ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার, যাচ্ছেন দ্বারে দ্বারে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৪ এপ্রিল ২০১৫

প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার, যাচ্ছেন দ্বারে দ্বারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনের আগে বেশি সময় হাতে নেই। তাই প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। খেয়ে না খেয়ে তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, লাখ লাখ ভোটারের কাছে যাওয়া সহজ বিষয় নয়। তাই তারা নির্বাচনের আগে যতটুকু সময় পাচ্ছেন তার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হবে। এদিকে সোমবার ঢাকার সব মেয়র কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্র্থীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনসংযোগ করেছেন। এ সময় তারা প্রার্থিতার সমর্থনের ভোট দেয়া জনগণের কাছে আহ্বান জানান। সবুজ বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি খোকনের ॥ সোমবার ঢাকা দক্ষিণের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন সকালে সূত্রাপুর এলাকায় জনসংযোগ ও পথসভা করেন। বিকলে তিনি রাজধানীর সবুজবাগের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের জনসংযোগ ও পথসভা করেন। পথসভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সাধারণ মানুষ এতে অংশ নেন। তিনি মুগদা, মা-া, বাসাবো, আহাম্মদবাগ, মায়াকানন, কদমতলা, রাজারবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ চালান। একাধিক পথসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। রাতে মাদারটেকের আব্দুল আজিজ স্কুল এ্যান্ড কলেজে সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সে বিষয়টি উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান কেউ কেউ। সোমবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় তারা এ আহ্বান জানান। প্রার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজনের শেষ দিনে সোমবার ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এর আগে গত শনিবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ইসি। এরপর গত রবিবার ঢাকা উত্তরের প্রার্থীদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের নিয়ে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ মেয়র প্রার্থীসহ কয়েকশ’ কাউন্সিলর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে তারা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তাদের মতামত তুলে ধরাসহ বিভিন্ন অভিযোগ কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিন সিটি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। নির্বাচনে ভোট কারচুপিসহ, কেন্দ্র দখলের মতো কোন বেআইনী কাজ বরদাস্ত করা হবে না। তিনি সব প্রার্থীকে নির্বাচনী আইন মেনে চলার আহ্বান জানান। প্রার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রেই সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক ও এজেন্টেদের উপস্থিতিতে ভোট গণনা এবং ভোটের ফল প্রকাশ করা হবে। সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে কমিশনের আলাদা বৈঠক হবে। সে বৈঠকেই সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। নির্বাচনে তৈরিতে এবং ভোটার ও কেন্দ্রে সুরক্ষায় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তিনি প্রার্থী ও ভোটারদের সর্বাত্মক সহযোগিত কামনা করেন। তিনি বলেন, কোন বিষয়ে অনিয়ম হলে বা অনিয়মের অভিযোগ থাকলে সুনির্দিষ্টভাবে তা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। পরে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ ছাড় পাবে না। সিইসি বলেন, আমরা চাই নির্বাচনে কলো টাকার ও পেশীশক্তি বন্ধ হোক। হলফনামায় কোন প্রার্থী ভুল তথ্য দিলে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না। কারও মুখ চিনে নয়। অভিযোগ পাওয়া গেলে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে উল্লেখ করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের আগে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের অভিযোগ ও মতামত তুলে ধরেন। এদিকে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা কমিশনের নানা নির্বাচন প্রচারের নানা হুমকি পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা বলেন, হুমকির কারণে এখন তারা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। এ কারণে ভোট গ্রহণের সাতদিন আগ থেকে সেনা মোতায়েনের দাবি করেন। নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার (অব) জাবেদ আলী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান প্রমুখ।
×