ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘ডাউনটন কুইট’ ইসিবি থেকে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১০ এপ্রিল ২০১৫

‘ডাউনটন কুইট’ ইসিবি থেকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চরমভাবে ব্যর্থ এক বিশ্বকাপ শেষ করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে এবার তারা। সম্প্রতি তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই তেমন সুবিধা করতে পারছে না দলটি। সে কারণে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডে (ইসিবি) গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনটাই সম্ভাব্য ছিল। সেই সম্ভাবনার মধ্যে প্রথম পরিবর্তনটা এলো ইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে! সাবেক ইংলিশ উইকেটরক্ষক পল ডাউনটনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বুধবার ইসিবি জানিয়েছে আর এ দায়িত্বে থাকছেন না ডাউনটন। এক বছরের কিছুটা বেশি সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ৫৮ বছর বয়সী ডাউনটন। সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন শূন্য হয়ে পড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আসার আগ্রহ জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে মাত্র দুটি ম্যাচ জিততে পেরেছে ইংল্যান্ড। এমনকি দুর্বলতর বাংলাদেশের কাছেও পরাজিত হয়েছে দলটি। ফলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে এবার। সে কারণে বেশ সমালোচিত হয়েছে ইসিবির ব্যবস্থাপনা বিভাগ। তবে ডাউনটন এককভাবে নিজের ক্ষমতা খাটিয়েছেন এতদিন। তারকা ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেনকে দল থেকে অপসারণ করার পেছনে তিনিই সবচেয়ে বড় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সম্প্রতিও তিনি কেপিকে দলে নেয়ার বিষয়টা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনিই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলেন। ইসিবির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান ইংল্যান্ড দলের সেটআপ ঢেলে সাজানোর যে পরিকল্পনা সেটারই ছাপ এটি। পল ডাউনটন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে অপসারিত হচ্ছেন। এখন দলের পারফর্মেন্স বিষয়ক সব ধরনের প্রতিবেদন সরাসরি প্রধান নির্বাহীর কাছে যাবে। নতুন করে এ দায়িত্বে কেউ না আসা পর্যন্ত সেভাবেই চলতে থাকবে।’ ইসিবির চেয়ারম্যান পদেও পরিবর্তন আসছে। দায়িত্ব গ্রহণ করবেন কলিন গ্রেভস। তার অধীনে পুরো ইসিবিতেই একটা পরিবর্তন আসবে এটা প্রায় নিশ্চিত। সেটার অংশ হিসেবে প্রথম অব্যাহতিটা পেলেন ডাউনটন নিজেই। বিশেষ করে ইসিবি কেন পিটারসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করল সে বিষয়ে ডাউনটন পরিষ্কারভাবে কিছু বলতে ব্যর্থ হয়েছেন। নতুন করে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নিয়েছেন টম হ্যারিসন। তিনি ডাউনটনকে রাখার জন্য তেমন কিছুই করেননি। হ্যারিসন পুরো ইসিবির সেটআপে পরিবর্তন আসার বিষয়ে বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বিভাগের প্রয়োজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের নৈপুণ্য প্রদর্শন করা। আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরী। পুরো কাঠামোই তাই ঢেলে সাজাতে হবে। আমরা নতুন দায়িত্বে যাদের আনতে যাচ্ছি তাদের এ ধরনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সবসময় দলের নৈপুণ্যটাকে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে হবে। ডাউনটনের বিদায়ের পর শূন্য পদের প্রতি আগ্রহ জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ভন। ২০০৫ সালে ভন ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গৌরবময় এ্যাশেজ জয়ে। হ্যারিসনও জানিয়েছেন যারা প্রশাসনিক কাজের চেয়ে দলের নৈপুণ্যটাকে ভালভাবে বিশ্লেষণ করতে পারবেন এবং অতীতে দলের জন্য কিছু করে দেখিয়েছেন তারাই অগ্রগণ্য হিসেবে থাকবেন দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে। হ্যারিসনের এমন মন্তব্যের পর বেশ কয়েকজন সাবেক অধিনায়ক এন্ড্রু স্ট্রস, নাসের হুসেইন, এ্যালেক স্টুয়ার্টরা আলোচনায় এসেছেন। ভন জানিয়েছেন তার ভালভাবে ইসিবি কি চাইছে সেটা জানা দরকার। তবে নিশ্চিতভাবেই বাকিদের তুলনায় ভন এগিয়ে আছেন। এমনটাই বলছেন ব্রিটিশ গণমাধ্যমের অভিজ্ঞ লেখিয়ে থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। ভন সম্প্রতি এক কলামে লিখেছেন, ‘আমাদের একটা সুযোগ আছে ইংলিশ ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর এবং সেটা সমস্যাগুলো স্বীকার করে নিয়েই করতে হবে। ৬ বছর আগে অবসর নেয়ার পর এই প্রথম আমি ইসিবির সঙ্গে এ বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা করেছি। আমি ইংল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতি দারুণ আসক্ত। চলুন একসঙ্গে কাজে নেমে ভাল কিছু করি।’
×