নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, ৯ এপ্রিল ॥ নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৭ হত্যাকান্ডে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক কোন এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়াসহ ৫ আসামিকে চার্জশীট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ৭ খুনের মামলার তদন্ত সুষ্ঠু হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। অবিলম্বে তিনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদ ম-লকে প্রত্যাহার ও মামলাটি সিআইডি বা ডিবির নতুন কর্মকর্তাকে দিয়ে পুনর্তদন্ত দাবি করেন। একই দাবিতে নতুন করে তিনি আন্দোলনের ঘোষণা দেন। এদিকে মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও নাসিকের ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটি এ সময় বলেন, এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে চার্জশীটে রাখা হয়নি। এতে আমি হতবাক হয়েছি। তাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই মামলার অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।
নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও তাঁর বাবা নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়ার বুকস গার্ডেনের বাসায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ সব অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিল ৭ খুনে নিহত তাজুল ইসলামের মা তাসলিমা বেগম, ভাই সাইফুল ইসলাম রাজু, নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের ছোট ভাই মিজানুর রহমান রিপন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী বিউটি বলেন, মামলার ২নং আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া সিঙ্গাপুর থেকে লোক মারফত তাকে চার্জশীট থেকে তাদের নাম বাদ দেয়ার জন্য ২ কোটি টাকা ও ১৫ শতাংশ জমি দেয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমরা এতে রাজি হইনি। সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নুর হোসেনের নেতৃত্বে তার ভাজিতা শাহজালাল বাদল ও আনোয়ার হোসেন আশিক দুইটি অস্ত্রহাতে নজরুলকে তাড়া করেছিল। ঐ সময় তারা উচ্চস্বরে বলেছিল, নজরুলকে ১৫ দিনের মধ্যে হত্যা করা হবে। এরপরই তারা ইয়াছিনের (মামলার এজহারভুক্ত আসামি ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক) বাসায় বসে আমার স্বামী নজরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করার জন্য বৈঠক করে। কিন্তু তাদের নাম চার্জশীটে রাখা হয়নি। এতে আমি হতবাক হয়ে পড়ি। তাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে মামলার অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে তিনি উল্লেখ্য করেন। বিউটি আরও বলেন, মামলার এজহারভুক্ত আসামিরা এখন দেশেই অবস্থান করছেন। কিন্তু তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। এ কারণে তিনি এ মামলায় না-রাজি দেবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। বুধবার বিকেলে ৭ খুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির ওসি মামুনুর রশিদ ম-ল নূর হোসেন ও র্যাবের ৩ কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এ মামলাও বাদী নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ফতুল্লা থানায় নূর হোসেন, ইয়াসিন মিয়া, হাসমত আলী হাসু, আমিনুল ইসলাম রাজু, আনোয়ার হোসেন আশিক ও ইকবাল হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। চার্জশীটে নূর হোসেন ছাড়া অন্য এজারভুক্ত আসামিদের বাদ দেয়া হয়।