ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোল্লাহাটে বাড়ি দখলমুক্ত হওয়ার দুইদিন পর

মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর, আগুন

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১২ এপ্রিল ২০১৫

মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর, আগুন

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোল্লাহাটে সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার ভোররাতে উপজেলার আটজুড়ি ইউনিয়নের কাঠাজোড়া গ্রামের বিশ্বাস বাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমৃত বিশ্বাস বলেন, ‘শনিবার ভোরে দুর্গা মন্দিরে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ঢুকে দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, অসুরের প্রতিমা ভাংচুরের পর তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা মন্দিরে আগুন জ্বলতে দেখে ছুটে যাই এবং পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি।’ এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মোলাহাট থানার এসআই জানান, জমাজমি সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটনার ২ দিন আগে মোল্লাহাট থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। উক্ত মামলায় হাবিবুর রহমান হাবির কন্যা ভানু বেগমকে (৪০) পুলিশ আটক করে। এ ঘটনায় মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মোল্লাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুল আলম। ওই মন্দির ঘেঁষা বাড়ির অমৃত বিশ্বাস (৩০), হিরণময় বিশ্বাস (৬০) ও পাশের বাড়ির ডাঃ স্বপন বিশ্বাসসহ (৫০) অনেকে জানান, এলাকার ঐতিহ্যবাহী বিশ্বাসবাড়িতে ৬৬ বছর আগে পাকা দালান বাড়ি নির্মাণ করেন সুধন্য বিশ্বাস। উক্ত সুধন্য বিশ্বাসের কোন সন্তান না থাকায় তার মৃত্যুর পর ওই ভবনটিতে থাকতেন তার ছোট ভাই হরিদাসের স্ত্রী চারু বালা বিশ্বাস। উক্ত চারু বালা বিশ্বাস প্রায় ২ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করায় দালানটি পড়ে থাকে। গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পার্শ্ববর্তী খাগড়াবুনিয়া গ্রামের নওয়াবালি সিকদারের ছেলে রাসেল সিকদার সপরিবারে ওই ঘরের দখল নেয়। তারা দাবি করে, ওই বাড়ি সুধন্যের ওয়ারিশদের থেকে কিনেছেন। এক পর্যায়ে এ ঘটনাটি স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের কাছে স্থানীয়রা জানান। তাঁর হস্তক্ষেপে বাড়িটি জবরদখল মুক্ত হয়। এ ঘটনায় হিরণ বিশ্বাসের ছেলে অরুণ বিশ্বাস বাদী হয়ে দখলদার রাসেল সিকদারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ মামলায় ভানু বেগম নামে এক মহিলাকে আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। উক্ত মামলা রেকর্ড ও মহিলা আসামি আটকের মাত্র ২ দিন পর কে/কারা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে বলে স্থানীয়রা উল্লেখ করেন। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জড়িতদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।
×