ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাতারবাড়ীতে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এমওইউ সই

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

মাতারবাড়ীতে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এমওইউ সই

স্টাফ রিপোর্টার॥ সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বিদ্যুত বিভাগ। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুত বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর হয়। সিঙ্গাপুরের স্যান্ড এক্সপো এ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে বুধবার বিকেলে সমঝোতাটি স্বাক্ষর হয়। এর আওতায় সিঙ্গাপুরের কোন রাষ্ট্রীয় কোম্পানি দেশের কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে ৭০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করবে। সমঝোতায় বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন এবং সিঙ্গাপুরের ইন্টারন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টেও ইং চিং স্বাক্ষর করেন। বিদ্যুত মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ খুবই উজ্জ্বল ও ইতিবাচক। বিনিয়োগের জন্য আমরা উদ্দীপনা ও উৎসাহ প্রদানের ব্যবস্থা করেছি। বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বিদ্যমান রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ছাড়াও ২১টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। বিনিয়োগ বোর্ডে ওয়ান স্টপ সার্ভিস রয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যুতখাতে বিনিয়োগের বিশেষ সুযোগ রয়েছে। গত ছয় বছরে এ খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ১৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, নিশ্চই সিঙ্গাপুর বাংলাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন আরও গাঢ় করবে। সমঝোতা স্মারক চুক্তি অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র প্রতিমন্ত্রী লী ইয়াই শিয়ান, বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম ও কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ কাশেম উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, এর আগে ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের সঙ্গে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে এমওইউ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারত এবং চীনের সঙ্গে দুটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দুটি কেন্দ্রের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ কোম্পানি রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরপত্রও আহ্বান করেছে। এছাড়া পটুয়াখালিতে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির সঙ্গে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে যৌথমূলধনী কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া চীনের আরও একটি কোম্পানির সঙ্গে পিডিবি এমওইউসহ করেছে। বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির সঙ্গে সিঙ্গাপুরের কোন কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে। সিঙ্গাপুর সরকার বলছে এমওইউ স্বাক্ষরের পরই কোন কোম্পানিকে তারা আমাদের এখানে কাজ করতে দিতে চায় তা জানাবে। বিদ্যুত কেন্দ্রটি প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি বিদ্যুত হাবে নির্মাণ করা হবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, অন্য যৌথ বিনিয়োগের কেন্দ্রগুলোর মতো এখানেও একই ব্যবস্থা থাকবে। সিঙ্গাপুরের কোন জাতীয় কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির আধাআধি মালিকানা থাকবে। একইসঙ্গে অর্ধেক বিনিয়োগও করতে হবে। এর পরিচালনা পর্ষদেও সমান সংখ্যক বাংলাদেশ এবং সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি থাকবে। সাধারণত দেখা যায় এ ধরনের প্রক্রিয়ায় ১৫ ভাগ করে ৩০ ভাগ অর্থ কোম্পানি বিনিয়োগ করে। বাকি ৭০ শতাংশ অর্থ ঋণ হিসেবে নেয়া হয়। বিদ্যুত বিভাগ জানায়, কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে আমাদের দেশের অভিজ্ঞতা কম হওয়ায় বড় বিনিয়োগ পাওয়া কঠিন হচ্ছে। এজন্য বৃহত কোন কোম্পানি যাদের কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের মাধ্যমে কেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে বিদ্যুত কেন্দ্রর রক্ষণাবেক্ষণেও দক্ষ জনবল গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
×