ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বদেশ রায়

যে ফাঁসির ভেতর দিয়ে হারানো বাংলা ফিরে আসবে

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

যে ফাঁসির ভেতর দিয়ে হারানো বাংলা ফিরে আসবে

যুদ্ধাপরাধীর বিচার যে এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে শেষ হবে এ নিয়ে মনে হয় বোকা, বুদ্ধিমান, অতিবুদ্ধিমান কারও কোন সংশয় নেই। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর হলে বাংলাদেশে যে কেবল আনন্দ মিছিল ছাড়া আর কিছু হবে না, তাও স্পষ্ট। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সারাক্ষণ ব্যঙ্গ করত যে সাকা চৌধুরী, তার ফাঁসির দিনেও বাংলাদেশে কারও কোন দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত হবে না। বাংলাদেশকে এই বাস্তবতায় নিয়ে এসেছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু এই ক’জন শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও সাজা কার্যকর হলে কি বাংলাদেশ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির হাত থেকে মুক্তি পাবে? না, পাবে না। কারণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী চিন্তাধারা স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের একটি অংশের ভেতর প্রবাহিত করা হয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে আজ অবধি অবিরাম দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির চেষ্টার ভেতর দিয়ে এ কাজ সম্ভব হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি শক্তি স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। এর ভেতর সব থেকে ক্ষতিকর হচ্ছে, একটি কনফিউজড জেনারেশন। জাসদও পরে তার বহু অংশ এবং ১৯৭৫ পরবর্তী কমিউনিস্ট পার্টির ভেতর দিয়ে এই কনফিউজড জেনারেশনটি তৈরি হয়েছে। তারা তথাকথিত জ্ঞানের মাধ্যমে, স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী শক্তি আওয়ামী লীগ ও ১৯৭৫-এর প্রতিবিপ্লবী শক্তির তৈরি বিএনপি, জাতীয় পার্টিকে এক হিসেবে প্রকাশ করে। এদেরই তৈরি দুই নেত্রী শব্দটি। যার সব থেকে বড় অবদান কমিউনিস্ট নেতা সাইফুদ্দিন মানিকের এবং শ্রদ্ধেয় মরহুম সাংবাদিক ফয়েজ আহমদের। এদের সঙ্গে যোগ হয়েছে, বিভিন্ন পেশায় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে সামরিক আনুকূল্যে যাদের বড় করা হয়েছে তারা। সর্বোপরি, ১৯৭৫ পরবর্তী প্রতিবিপ্লবী শক্তির গড়ে তোলা অর্থনীতি। যাকে এখন অনেকে মৌলবাদী অর্থনীতি হিসেবে চিহ্নিত করছেন। এই কনফিউজড ও প্রতিবিপ্লবী সামরিক শক্তির আনুকূল্যে গড়ে ওঠা শ্রেণীটি দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে কীভাবে এখনও পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে তা কিন্তু বিস্তারিত দেশের মানুষ জানতে পারছে না। কারণ, তাদের আছে একটি তথাকথিত নিরপেক্ষতার আবরণ। সত্যের বিপক্ষে নিরপেক্ষ বলে যে কিছু নেই, এটা তাদের গোয়েবলসীয় কারণে দেশের মানুষ মাঝে মাঝেই বুঝতে ভুল করছে। যে জন্য শেখ হাসিনাকে প্রতি পদক্ষেপে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই তাঁকে পাহাড়সম বাধা ডিঙাতে হচ্ছে। এমনকি তাঁকে স্ট্যালিনের মতো শেষ যুদ্ধে জেতার জন্য হিটলারের সঙ্গেও সন্ধি করতে হচ্ছে, যা কিনা অনেক সময় আমাদেরও ক্ষুব্ধ করে তোলে হঠাৎ। কিন্তু পরবর্তীতে শান্ত মাথায় ভেবে দেখি, না তিনিই সঠিক। ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মূল নেতা কিন্তু গোলাম আযম ছিল না, এখন মতিউর রহমান নিজামীও নয়। বাস্তবে বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের মূল নেতা প্রথমে জিয়াউর রহমান পরে ক্ষমতায় এরশাদ ও রাজপথে খালেদা। ২০০১ সাল থেকে এককভাবে খালেদা। আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে খালেদা প্রকাশ্যে রাজাকার-আলবদর সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর মহিলা আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন। খালেদা যে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন তা জনগণের সামনে প্রথমে লেখক-বুদ্ধিজীবীদের ভেতর বলেন মুনতাসীর মামুন ও রাজনীতিবিদদের ভেতর মতিয়া চৌধুরী। খুব মোটা দাগে যদি হিসাব করা যায় তাহলে দেখা যায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ফাঁসির রায় শুরু হওয়ার পর থেকে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যত সাধারণ মানুষ হত্যা করা হয়েছে, তার সব হত্যাকা-ের নেতৃত্ব দিয়েছেন খালেদা। যুদ্ধাপরাধী বিচার ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে ফাঁসির রায় দিলে, জামায়াত কিন্তু মাঠে নামতে সাহস পায়নি। কারণ, তখন সারাদেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ তরুণ প্রজন্ম মাঠে। খালেদা তখন পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইএর কিছু সদস্যের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে মিটিং করছিলেন। সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেই তিনি আইএসআইএর নির্দেশ মতো তার রাজাকার, আলবদর দিয়ে তৈরি বিশদলীয় জোটের মিটিং ডাকেন এবং সাঈদীর ফাঁসির রায়কে পরিকল্পিত হত্যার উদ্দেশ্য বলে তার প্রতিবাদে তার দলীয় কর্মীদের নৈরাজ্য ও হত্যাযজ্ঞে নেমে পড়তে বলেন। নেমে পড়তে বলেন বিশদলীয় জোটকে। পাশাপাশি এই যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য খালেদা, জামায়াতের আন্দোলনের সঙ্গে তার তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন জুড়ে দেন। যা ছিল সম্পূর্ণ তার একটি কৌশল মাত্র। এর পরে সাত মাসজুড়ে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন খালেদা। তার নেতৃত্বে দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়। পুলিশ, বিজিবিসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ খালেদার নেতৃত্বে হত্যা করা হয়। যার ভেতর দুই বছরের শিশু ছিল, নারী ছিল। উপাসনালয় ভাঙ্গা হয় ৯৭৮টির মতো। বাস্তবে খালেদা সৃষ্টি করেছিলেন মিনি একাত্তর। তার এই মিনি একাত্তরের কালে জামায়াতের মহিলা আমির হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমবেত তরুণদের প্রকাশ্যে নষ্ট প্রজন্ম হিসেবে চিহ্নিত করেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সমবেত তরুণদের মঞ্চের বিরুদ্ধে খালেদা হেফাজতিদের দাঁড় করান। আমাদের মিডিয়ার বড় একটি অংশকে এই হেফাজতিদের তখন তৌহিদী জনতা বলতেও শুনেছি। খালেদার উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানের আমার দেশ পত্রিকা তখন এই হেফাজতিদের উস্কানি দেয়ার মূল মুখপত্র শুধু নয় তার পত্রিকা অফিসটিও হয়ে উঠেছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্রের একটি কেন্দ্র। ওই সময়ে একমাত্র আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ আশরাফ শুধু ওই তথাকথিত হেফাজতিদের কড়া হুঁশিয়ারি দেননি- তিনি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিলেন, ওখানে হেফাজতের নামে জড়ো হয়েছে রাজাকার, আলবদর ও তাদের সন্তানরা। এই রাজাকার ও রাজাকারের সন্তানদের দিয়ে