ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ ১৯ এপ্রিল

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৪ এপ্রিল ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ ১৯ এপ্রিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিলের জন্য ১৯ এপ্রিল রবিবার দিন ধার্য করা হয়েছে। আরেক মামলায় পটুয়াখালীর রাজাকার ফোরকান মল্লিকের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সত্যরঞ্জন রায়ের জেরা করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। বুধবার পুনরায় তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করার জন্য দিন রাখা হয়েছে। বাগেরহাটের তিন রাজাকারের পক্ষে আরও একজন সাফাই সাক্ষীর জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এসব আদেশ প্রদান করেছে। প্রসিকিউশন পক্ষ জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দেয়ার জন্য এক সপ্তাহের সময় আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে ১৯ এপ্রিল এ দিন নির্ধারণ করেছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছে। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম। ট্রাইব্যুনালে সময়ের আবেদন করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও রেজিয়া সুলতানা বেগম চমন। ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও গুমের ১০টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে তদন্ত সংস্থা। আসামিরাÑ আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেন, অধ্যাপক শরীফ আহম্মেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মোঃ আবদুল মান্নান, মোঃ আবদুল বারী, মোঃ হারুন, মোঃ আবুল হাশেম, শামসুল হক ওরফে বদর ভাই ও এস এম ইউসুফ আলী। প্রসিকিউশনের আবেদনে গত ৩ মার্চ আশরাফ হোসেনসহ ঐ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। পরোয়ানা জারির পর ওই দিনই বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে অভিযান চালিয়ে জামালপুর শহরের নয়াপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে শামসুল হককে ও ফুলবাড়িয়ার জাহেদা শফির মহিলা কলেজ গেট প্রাঙ্গণ থেকে ইউসুফ আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দুইজনকে তদন্তের স্বার্থে গত ৬ মার্চ সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, জামালপুরে রাজাকার-আলবদর বাহিনী ও শান্তি কমিটি গঠন, স্থানীয় সাধনা ঔষধালয় দখল করে আলবদর বাহিনী ও শান্তি কমিটির কার্যালয় স্থাপন এবং সিংহজানি হাইস্কুলে আলবদরদের প্রশিক্ষণ প্রদান। এছাড়া পিটিআই হোস্টেল ও আশেক মাহমুদ কলেজের ডিগ্রী হোস্টেল দখল করে নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে সেগুলোতে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে। একাত্তরের ৭ জুলাই ইয়াদ আলী ম-লকে নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়। একাত্তরের ৭ জুলাই আব্দুল হামিদ মোক্তারকে তার গ্রামের বাড়ি মৈশা ভাদুরীয়া থেকে আটক করা হয়। পরে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়। একই দিন শামসুল আলমকে আটক করে নির্যাতন করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি মোঃ সাহিদুর রহমানকে অপহরণের চেষ্টা এবং মহির শেখকে অপহরণ, আটক ও নির্যাতন করা হয়। একাত্তরের ৭জুলাই জামালপুরের ভাইস-চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানসহ ১৭ জনকে গুলি করে হত্যা করে পানিতে ফেলে দেয়া হয়। একাত্তরের ৯ জুলাই আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন মল্লিককে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়া হয়। তৎকালীন আশেক মাহমুদ কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক মহিদুর রহমানকে অপহরণের চেষ্টা। একাত্তরের মে থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আশেক মাহমুদ ডিগ্রী কলেজ হোস্টেলে আলবদর ক্যাম্পে নির্যাতন কেন্দ্রে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন, হত্যা ও লাশ গুম করা হয়। একাত্তরের মে থেকে ১১ডিসেম্বর পর্যন্ত পিটিআই জামালপুরের নির্যাতন কেন্দ্রে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে আটক, নির্যাতনপূর্বক হত্যা ও লাশ গুম করা হয়।
×