ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্র জড়িত ॥ গ্রেফতার ২

চট্টগ্রামে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের গোডাউনে অবৈধ স্বর্ণের মজুদ

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১০ এপ্রিল ২০১৫

চট্টগ্রামে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের গোডাউনে অবৈধ স্বর্ণের মজুদ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ তিনতলা ভবনের দোতলায় পুলিশ ফাঁড়ি। পুলিশ ফাঁড়ি লাগোয়া একতলা ভবনে ইলেকট্রনিকস পণ্যের গোডাউন। এ গোডাউন থেকে ইলেকট্রনিক পণ্য মজুদের নামে চলে আসছিল অবৈধ স্বর্ণের চোরাচালান। গোপন সূত্রের খবরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সদরঘাট থানা পুলিশ বুধবার রাত ১১টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত গোডাউনটিতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে প্রায় ৯ কোটি টাকার স্বর্ণেরবার ও স্বর্ণালঙ্কার। আমদানির ইলেকট্রনিকস পণ্যের ভেতরে এসব স্বর্ণের চোরাচালান হয়ে আসছিল। চট্টগ্রামের সংঘবদ্ধ একটি চোরাচালান চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের আজ আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। গুদামটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, বুধবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ গোপন একটি সোর্স টেলিফোনে তাকে জানায় যে, মাদারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির নিচতলায় যে ইলেকট্রনিক পণ্যের গোডাউন রয়েছে তা থেকে ৪ কার্টন মাল বের হবে এবং এতে স্বর্ণ রয়েছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি দেখার জন্য থানার দুই এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠান। উক্ত দুই এসআই ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পান ঠিকই একটি লাল রঙের গাড়িতে চারটি কার্টন ওঠানো হচ্ছে। পুলিশ এগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে এবং খুলে দেখার জন্য নামিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় অজ্ঞাতনামা টেলিফোন থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে এক কোটি টাকার ঘুষ ও অর্ধেক স্বর্ণ তাকে দেয়ার প্রস্তাব আসে। অপরপ্রান্তের টেলিফোনে লোভনীয় এ খবর জেনে তিনি রীতিমতো বিস্মিত হন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘটনা পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল ম-লকে অবহিত করেন। উত্তরে পুলিশ কমিশনার তাকে থানাসহ ডিবি পুলিশ নিয়ে পুরো গোডাউন তন্ন তন্ন করে তল্লাশির নির্দেশ দেন। গভীর রাতে পুলিশ কমিশনার নিজেও ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরাও ঘটনাস্থলে যান। এ সময়ের মধ্যে কার্টনগুলোর তল্লাশি করতে চাইলে গোডাউন ম্যানেজার ইমরান খান ও কর্মচারী মোঃ গিয়াস উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি বাধা দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের পুলিশ আটক করে এবং তল্লাশি শুরু করে। এরইমধ্যে কোতোয়ালি জোনের এসি আবদুর রউফ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। শুরু হয় জোরালো তল্লাশি। বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিশাল গোডাউনের পুরো অংশ তল্লাশি করে ১২০টি সোনার বার, ১৬ আইটের স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, ১২০টি সোনার বারের ওজন ১৪ কেজি ২শ’ গ্রাম। আর স্বর্ণালঙ্কারের ওজন ৫ কেজি ৮শ গ্রাম। স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে রয়েছে হাতবালা ১৬, বাচ্চাদের চুড়ি ১২, ৪ সেট গলার চেইনসহ কানের দুল, ২ সেট মোটা চেনের গলার সেট, ২টি সীতার হার, একটি গলার গোল লকেট, ৩২টি গলার চেন লকেট, ১টি টিকলিসহ চেন, ২টি কানের দুলসহ গলার চেন, চারটি গলার হার, ৪টি গোল লকেটসহ গলার চেন, ২০টি গলার চেন, ৬ সেট পুঁতির মালা ও চেন, ১২ জোড়া কানের দুল, ৯ সেট গুটি চেনসহ গলার মালা, ১টি গলার ছোট হার এবং ১৪টি ছোট চেন রয়েছে।
×