ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

বেঙ্গলে শিল্পাচার্যকে নিবেদিত পাঁচ দিনের কারুমেলা শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১১ এপ্রিল ২০১৫

বেঙ্গলে শিল্পাচার্যকে নিবেদিত পাঁচ দিনের কারুমেলা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও জীবনের অনন্য স্মারক কারুশিল্প। শুক্রবার সেই লোকজ পণ্যের সমাহারে নান্দনিক রূপ পায় ধানম-ির বেঙ্গল শিল্পালয়ের আঙিনা। দেখা মেলে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক কাঁথাশিল্প, লোকজ অনুষঙ্গবাহী হাত পাখা, বাঁশশিল্প, বাঁশি, শোলার পণ্য, নানা ধরনের পুতুল, কারুকার্যখচিত কাঠপণ্য, লক্ষ্মীর সরা, অলঙ্কার, শতরঞ্জিসহ রকমারি কারুপণ্য। আর এমন বাহারি কারুশিল্পের সম্ভারে দর্শনার্থীর জমজমাট আগমনে সূচনা দিনেই জমে কারুমেলা। কারুশিল্পের জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উজ্জীবন এবং শিল্পীদের সৃজনশীলতায় নবীন মাত্রা সঞ্চারের লক্ষ্যে শুরু হলো কারুশিল্প মেলা। মেলা আয়োজনের পাশাপাশি প্রদান করা হলো ২০১৪ সালের শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী পুরস্কার। এবারে শ্রেষ্ঠ নকশিকাঁথা শিল্পী হয়েছেন চারজন। তাঁরা হলেনÑ যশোরের খাদিজা বেগম, কদবানু, মমতাজ বেগম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গুলনাহার বেগম। এই চার নকশিকাঁথাশিল্পীকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী পুরস্কার প্রদান করা হয়। জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে উৎসর্গ করা হয়েছে এ কারুশিল্পী পুরস্কার ও কারুমেলা। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় যৌথভাবে মেলার আয়োজন ও পুরস্কার প্রদান করছে জাতীয় কারুশিল্প পরিষদ এবং বেঙ্গল ফাউন্ডেশন । বিকেলে ধানম-ির বেঙ্গল শিল্পালয়ে চার শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পীকে পুরস্কার প্রদান ও পাঁচ দিনব্যাপী কারুমেলার উদ্বোধন করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সহধর্মিণী বেগম জাহানারা আবেদিন ও বরেণ্য কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ১৯৯৯ সালে শিলু আবেদ শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী পুরস্কার বিজয়ী জামালপুরের কাঁথাশিল্পী রাশেদা বেগম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের সভাপতি চন্দ্রশেখর সাহা। সেলিনা হোসেন বলেন, কাঁথা বোনার শিক্ষা মেয়েরা দাদী-নানীদের কাছ থেকে পেয়েছে। সেই কাঁথা বোনানোকে এই মেয়েরা কাঁথাশিল্পে পরিণত করেছে। এতে শুধু যে অর্থনৈতিক দিগন্ত উন্মুক্ত হয়েছে তা নয়, মেয়েদের হাতে বাংলার সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটছে। বেগম জাহানারা আবেদিন তাঁর বক্তব্যে লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখার জন্য শিল্পাচার্যের প্রচেষ্টা ও স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করেন। পাঁচ দিনব্যাপী কারুমেলায় প্রায় বারোটি স্টলে মূল ধারার কারুশিল্পীরা তাঁদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করছেন। কারুমেলা চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। দুই কথাশিল্পীর জেমকন সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তি ॥ ২০১৫ সালের জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ও জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার পেলেন কথাসাহিত্যিক সালমা বাণী ও তরুণ কথাশিল্পী রুবাইয়াত আহমেদ। