ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৈশাখী মেলার বিবর্তনের ধারা

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১১ এপ্রিল ২০১৫

বৈশাখী মেলার বিবর্তনের ধারা

গরমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাল্টে যাচ্ছে বৈশাখী মেলার ধারা। বৈশাখী মেলা আমাদের বাঙালী জীবনের চিরায়ত সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়। তাই অন্য মেলা বা আয়োজনগুলোর সঙ্গে বৈশাখী মেলার বৈশিষ্ট্যগত ও অনুষঙ্গগত পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কারুপণ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে, পোশাক-পরিচ্ছদ, মিঠাই, ম-া, মুড়ি, মুড়কি ও নানা ধরনের খাবার বিক্রির রেওয়াজ যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বৈশাখী মেলাগুলোতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মেলার ব্যাপ্তি। মেলায় আনা পণ্য সামগ্রীগুলোতে এসেছে বৈচিত্র্য। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় যে, বৈশাখী মেলার পণ্য সামগ্রীগুলোর সঙ্গে বাংলার নারী শিল্পীদের সম্পর্ক নিবিড় ও অটুট। আর এভাবেই বাংলার নারীর জীবনধারায় এসেছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। বিষয়টি আনন্দের ও তাৎপর্যপূর্ণ। গ্রামীণ মেলার এই উৎসবের ধারা শহরে এসে বিবর্তন লাভ করে। শহরের মেলাগুলোতে বায়স্কোপের জায়গায় দেখা যায় মুখোশ, আর মিঠাইর স্থান দখল করেছে ফুচকা আর চটপটি। আরও থাকে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ। কোথাও কোথাও হয় পুতুলনাচ, আবার কোথাও বা নাগরদোলার উপস্থিতি চোখে পড়ে। তবে মেলা শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় হয়ে থাকে। যে মেলাগুলোর প্রধান আকর্ষণ হরেক রকমের কুটিরশিল্প ও হস্তশিল্পের উপস্থিতি। বিশেষভাবে বৈশাখী পোশাকের কথা এলেই প্রথমে আসে নারীর সেই চিরন্তনি পোশাক শাড়ির কথা। এমনটি ভাবা হচ্ছিল আজ থেকে দুই বা তিন দশক আগে। বর্তমানে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন বৈশাখী পোশাক মানেই হচ্ছেÑ শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধবনিতার পোশাকের কথা। অবশ্য পোশাকের একপেষে ধারাটিকে সর্বজনীন রূপ দিতে কিছু ফ্যাশন হাউস বেশ ভূমিকা রেখেছে। বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেইÑ এই পোশাকগুলোর প্রতিটি স্তরে থাকে নারীদের হাতের ছোঁয়া। থাকে ঐতিহ্যের স্পর্শ। এবার বৈশাখের আগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে কালবৈশাখী ঝড় হয় তাতে অনেক ফসলহানি হয়েছে, ঝরে পড়েছে গ্রীষ্মের অনেক ফল এবং ফসলাদি। শিলাবৃষ্টিতে কয়েক হাজার পাখির জীবন বিপন্ন হয়েছে। সময়িক এই ক্ষতি পুষিয়ে মানুষ আবার ঘুরে দাঁড়াবে, দেশকে ঐতিহ্যের বন্ধনে আবদ্ধ করবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐতিহ্যকে লালন করে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে এটাই নতুন বছরের প্রত্যাশা। ফারিয়া তাবাস্সুম নওশীন মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
×