ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এনামুলের জোড়া গোলে মুক্তিযোদ্ধার জয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

এনামুলের জোড়া গোলে মুক্তিযোদ্ধার জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র। রবিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেলে অনুষ্ঠিত ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধা। তবে প্রথমেই গোল হজম করে পিছিয়ে পড়েছিল দলটি। স্ট্রাইকার এনামুল হকের জোড়া গোলে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মুক্তিযোদ্ধা। প্রথম ম্যাচেও ফেনী সকার ক্লাবের বিরুদ্ধে একই ব্যবধানে জিতেছিল তারা। শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবের সঙ্গে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এখন যৌথভাবে শীর্ষে মুক্তিযোদ্ধা। এটি ছিল চট্টগ্রাম আবাহনীর টানা দ্বিতীয় পরাজয়। প্রথম ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে যেভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী সেই ছাপটা দেখা যায়নি তাদের খেলায় রবিবার। মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সমান তালে খেলেছে বন্দরনগরীর দলটি। বড় দল হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার খেলায় উন্নতির ছাপ চোখে পড়েনি। উল্টো যেন তারাই কোণঠাসা ছিল প্রথমার্ধে। চট্টগ্রাম আবাহনীও বেশ আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়েছে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে এভাবেই খেলা এগিয়ে যেতে থাকে। তবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না কোন দলই। শেষ পর্যন্ত প্রথম গোলের দেখা মেলে প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে। সংঘবদ্ধ এক আক্রমণের ৪৫ মিনিটে গোল করে মুক্তিযোদ্ধা শিবিরকে হতাশায় ছেয়ে দেয় চট্টগ্রাম আবাহনী। মুক্তিযোদ্ধার সীমানায় ডানপ্রান্তে ফ্রি-কিক পায় চট্টগ্রাম আবাহনী। ডিফেন্ডার মনসুর আলম দারুণ এক বাঁকানো শট নেন। বলটি মুক্তিযোদ্ধার ডি-বক্সে বিপজ্জনক জায়গায় পড়ার পর চট্টগ্রাম আবাহনীর স্ট্রাইকার সুমন আলী সুযোগ হাতছাড়া করেননি। বল পেয়ে তিনি নিচু করে তীব্র শটে লক্ষ্যভেদ করেন (১-০)। পিছিয়ে থেকে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে মুক্তিযোদ্ধা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই কিছুটা গুছিয়ে ওঠে মুক্তিযোদ্ধা। উপহার দিতে থাকে ছন্দময় ফুটবল। গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে চেপে ধরে চট্টগ্রাম আবাহনীকে। এ কারণে সুফল পেতেও দেরি হয়নি। ৫৩ মিনিটের সময় সংঘবদ্ধ এক আক্রমণে সমতা ফেরায় তারা। সেনেগালের স্ট্রাইকার কামারা সার্বা দীর্ঘ এক পাসে বল বাড়িয়ে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা স্ট্রাইকার এনামুল হকের দিকে। সুযোগসন্ধানী এ ফরোয়ার্ড ভুল করেন। বক্সের ভেতর থেকে ভলি করে বল জড়িয়ে দেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলে (১-১)। সমতায় ফিরলেও মুক্তিযোদ্ধাকে ছাড় দেয়নি চট্টগ্রাম আবাহনী। চলতে থাকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। দারুণ কিছু আক্রমণ রচনা করে কাঁপিয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধার রক্ষণদুর্গ। ৭৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ এক সুযোগও পেয়েছিল তারা। কামারা মামাদো দারুণ এক ক্রস করেছিলেন। চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক আব্দুল হান্নান রাজু দারুণ এক হেড নিয়েছিলেন। এ যাত্রা সৌভাগ্যই বলতে হবে মুক্তিযোদ্ধার। ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে বলটি অতিক্রম করে চলে যায়। ফলে নস্যাত হয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনীর এগিয়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনাময় আক্রমণ। তবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে উভয় দল। গোল করে এগিয়ে যেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। বিশেষ করে জয় পেতে উন্মুখ মুক্তিযোদ্ধা একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে। ৮৩ মিনিটে সুফল আসে গোছাল এক আক্রমণ থেকে। কাঞ্চনের একটি দুর্দান্ত হেড পাঞ্চ করে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক মোহাম্মদ এরশাদ। সেখান থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো এনামুল বল পেয়ে আর ভুল করেননি এনামুল। দুর্দান্ত শটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করে এগিয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধাকে (২-১)। বাকি সময়টাতে আর তেমন কোন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোন দলই। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই স্বস্তিতে মাঠ ছাড়ে মুক্তিযোদ্ধা।
×