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। ‘ইমিগ্রেশন’ উপন্যাসের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক সালাম বাণী। ‘একজন সাব-এডিটরের কতিপয় ছেঁড়াখোঁড়া দিন’ শীর্ষক উপন্যাসের পা-ুলিপির জন্য পুরস্কার পেয়েছেন রুবাইয়াত আহমেদ। জেমকন সাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য পাঁচ লাখ টাকা দেয়া হয় কথাসাহিত্যিক সালমা বাণীকে এবং জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা তুলে দেয়া হয় রুবাইয়াত আহমেদকে। অর্থমূল্যের সঙ্গে লেখকদ্বয়কে স্মারক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, ভারতের কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায়, কবি আসাদ চৌধুরী, কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন, কথাসাহিত্যিক রবিশঙ্কর বল, কবি জহর সেন মজুমদার, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক ও শিল্প-সমালোক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার প্রমুখ। শুভেচ্ছ বক্তব্যে আনিস আহমেদ বলেন, ২০০০ সালে কাগজ সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। পরে ২০০৭ সাল থেকে তা জেমকন সাহিত্য পুরস্কার নামে প্রতিবছর প্রদান করা হচ্ছে। বাংলা সাহিত্যের সৃজনশীল লেখকদের সম্মানিত করার জন্যই মূলত এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। এ বছর জেমকন সাহিত্য পুরস্কারের যুগপূর্তি হলো। পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে সালমা বাণী বলেন, প্রত্যাশাহীন কর্তব্য পালনের জন্য যদি পুরস্কার পাওয়া যায় তাহলে আনন্দের সীমা থাকে না। আমার ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে। এ পুরস্কার আমার লেখালেখির যেমন স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনই বাড়িয়ে দিয়েছে আমার কর্তব্যবোধ। রুবাইয়াৎ আহমেদ বলেন, আমার জীবনের পরম এক আনন্দের দিন আজ। আমি অভিভূত। অনুষ্ঠানের শুরুতে মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করেন তরুণ সঙ্গীতশিল্পী টিনা মুসতারী। গ্যালারি কায়ায় মনসুর উল করিমের চিত্রপ্রদর্শনী ॥ সৃজনের বৈভবে ক্যানভাসে আলো ছড়ানো এক চিত্রশিল্পী মনসুর উল করিম। শুক্রবার থেকে উত্তরার গ্যালারি কায়ায় শুরু হলো এই শিল্পীর চিত্রকলা প্রদর্শনী। শিরোনাম ডেস্টিনেশন এ্যান্ড ডিপারচার। চৈত্রের বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান। প্রদর্শনী সম্পর্কে আপন অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন শিল্পী মনসুর উল করিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্যালারি কায়ার পরিচালক চিত্রশিল্পী গৌতম চক্রবর্তী। ১২ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আলোকিত শিশুর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ খুদে বন্ধুদের চিকিৎসাভিত্তিক এক স্কুল আলোকিত শিশু। শুক্রবার সংগঠনটি একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠার ৬ বছর এবং বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদ্্যাপন করে। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেমিনার, আলোচনা ও আলোকিত শিশুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দিয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। সঙ্গে ছিল শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও সমাজকল্যাণ সচিব নাছিমা বেগম। বাগেরহাটে রং শিল্পীদের মিলনমেলা ॥ স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট থেকে জানান, বাগেরহাটে হয়ে গেল রং শিল্পীদের (রঞ্জন শিল্পী) মিলন মেলা। শুক্রবার দিনব্যাপী বাগেরহাট শহরের সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের এসিলাহা মিলনায়তনে নজরুল ব্রাদার্স পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এ মিলন মেলার আয়োজন করে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করা প্রায় অর্ধশতাধিক রং শিল্পী এ মিলন মেলায় অংশ নেন। মিলনা মেলায় বক্তব্য রাখেনÑ আয়োজক সংস্থার সহকারী মহাব্যবস্থাপক নুরুল আমিন, খুলনা বিভাগীয় বিক্রয় ব্যবস্থাপক মোক্তারুল ইসলাম ভুট্টো, আঞ্চলিক বিক্রয় কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম এবং বাগেরহাটের পরিবেশক রায় হার্ডওয়ারের স্বত্বাধিকারী প্রান্তিক রায়।
×