শুধু ঢাকা শহর ধ্বংস নয়, চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানোর নেতৃত্ব দেন খালেদা। প্রকাশ্যে ঢাকাবাসীকে ওই রাজাকার, আলবদর ও তাদের সন্তানদের পাশে নেমে আসতে বলেন। শেখ হাসিনা শুধু খালেদার ওই মিনি একাত্তরকে মোকাবেলা করেননি, তিনি তার ভেতর বাংলাদেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন। নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শক্তিও প্রতিষ্ঠিত করেন। খালেদাও এর পরে আবার এক বছর সময় নেন, তার রাজাকার ও নব্য রাজাকার, আলবদর শক্তিকে সংগঠিত করার। এর পরে আবার একই কায়দায়, সেই মিনি একাত্তরের স্টাইলে গণহত্যায় নামে। নিজের বাসা ছেড়ে অফিসে বসে একটি বাহিনী নিয়ে ওই গণহত্যার নেতৃত্ব দেন। একাত্তরের থেকে বর্তমানের পৃথিবীতে আরও একটি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। একাত্তরে দেশে দেশে ছিল একটি জাতীয়তাবাদী জাগরণ। এখন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ধর্মের নামে সৃষ্টি হয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠী। বাংলাদেশে জামায়াত এতদিনে ওই আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিত। এখন সে নেতৃত্ব তুলে নিয়েছে খালেদা নিজ কাঁধে। আন্তর্জাতিক জঙ্গী আল কায়েদা, আইএস, বোকো হারামের ট্রেনিংপ্রাপ্তদের দিয়ে ৯৩ দিন ধরে দেড় শ’র ওপর সাধারণ মানুষকে হত্যার নেতৃত্ব দেন খালেদা। পৃথিবীতে সব থেকে জটিল যুদ্ধ জঙ্গীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। শেখ হাসিনাকে সে যুদ্ধ করতে হয়েছে। আপাতত তিনি জিতেছেন। ২০১৩-এর সাত মাস ও ২০১৫-এর ৯৩ দিনে এই সরাসরি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে খালেদার নেতৃত্বে শিশু, নারীসহ ৮শ’ সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আর কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। এই গণহত্যার সুপ্রিম রেসপনসিবিলিটি খালেদার। তাই বুদ্ধিজীবী হত্যার সুপ্রিম রেসপনসিবিলিটি বিচারে মতিউর রহমান নিজামীর যেমন বিচার ও ফাঁসি হয়েছে এই ৮শ’ নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ হত্যার দায়ে খালেদার ক্ষেত্রেও একই রকম বিচার হতে হবে। সত্যি অর্থে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে পথেই এগুচ্ছে। শেখ হাসিনাকে এখন পাড়ি দিতে হচ্ছে একটি মিনি একাত্তর। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টে বিজয়ী পাকিস্তান পন্থীদের বিপক্ষে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নিয়ে যুদ্ধ করছেন। এ যুদ্ধে তিনি ধীরে ধীরে বিজয়ী হচ্ছেন। শুরুতে তিনি ১৯৭৫-এর ঘাতকদের বিচার ও ফাঁসি কার্যকর করেছেন। এর পরে তিনি একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের কাজ শুরু করেন। শুরুতে দেশের মানুষের মনে নানা সন্দেহের দোলাচল ছিল। কিন্তু দুটি ফাঁসি কার্যকর করার ভেতর দিয়ে সে দোলাচল শেষ হয়েছে। এখন নিশ্চিত, বাকি ফাঁসিগুলো হবে। অর্থাৎ আরেকটি অধ্যায়ের এখন শেষ পর্যায়ে। এর পরবর্তী অধ্যায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক জঙ্গীদের ও নব্য রাজাকার-আলবদরদের নেতা খালেদা জিয়া। প্রায় আট শ’ মানুষ হত্যার নেতৃত্ব খালেদা দিয়েছেন। আরও কিছু হত্যার চেষ্টা করবেন। