ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেউ দিচ্ছেন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি, কারও অভিযোগ প্রচারে বাধা

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

কেউ দিচ্ছেন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি, কারও অভিযোগ প্রচারে বাধা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকার উত্তর, দক্ষিণের মেয়র পদে জয়ের জন্য সব প্রার্থীই আশাবাদী। তবে তারা মনে করছেন এ জন্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। বিজয়ী হলে তারা কেউ ভোটারদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আবার কেউ জনগণের নিরাপত্তার কথা বলছেন। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠারও ওয়াদা করছেন। আবার ঢাকাকে আন্তর্জাতিক মানের পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তোলার কথাও ব্যক্ত করছেন। গত মঙ্গলবার পহেলা বৈশাখের দিনেও প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। বুধবার সকাল থেকেই তারা জনসংযোগে নেমে পড়েন। জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি সাঈদ খোকনের এদিন সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ডে এলাকায় (সিদ্ধেশ্বরী) জনসংযোগ করেন ঢাকা দক্ষিণের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। বলেন, নির্বাচনের পরে অনেক প্রার্থী জনগণের কোন খোঁজখবর রাখেন না। কিন্তু এটা আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ঐতিহ্যগতভাবেই কয়েক যুগ ধরে আমার পরিবার ঢাকাবাসীর সুখ-দুঃখের অংশীদার। সর্বদা ঢাকাবাসীর জন্য নিবেদিত। এদিকে দুপুরে নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানেও যোগ দেন সাঈদ খোকন। এ সময় তিনি নির্বাচিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানেরও প্রতিশ্রুতি দেন। বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গর্ব। উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে সমস্যা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। নির্বাচিত হলে এর সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। এ সময় তিনি গত তিন মাসে বিএনপির তা-বের বিচারের জন্য ছাত্রলীগকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, ৪২ বছর পরে যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে পারে। তাহলে গত তিন মাসে বিএনপির তা-বের বিচার কেন হবে না। ব্যালটের মাধ্যমে বিএনপির তা-বের জবাব দেয়ার সময় এসেছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আকতারুজ্জামান, ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমসহ অন্য নেতারা। প্রচারের বাধার অভিযোগ আফরোজা আব্বাসের ॥ এদিকে মির্জা আব্বাসের অনুস্থিতিতে স্বামীর পক্ষে সিটি নির্বাচনে জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন আফরোজা আব্বাস। তিনি বুধবার রজধানীর সকাল থেকেই পলাশী বাজার থেকে শুরু করে আজিমপুর কলোনি, শাহসাহেব রোড, লালবাগ, কামরাঙ্গিরচর বড়গ্রাম এলাকায় প্রচার চালান। এ সময় তিনি বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে স্বামীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। মির্জা আব্বাসের প্রতীক সংবলিত লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, মির্জা আব্বাসের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে বিভিন্নভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। পুলিশী হয়রানির বিষয় উল্লেখ করে বলেন নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দায়ের ও জামিন না দেয়ায় মাঠে নামতে পারছেন তারা। পুলিশী হয়রানির ভয়ে অনেকেই নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে ইসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসব বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তাবিথ আউয়ালের সংশয় ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন উত্তরের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ এম আউয়াল। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সিটি নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে তাহলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে উল্লেখ করেন। তাবিথ এম আউয়াল বুধবার তিনটার দিকে শ্যামলী খেলার মাঠ থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, কৃষি মার্কেট, রিং রোড, লালমাটিয়ায় নির্বাচনী প্রচারের অংশ নেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট সংলগ্ন এক পথসভায় অংশ নিয়ে মওদুদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে তাবিথ আউয়ালকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে। বিএনপি ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ২৮ তারিখের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নীরব ভোটে বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এ সময় তাবিথ আউয়াল বলেন, ভোটারদের স্বতস্ফূর্ত সমর্থনকে ব্যালটের মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে মাহী বির প্রচার শুরু ॥ এদিকে ঢাকা উত্তরের বিকল্পধারা মেয়র প্রার্থী মাহী বি চৌধুরী বুধবার পরিচ্ছন্ন শহর ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির সেøাগান নিয়ে রাস্তা ঝাড়ুর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এ সময় তিনি বলেন মেয়র নির্বাচিত হলে জনগনের জানমালের নিরাপত্ত নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচনী প্রচারের অংশ নিয়ে রাজধানীর কালশী মোড়ে আয়োজিত একটি পথসভায় বলেন, মেয়র হলে প্রধান এজেন্ডা হবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এদিকে ঢাকা উত্তরের সিপিবির মেয়র প্রার্থীর আব্দুল্লাহ আল ক্বাফির পক্ষে রাজধনীর কড়াঈল এলাকায় নির্বচনী প্রচার চালিয়েছেন দলের উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান। তিনি বলেন সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে ক্বাফিকে নির্বাচিত করতে হবে। এদিকে ক্বাফির নির্বাচনী অঙ্গীকার আজ ঘোষণা কর হবে বলের দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে এ অঙ্গীকার ঘোষণা করা হবে।
×