ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার মেয়র প্রার্থীরা প্রচারে ব্যস্ত দিন কাটালেন

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১২ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকার মেয়র প্রার্থীরা প্রচারে ব্যস্ত দিন কাটালেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী মাঠ এখন সরগরম। দিনভর নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকার উত্তর-দক্ষিণের প্রার্থীরা। শনিবার সকাল থেকেই প্রায় সব মেয়র প্রার্থীই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। ঢাকা দক্ষিণের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন ইলিশ প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে পুরান ঢাকার ধূপখোলা থেকে শনিবার নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। অপরদিকে বিএনপির সমর্থিত মির্জা আব্বাস এখনে প্রকাশ্যে বের না হলেও তার পক্ষে স্ত্রী আফরোজা আব্বাস নির্বাচনী প্রচার অব্যাহত রেখেছেন। তিনি রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে নির্বাচনী জনসংযোগ শুরু করেন। অপর দিকে ঢাকা উত্তরের বিএনপির সমর্থিত তাবিথ আউয়াল মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। গত শুক্রবার মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা চূড়ান্ত নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নিজ প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের কাছে আহ্বান জানান তারা। এছাড়া তাদের পক্ষে পোস্টার ছেপেও প্রচার শুরু হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে মোট ৪৮ মেয়র প্রার্থী প্রতিযোগিতায় নামলেও ভোটাররা ধারণা করছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে মূল লড়াই হবে। ভোটারদের আগ্রহ এই দুই দল সমর্থিত প্রার্থীদের ঘিরে। এর বাইরেও সিপিবি, বিকল্পধারা ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান। তারা উল্লেখ করেন ভোটাররা যেভাবে তাদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে তাতে জয়ের বিষয়ে তারাও প্রায় নিশ্চিত। ঢাকা উত্তরে ১৬ জন মেয়র প্রার্থী অংশ নিলেও ভোটাররা ধারণা করছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক ও বিএনপি সমর্থিত তাবিথ এম আউয়ালের মধ্যে মূল লড়াই হবে। এ সিটিতে আনিসুল হক টেবিল ঘড়ি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বড় ছেলে তাবিথ এম আউয়াল লড়ছেন বাস প্রতীকে। দুজনেই এখন নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। গত ৭ এপ্রিল থেকে পিতার দোয়া ও মাতার কবর জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন আনিসুল হক। শনিবার তিনি তার পক্ষে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। এতে তিনি পরিচ্ছন্ন সবুজ, আলোকিত ও মানবিক ঢাকা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অপর দিকে তাবিথ এম আউয়ালের প্রার্থিতা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্বাচনী প্রচার একটু দেরিতে শুরু করেন। বিশেষ করে তার পিতা আব্দুল আউয়ালের প্রার্থিতা বাতিলের পর তিনি বিএনপির সমর্থন লাভের চেষ্টা করেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সমর্থন লাভ করেন। শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে কাওরান বাজারের অবস্থিত অম্বর শাহ মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে প্রচার শুরু করেন। শনিবারও তিনি দিনভর নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। এদিনে তিনি রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে আড়াই ঘণ্টা ধরে প্রচার চালান। বস্তি এলাকায় প্রচার শেষে তিনি বনানী ও গুলশান এলাকায় প্রচার চালান। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন ঠিকমতো কাজ করলে জয়ী হব। নির্বাচনী প্রচারের নেমে ভোটারদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি। রাজনীতিতে নতুন হলেও বাকি জীবন রাজনীতির মধ্যেই কাটাতে চান বলে উল্লেখ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা কর্মীরা প্রচারের অংশ নেন। এদিকে ঢাকা দক্ষিণেও ২০ জন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এখানে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন ও বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাসের মধ্যে। গত ৭ এপ্রিল থেকে সাঈদ খোকন নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। তার পরের দিনই মির্জা আব্বাসের পক্ষে তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস প্রচারে নেমে পড়েন। এর পর থেকে তারা অব্যাহতভাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে পুরোদমে নিজের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন উভয় প্রার্থী। তবে মির্জা আব্বাস এখনও আত্মগোপনে থাকায় তার স্ত্রীই এখন পর্যন্ত প্রচারে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন ইলিশ প্রতীকে এবং মির্জা আব্বাস মগ প্রতীকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছে। শুক্রবার ইলিশ প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নতুন মাত্রায় প্রচার শুরু করেন সাঈদ খোকন। ভোটারদের কাছে মাছ প্রতীক নিয়ে তাতে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। শনিবার ইলিশ মাছ প্রতীক হাতে নিয়ে রজধানীর পুরান ঢাকা ধূপখোলায় গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। ধূপখোলার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে পথসভা করে এ এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাস প্রকাশ্যে না আসলে নির্বাচনে তিনি বাড়তি সুবিধা পাবেন না। তিনি আব্বাসকে পালিয়ে না থেকে আদালতে গিয়ে জামিনের আবেদন করার পরামর্শ দেন। কোন অভিযোগে পালিয়ে বেড়ানো শুভ বুদ্ধির কাজ হতে পারে না। ভোটাররা এটা ভাল চোখে দেখবে না উল্লেখ করেন। ’৯৪ সালে ডিসিসি নির্বাচনে ঢাকার সাবেক মেয়র ও সাঈদ খোকনের পিতা মোহাম্মদ হানিফ ইলিশ মাছ প্রতীকে মির্জা আব্বাসকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
×