ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হরতাল-অবরোধে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ

সন্ত্রাসী ভগ্নিপতিকে রক্ষায় বেনামী অভিযোগ শ্যালকের

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১১ এপ্রিল ২০১৫

সন্ত্রাসী ভগ্নিপতিকে রক্ষায় বেনামী অভিযোগ শ্যালকের

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে এক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীকে বাঁচাতে মরিয়া শ্বশুরের পরিবার। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও ইয়াবা পাচারের ঘটনায় জড়িত হয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছে এই সন্ত্রাসী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আকবরশাহ থানা ও খুলশী থানার পৃথক দুটি মামলায় কারাগারে থাকা এই সন্ত্রাসীর নাম জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ কালা জাহাঙ্গীর। তার পক্ষ নিয়ে সিএমপি কমিশনার বরাবর বেনামে অভিযোগ দায়েরের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তার শ্যালক ফারুক। তবে সন্ত্রাসীর পক্ষে বেনামী অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ বিষয়টি তদন্তে নেমেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে সিএমপি কমিশনার বরাবর জমাকৃত অভিযোগটি বেনামী। তবে এই বেনামী অভিযোগকারী এলাকায় নিজের নাম প্রকাশ করেছে। তার নাম জনৈক ফারুক। তার বাবার নাম আব্দুল মালেক সওদাগর। তার অবস্থান আকবরশাহ থানাধীন আকবরশাহ মাজার সংলগ্ন শহীদ সরণি আবাসিক এলাকার ১নং সড়কের মালেক ভিলায়। প্রশ্ন উঠেছে অভিযোগকারী কেন নিজের পরিচয় গোপন করেছেন এবং একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও মাদক বেপারি ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীরকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। কেনইবা এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে ভুয়া অভিযোগ দিয়ে হয়রানির পথ বেছে নিয়েছেন সন্ত্রাসীর পক্ষে। সিএমপির আকবরশাহ থানা সূত্রে জানা গেছে, খুলশী থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ কালা জাহাঙ্গীর। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আকবরশাহ থানাধীন নিউ শহীদ লেন রওশন আলী শাহ (র)-এর মাজার সংলগ্ন এলাকায় ইয়াবা বিক্রয় ও পাচারের সময় তাকে আটক করেন থানার এসআই রাজু আহমেদ। এ সময় কালা জাহাঙ্গীর নিজেকে পদ্মা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উল্টো পুলিশকে তোপের মুখে ফেলে। নিজেকে ছাড়াতে কয়েক ভুয়া সাংবাদিককে দিয়ে এসআই রাজুকে দেখে নেয়ার হুমকিও দেয় সে। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ উপস্থিত লোকজনের সামনেই তার দেহ তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট ও পাচারের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ তাকে আকবরশাহ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে সে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ও ফেনসিডিল পাচার ও সরবরাহের কাজে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। এছাড়াও সে বিএনপির পক্ষ নিয়ে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় একটি মামলা রযেছে বলেও স্বীকার করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম ও তথ্য প্রকাশ করেছে পুলিশের কাছে। পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দের পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত ইয়াবা ও মোটরসাইকেল আকবরশাহ থানা হেফাজতে রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ইয়াবাসহ আটকের পর সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেতে কয়েক ভুয়া সাংবাদিক দিয়ে এসআই রাজু আহম্মেদকে ফোন করে চাপের মুখে রেখেছিল সেদিন। এমনকি মামলার চার্জশীট থেকে তার নাম বাদ দিতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। জাহাঙ্গীরের তৃতীয় স্ত্রীর বাবা আব্দুল মালেক সওদাগর ও শ্যালক ফারুক জাহাঙ্গীর জেল থেকে বের হলে এলাকার মানুষকে দেখে নেয়ার হুমকিও দিচ্ছে। তবে ইয়াবা পাচারের ঘটনায় সে জেলখানায় থাকলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন জাহাঙ্গীর বিদেশে রয়েছে বলেও এলাকায় প্রচার করেছে।
×