ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাঁচ একর জমির তরমুজ তছনছ

আমতলী হিন্দুপাড়ায় ফের হামলা, মন্দিরে ভাংচুর ॥ গ্রেফতার ৬

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১২ এপ্রিল ২০১৫

আমতলী হিন্দুপাড়ায় ফের হামলা, মন্দিরে ভাংচুর ॥ গ্রেফতার ৬

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ১১ এপ্রিল ॥ শুক্রবার গভীররাতে বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর টেপুড়া গ্রামের শংকর চন্দ্র বেপারীর বাড়িতে সন্ত্রাসীরা হামলা ও ওই এলাকার রাধা গবিন্দ মন্দির ভাংচুর করেছে। এ সময় শংকর বেপারীকে না পেয়ে তার ৫ একর ক্ষেতের তরমুজ কেটে ফেলেছে। শনিবার সকালে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্কুল শিক্ষক আবদুস ছালামসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উত্তর টেপুরা গ্রামে ৪০টি হিন্দু পরিবার বসবাস করছে। শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের পরাণ ব্যাপারী ও তার স্ত্রী পুষ্প রানীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধ হয়। এ বিরোধ মীমাংসা করতে হিন্দু সমাজের লোকজন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালেহ মন্দির আঙ্গিনায় সালিশ বিচারে বসেন। এ সময় পরাণ ব্যাপারী সালীশদার শংকর ব্যাপারীর মৃত পিতার সম্পর্কে কটূক্তি করে। এতে শংকর ক্ষিপ্ত হলে ওই গ্রামের স্কুলশিক্ষক আবদুস ছালাম পরাণের পক্ষ নিয়ে শংকরের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয়। দু’জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হলেও তাৎক্ষণিক বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়। ওইদিন বিকেলে আবদুস ছালামের ছেলে রিয়াজ মৃধা (২৪) তার পিতাকে অপমান করা হয়েছে বলে শংকরকে মন্দির প্রাঙ্গণে গালমন্দ ও জীবন নাশের হুমকি দেয় বলে শংকর সাংবাদিকদের বলেন। স্থানীয় হিন্দুরা অভিযোগ করেন ঘটনার দিন রাত ৩টার দিকে রিয়াজ মৃধা (২৪) ও তার বন্ধু মোস্তাফিজ শিকদারসহ ৭/৮ সন্ত্রাসী দেশী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রথমে শংকরকে খুঁজতে তার তরমুজ ক্ষেতে যায়। ওইখানে তাঁকে না পেয়ে তাঁর ৫ একর জমির শত শত তরমুজ কেটে ফেলে। সন্ত্রাসীরা শংকরকে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে খুঁজতে আসে। ওইখানেও তাকে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মন্দিরের বেড়া, দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে রাধা গোবিন্দ বিগ্রহ ফেলে দেয়। এ সময় মন্দিরের সেবাই নলিতা দাসী মন্দিরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। সেবাই সন্ত্রাসীদের দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর শনিবার কাকডাকা ভোরে সন্ত্রাসীরা শংকরের বসত ঘরে হামলা চালায়। খবর পেয়ে শনিবার সকালে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সুকুমার রায় ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোঃ আবদুল্লাহসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতের সন্দেহে আবদুস ছালাম মৃধা, পরাণ বেপারী, লোকমান মৃধা, ছালামের স্ত্রী রাহিমা বেগম, রিয়াজের স্ত্রী রাশিদা বেগম, তার শিশু কন্যা রীতাকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ওই দিন দুপুরে বরগুনা জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
×