে। একে খান এ্যান্ড কোম্পানিকে প্রাক-যোগ্যতা সনদ দেয়া হয়েছে। আব্দুল মোনেমকেও সনদ দেয়া প্রক্রিয়াধীন। প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জলাধার বা লেক (খাল) থাকবে, যাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যাবে। শিল্পবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্লান্ট থাকবে এবং প্রয়োজনে বনায়ন করতে হবে। লেকের পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্টের মাধ্যমে খাবার পানিতে পরিণত করা যাবে। শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থাও থাকবে। বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড আছে। সেটিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু যখন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হয়ে যাবে সেগুলোতে বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়বে তখন এই ফান্ড আরও বেশি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন হবে। তাছাড়া চীন থেকে যেসব বিনিয়োগকারী বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেরিয়ে যাবে। তাদের আকৃষ্ট করতে বিনিয়োগ বোর্ডকে নানা কর্মসূচী নিতে হবে। যেমন- ব্রাডিং বাংলাদেশ, রোড শোসহ ইমেজ বৃদ্ধির জন্য নানা উদ্যোগ নিতে হবে।
×