ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশের কাছাকাছি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশের কাছাকাছি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য নাকচ করে দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের কাছাকাছি হবে। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তিনি আরও বলেন, তাদের বক্তব্য আমি শুনেছি। তবে আমি এটার কোন দাম-টাম দেই না। রবিবার বিকেলে সচিবালয়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠক করেন। উল্লেখ্য, রবিবার সকালে বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় যে, গত তিন মাসের অবরোধের কারণে বাংলাদেশের ২০২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এবং এর ফলে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশের কাছাকাছি। এদিকে, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছিল। কিন্তু টানা হরতাল-অবরোধ চলাকালে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন যে, বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হবে। এ ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহেও সচিবালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশের কাছাকাছি। তবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জোর দিয়ে বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের কাছাকাছিই হবে। তিনি বলেন, প্রতিবছরই বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি বিভিন্ন ধরনের পূর্বাভাস দিয়ে থাকে। এগুলোর সবই ভুল। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেন, খালেদার জিয়ার অত্যাচারে দেশের অর্থনীতিকে ভীষণ মূল্য দিতে হচ্ছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ। বিনিয়োগকারীরা এ সময় আসছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তারা নতুন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে। এছাড়া রবিবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংজিয়াং ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজুহিকো সাক্ষাত করেছেন। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বৈঠকে যোগ দিতে অর্থমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ॥ বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি। আগামী ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মুহিত। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান, অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল ইসলাম এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শাহেদুর রহমান। বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প পরিচালক মোহাম্মদ তারেক ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং ইকোনমিক মিনিস্টার সাহাবউদ্দিন পাটোয়ারি ওয়াশিংটন থেকে প্রতিনিধিদলে যোগ দেবেন। প্রতিবছরই এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গবর্নরসহ সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা অংশ নেবেন। বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের স্প্রিং মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ছাড়াও উচ্চপর্র্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। এছাড়া আর্থিক খাতের মোড়ল-এ দুই সংস্থার বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে অর্থমন্ত্রী নিউইয়র্কে ১৪-১৫ এপ্রিল জাতিসংঘ আয়োজিত ‘গ্লোবাল পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ইন ইনেশিয়েটিভস ইন পোস্ট ২০১৫ : ফাইন্যান্সিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেবেন।
×