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক যুদ্ধের ট্রেন যে পথে এগুচ্ছে তাতে এই মানবতাবিরোধী এই অপরাধীর বিচার অবশ্যই এবং খুব দ্রুতই শুরু হবে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, তার আলামত তো দেখতে পাচ্ছি না। বরং শেখ হাসিনা নব্য রাজাকার, ৮শ’ মানুষ হত্যাকারী, জঙ্গী নেত্রীর সন্তান মারা গেলে তার বাসায় দেখা করতে যাচ্ছেন। অপমানিত হয়ে ফিরে আসছেন। পহেলা বৈশাখে এই হত্যাকারীকে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠাচ্ছেন। মাহমুদুর রহমানের অফিসে বসে, মাহমুদুর রহমানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হেফাজতিরা মানুষ হত্যা করে। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করে। ওই মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করার পরে তার মুক্তি চেয়ে পনেরো সম্পাদক বিবৃতি দেন। শেখ হাসিনা তাদের একজনকে একুশে পদক দেন। এর পরে স্বভাবতই মনে হয়, শেখ হাসিনা হয়ত নব্য রাজাকারদের নেতা, ৮শ’ মানুষ হত্যাকারীর বিচার করবেন না। পনেরো সম্পাদকের একজনকে একুশে পদক দেয়া, খালেদার বাসার দরজায় যাওয়া, পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানো- সব কিছুতেই ক্ষুব্ধ হতে দেখেছি এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষকে। এমনকি নিজেও ক্ষুব্ধ হয়েছি। কিন্তু শেখ হাসিনাকে যখন শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যা নয়, শুধু একজন প্রধানমন্ত্রী নয়, একটি জাতি বা একটি আদর্শকে রক্ষার নেতা হিসেবে চিন্তা করেছি, তখন আর ক্ষোভ থাকেনি। তখন কিছুটা হলেও তাঁকে বুঝতে পেরেছি। কারণ, শেখ হাসিনা আমাদের বঙ্গবন্ধুর মতো যিযাশ নন, ক্রশবিদ্ধ এক মহান আদর্শ যিনি সারাক্ষণ আছেন আমাদের বুকের মাঝে। শেখ হাসিনা একটি আদর্শ ও জাতি রক্ষার যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া স্ট্যালিন ও চার্চিলের মতো রাজনৈতিক সেনাপতি। শেখ হাসিনা জানেন, যুদ্ধে জয়ের জন্য মূল শত্রুর কাছ থেকেও সময় চেয়ে নিতে হয়। যেমনটি নিয়েছিলেন স্ট্যালিন। হিটলারের উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপে জর্মন প্রাশা বর্ণবাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করা ও সমাজতন্ত্রকে ধ্বংস করা। সেনাপতি স্ট্যালিন সেটা বুঝেছিলেন সবার আগে। তাই চূড়ান্ত লড়াইয়ে হিটলারকে পরাজিত করার জন্য হিটলারের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। তিনি জানতেন, হিটলার এই চুক্তি ভঙ্গ করবেন। তার পরও নিজেকে সর্বোচ্চ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করার যতটা সময় পাওয়া যায় সেটা নিয়েছিলেন স্ট্যালিন। বাস্তবে স্ট্যালিন কিন্তু পরাজিত করেছিলেন সারা পৃথিবী-আগ্রাসী যুদ্ধাপরাধী হিটলারকে। বাংলাদেশের রাজনীতি যেদিকে এগুচ্ছে তাতে এখন এটা স্পষ্ট, শেখ হাসিনাই বিচার করবেন মানবতাবিরোধী অপরাধী, ৮শ’ মানুষ হত্যার সর্বোচ্চ নেতা খালেদার। এই মানবতাবিরোধী অপরাধের সুপ্রিম রেসপনসিবিলিটি যার কাঁধে তার বিচারের রায় কী হয় সে জন্য আর অন্য কোন দেশের উদাহরণ খোঁজার দরকার নেই। মতিউর রহমান নিজামীর বিচার ও রায় তার উদাহরণ। তাই আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে খালেদার জন্য মতিউর রহমান নিজামীর পথই নির্ধারণ করে দেয়। অন্য কোন পথ নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত একটি গানের লাইন ছিল, হারানো বাংলাকে আবার ফিরে পাব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালী তার বাংলাদেশকে আবার হারিয়ে ফেলে। ইতিহাসের ও রাজনীতির গতি এখন এ সত্য বলে দেয়, নব্য রাজাকারদের নেতা খালেদার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও ফাঁসির ভেতর দিয়েই বাংলাদেশ ফিরে পারে তার হারানো বাংলাকে। এর আগে নয়। [email protected]
×